গরম গরম দম বিরিয়ানি খেল মহিষ
দোকানদার তখন অগ্নিশর্মা। কিন্তু কিছুই যে তাঁর করার নেই। ভয়ে বুক ঢিপঢিপ করছে। বাধা দিতে গেল পাছে... অগত্যা, অতিথি দেব ভবঃ। কিন্তু মহিষবাবাজির বিরিয়ানি খাওয়া দেখতে তখন বেশ ভিড় জমেছে দোকানের চারপাশে। ভয়ে কেউবা আড়াল থেকেই দেখছে সে দৃশ্য। বলাইবাহুল্য, তৃণভোজী প্রাণীকে এমন বিরিয়ানি বিলাস করতে দেখে তাজ্জব এলাকার লোকজন! উপস্থিত জনতার চোখে বিষ্ময় স্পষ্ট। অত্যুত্সাহীদের ভিড়ে যেন বেশ ‘মেলা-মেলা’ ভাব।
নিজস্ব প্রতিনিধি: বিরিয়ানি ভর্তি হাঁড়িটা সবেমাত্র দোকানের মুখে এনে রাখা হয়েছে। ঢাকনাটা সামান্য সরানো। আর তাতেই গোটা চত্বর সুগন্ধে ম ম করছে! অবস্থা এমনই যে নাকে গন্ধ এসে খিদে পাওয়ার জোগার। গন্ধটা বোধহয় নাকে গিয়েছিল তাঁরও। কোনওদিন খাননি তো কী, একবার তো স্বাদ নেওয়াই যায়! এইভাবেই বিরিয়ানির দোকানে আগমন। কিন্তু ষণ্ডাগণ্ডা ধুমসো মহিষকে দেখে প্রায় আত্মারাম খাঁচা ছাড়া দোকানিদের। বিরিয়ানি সার্ভ তো দূরের কথা, প্রাণ হাতে নিয়ে পালাতেই ব্যস্ত তাঁরা।
আরও পড়ুন: সাইকেল নেই; হাতির ছানা চাই, বিট অফিসারের কাছে আজব বায়না নবাড়ুর
আর আতিথেয়তার এমন ঘটতি দেখেই সম্ববত বেদম চটে গেল অতিথি মহিষ। বিরিয়ানির হাঁড়ি উল্টে, চেয়ার টেবিল ফেলে দিয়ে কিঞ্চিত উষ্মা প্রকাশ করলেন তিনি। অশোকনগরের গুমা চুড়িপাড়ার ওই দোকানের পাশে ততক্ষণে লোক জমতে শুরু করছে সে দৃশ্য দেখতে।
দোকানদার তখন অগ্নিশর্মা। কিন্তু কিছুই যে তাঁর করার নেই। ভয়ে বুক ঢিপঢিপ করছে। বাধা দিতে গেল পাছে... অগত্যা, অতিথি দেব ভবঃ। কিন্তু মহিষবাবাজির বিরিয়ানি খাওয়া দেখতে তখন বেশ ভিড় জমেছে দোকানের চারপাশে। ভয়ে কেউবা আড়াল থেকেই দেখছে সে দৃশ্য। বলাইবাহুল্য, তৃণভোজী প্রাণীকে এমন বিরিয়ানি বিলাস করতে দেখে তাজ্জব এলাকার লোকজন! উপস্থিত জনতার চোখে বিষ্ময় স্পষ্ট। অত্যুত্সাহীদের ভিড়ে যেন বেশ ‘মেলা-মেলা’ ভাব।
কিন্তু বিরিয়ানি খাওয়ার পর ‘অতিথি’র আর ঘরে ফেরার ইচ্ছেই নেই যেন। অতঃপর খবর গেল বনদফতরে। সঙ্গে ফোন গেল স্থানীয় থানাতেও। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে দু'পক্ষই হাজির হল সেখানে। কিন্তু তাতেও বাধল গোল।
আরও পড়ুন: ‘আন্ডারপ্যান্ট পরিয়ে বাড়ি পাঠাবো’, অধীরকে চ্যালেঞ্জ অনুব্রতর
মহিষকে বিরিয়ানি-বিমুখ করতে ঠোকাঠুকি লেগে গেল পুলিস ও বনককর্মীদের মধ্যে। কে হাল ধরবে পরিস্থিতির? তা নিয়েই চলল বেশ কিছুক্ষণ মতান্তর। অবশেষে ফেলে দেওয়া হল দোকানের সাটার। বেশ কিছুক্ষণ দোকানেই আটকা পড়ল ‘অতিথি’ মহিষ। চার ঘণ্টা ধরে চলল তাকে বশে আনার প্রয়াস। কিন্তু নাছোড়বান্দা ‘অতিথি’কে বাগে আনতে হালকা শীতেই ঘামে কপাল ভিজল পুলিস-বনকর্মীদের। শেষমেশ গলায় দড়ি লাগিয়ে বের করে আনা হল তাকে।
সন্ধে থেকে রাত গড়াল, ভিড় তখনও থিকথিক করছে। এমন বিরিয়ানিখেকো ‘মহিষ’ তো সচরাচর দেখা যায় না। মায়ের আঁচল ধরেই হোক, কিংবা সন্ধের চায়ের আড্ডার ফাঁকে, এই দৃশ্য ‘মিস’ করতে চাননি কেউই।