আন্দোলন ও হিংসার প্রভাবে বিপন্ন 'ব্র্যান্ড দার্জিলিং', তিন মাসে ক্ষতি ১০০ কোটির বেশি

পর্যটনের সঙ্গে যুক্তদের কথায়, পাহাড়ে লাগাতার আন্দোলনে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্র্যান্ড দার্জিলিং। শীতের বুকিংয়ের চেহারা দেখলেই তা স্পষ্ট। ২০১৬-র বড়দিনে যেখানে পাহাড়ে পর্যটকদের ঠাঁই দেওয়া মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছিল সেখানে এবছর হোটেলগুলিতে বুকিং হয়েছে মাত্র ১৫ শতাংশ। এমনটাই জানিয়েছেন উত্তর-পূর্ব ভারতের পর্যটন সংস্থাগুলির যৌথ মঞ্চ EHTTOA-র সদস্য সম্রাট সান্যাল।

Updated By: Dec 1, 2017, 12:48 PM IST
আন্দোলন ও হিংসার প্রভাবে বিপন্ন 'ব্র্যান্ড দার্জিলিং', তিন মাসে ক্ষতি ১০০ কোটির বেশি
ছবি সৌজন্য : টুইটার

অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী

বাকি আর মাত্র কয়েকটা দিন। তারপরই বড়দিনের ছুটি। জমাটি শীতে ছুটিতে বাঙালির ছুটোছুটি শুরু হয় দার্জিলিং ও ডুয়ার্সে। শুধু বাঙালি কেন, বিশ্ব পর্যটনের মানচিত্রে অন্যতম হলিডে ডেস্টিনেশন এই 'কুইন অফ হিলস্'। কিন্তু, এখনও কি সেই আগের মতই আছে সকলের প্রিয় শৈলরানি দার্জিলিং? এবারের শীতে কতটা টানছে ঘুমপাহাড়ের হাতছানি? এই প্রশ্নেই শঙ্কিত পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

আটের দশকে গোর্খাল্যান্ডের আন্দোলনে পর্যটক শূন্য হয়ে গিয়েছিল পাহাড়। দক্ষিণ থেকে পশ্চিম ভারতের পর্যটনকেন্দ্রগুলি সেই সময় ভিড় জমিয়েছিলেন বাঙালি পর্যটকরা। ডিজিএইচসি গঠনের পর ধীরে ধীরে ছন্দে ফেরে পাহাড়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই ফের পাহাড়মুখী হন পর্যটকরা। ২০০৭ সাল পর্যন্ত সব কিছু চলছিল স্বাভাবিক ভাবেই। পরিকাঠামোর অভাব সত্বেও পাহাড় ভরিয়েছে বাঙালি। ২০১৬ সালে ৫ লক্ষ ভারতীয় ও ৫০ হাজার বিদেশি পর্যটকের হাজিরায় প্রাণবন্ত ছিল শৈলরানি। ঝুলি ভরেছে পাহাড়িয়াদের। ২০১৭-য় পরিস্থিতি যত জটিল হয়েছে ততই পর্যটকশূন্য হয়েছে পাহাড়।

গত জুনে পাহাড় ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠলে মুখ ফেরান পর্যটকরা। লাগাতার বনধে বিপর্যস্ত হয় জনজীবন। টান পড়ে রসদে। পর্যটন ব্যবসায়ীদের দাবি জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১০০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে তাঁদের। সম্প্রতি আপাত শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলেও তাতে পাহাড়ে উঠতে সাহস পাচ্ছেন না পর্যটকরা। পর্যটনের সঙ্গে যুক্তদের কথায়, পাহাড়ে লাগাতার আন্দোলনে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্র্যান্ড দার্জিলিং। শীতের বুকিংয়ের চেহারা দেখলেই তা স্পষ্ট। ২০১৬-র বড়দিনে যেখানে পাহাড়ে পর্যটকদের ঠাঁই দেওয়া মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছিল সেখানে এবছর হোটেলগুলিতে বুকিং হয়েছে মাত্র ১৫ শতাংশ। এমনটাই জানিয়েছেন উত্তর-পূর্ব ভারতের পর্যটন সংস্থাগুলির যৌথ মঞ্চ EHTTOA-র সদস্য সম্রাট সান্যাল।

একই কথা শোনা গেল আরেক পর্যটন সংস্থার কর্ণধার রাজ বসুর গলাতেও। তিনি বলেন, 'শুধুমাত্র হোটেল ব্যবসায়ী বা পর্যটন সংস্থাগুলিই নয়, এই আন্দোলনের ফলে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে পরোক্ষে জড়িয়ে থাকা কয়েক লক্ষ মানুষ বিপাকে পড়েছেন।' পরিস্থিতি যা তাতে আগামী ২ বছরেও পাহাড় পর্যটন স্বাভাবিক হবে না বলেই আশঙ্কা সম্রাট স্যান্যাল বা রাজ বসুদের।

যদিও রাজ্য পর্যটন দফতরের দাবি, দার্জিলিং ব্র্যান্ডকে দ্রুত বিশ্বের দরবার পৌঁছে দিতে তারা বদ্ধপরিকর। আর তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে।

.