উন্নয়নের নামে সবুজ ধ্বংস! বোলপুরে বেআইনিভাবে কাটা হল ৫০ বছর পুরনো ৩০টি গাছ

বোলপুর নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে বৃক্ষ ছেদন রুখতে বন দফতরের জেলা আধিকারিককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠি পেয়ে বন দফতরের তরফে গাছ কাটা বন্ধ করে কাটা অংশ গুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়।

Updated By: Jul 25, 2018, 11:39 AM IST
উন্নয়নের নামে সবুজ ধ্বংস! বোলপুরে বেআইনিভাবে কাটা হল ৫০ বছর পুরনো ৩০টি গাছ

নিজস্ব প্রতিবেদন: শহরের সৌন্দর্যায়ন হবে, আর তার জন্য অবাধে কাটা হল ৩০টি গাছ।  সেটাও অনুমতি ছাড়াই।  ঘটনা বোলপুর শহরের।

আরও পড়ুন- সাধুর সঙ্গে রথ দেখতে গিয়ে নিখোঁজ তরুণী

রাস্তা সম্প্রসারণের নামে অনুমতি ছাড়াই গাছ কেটে সাফা করে দেওয়ার অভিযোগ। বোলপুরের জাম্বুনী বাস স্ট্যান্ড থেকে লজের মোড় পর্যন্ত রাস্তার দুধারের কাটা হয়েছে বড় বড় ৩০টি গাছ। উন্নয়ের নামে বৃক্ষ ছেদন হচ্ছে বলে সরব হয়েছে বোলপুর নাগরিক সমাজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পরিবেশ সচেতন মানুষ। প্রশ্ন উঠেছে, কীভাবে নিয়ম না মেনে এ ভাবে একসঙ্গে এত গাছ কেটে শহর সাফা করা হল। যদিও এই প্রসঙ্গে মুখে কুলুপ এঁটেছে পূর্ত বিভাগ। এদিন বন দফতরের কর্মীরে এসে এই গাছ কাটা রুখে দেয়। বাজেয়াপ্ত করা হয় কাটা গাছগুলি।

আরও পড়ুন- গেরুয়া রথের চাকা গড়াবে কোন পথে? ঠিক হল রুদ্ধদ্বার বৈঠকে

একদিকে সবুজায়নের পক্ষে চলছে বিস্তর প্রচার। কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে পালিত হচ্ছে অরণ্য সপ্তাহ। অন্যদিকে, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত বোলপুর শহরে চলছে বৃক্ষ ছেদন। এর আগেও রাস্তা সম্প্রসারণের নামে বিনা অনুমতিতে শান্তিনিকেতনে গাছ কাটার প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছিল বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের একাংশ। তাদের উপর বাঁশ লাঠি নিয়ে চড়াও হয়েছিল তৃণমূলের কিছু নেতা কর্মী। তবুও বৃহত্তর আন্দোলনে জেরে বন্ধ হয়েছিল গাছ কাটা।

উল্লেখ, বোলপুর শান্তিনিকেতনের সঙ্গে গাছের সম্পর্ক খুবই নিবির। কিন্তু, বর্তমানে বোলপুর জাম্বুনী বাস স্ট্যান্ড থেকে লজের মোড় পর্যন্ত রাস্তার দুধারে বহু পুরোনো বড় বড় গাছগুলি গোড়া থেকে কেটে নেওয়া হচ্ছে। মহকুমা শাসকের দফতরের সামনেও কেটে নেওয়া হয়েছে গাছ। গাছ কাটার জন্য কোনও লিখিত অনুমতিও নেওয়া হয়নি বন বিভাগ থেকে।

আরও পড়ুন- হাতির হানা আর অজগর আতঙ্কে তটস্থ মালবাজার

বন দফতরের নিয়ম অনুযায়ী বলা হয়েছে, কোন কারণে গাছ কাটতে হলে সেই পরিমান গাছ অন্যত্র লাগাতে হয় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে। গ্রামাঞ্চলে বড় গাছ একটি ও শহরাঞ্চলে দুটি বড় গাছের বেশি গাছ কাটার অনুমতি মেলে না। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত নিয়মের তোয়াক্কা না করে ৩০টি গাছ কাটা হয়েছে। জানা গিয়েছে, কাটা গাছগুলি কমপক্ষে ৪০ থেকে ৫০ বছরের পুরোনো। এত পুরনো গাছ কাটার আগে এলাকায় সেই গাছে স্টেটাস নিরিক্ষণ করতে হয়৷ সেই সময় কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ। এক কথায় অনুমতি ছাড়াই ঐতিহ্যবাহী বোলপুর শান্তিনিকেতন এলাকায় উন্নয়নের নামে সবুজায়ন ধ্বংস করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন- যৌনতার ভিডিও শুট করে প্রতারণা করত প্রেমিকা, আত্মহত্যা করল প্রেমিক

এই মর্মে বোলপুর নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে বৃক্ষ ছেদন রুখতে বন দফতরের জেলা আধিকারিককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠি পেয়ে বন দফতরের তরফে গাছ কাটা বন্ধ করে কাটা অংশ গুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়।

বোলপুর নাগরিক সমাজের অন্যতম মুখ মোহিত সাহা বলেন, "আমরা সবুজ ধ্বংসের বিপক্ষে। সবুজ বাঁচিয়ে রেখেই যে কোন উন্নয়ন মূলক কাজ হোক এটাই চাই। এখানে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে গাছ কাটা হচ্ছে। এটা বন্ধ করা দরকার।"

.