'মুখ্যমন্ত্রী চাননি তাই তৃণমূলকে দিয়ে ভণ্ডুল করে দিলেন বিশ্বভারতীর পাঁচিল তোলার কাজ'
গত কয়েকদিন ধরেই পৌষ মেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়া নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হচ্ছিল। শনিবার মেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়ার কাজ শুরু করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তাতে বাধা সৃষ্টি করে বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি
নিজস্ব প্রতিবেদন: বিশ্বভারতী-র মেলার মাঠের পাঁচিল ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে। এনিয়ে সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নিশানা করলেন রাজ্য বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা।
বিশ্বভারতীর পৌষ মেলার মাঠে পাঁচিল তোলাকে কেন্দ্র করে আজ তুলকালাম হয় বোলপুরে। খোলা মাঠ ঘিরে ফেলার প্রতিবাদে আজ কয়েক হাজার লোক গিয়ে পাঁচিল ভেঙে কাজ বন্ধ করে দেয়। ওই ঘটনার পেছনে মুখ্যমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে বলে অভিযোগ করলেন রাজ্য বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা।
আরও পড়ুন-গেরুয়া শিবিরে ভাঙন, তৃণমূলে বিজেপির প্রাক্তন মিডিয়া সেল প্রধান কৃশানু-সহ একাধিক নেতা
পাঁচিল ভাঙার ঘটনায় আজ মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, 'বিশ্বভারতী একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। তবে আমি চাই না এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট করে এমন কোনও কাঠামো তৈরি হোক। বিশ্বভারতীর ভিসিকে বলব, উনি যেন জেলার ডিএম ও এসপির সঙ্গে এনিয়ে কথা বলেন। এমনকিছু হওয়া উচিত নয় যা বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য নষ্ট করে দেয়।'
Visva Bharati is a central university. I don't want any construction there which will spoil nature's beauty. I request the vice-chancellor to consult the DM and SP. There should no such things in Bengal which will destroy the culture and heritage of Bengal: CM Mamata Banerjee pic.twitter.com/EOSOoBkZpe
— ANI (@ANI) August 17, 2020
মুখ্যমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পরই তাঁকে নিশানা করেন রাহুল সিনহা। পাঁচিল ভাঙার জন্য তিনি তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থকদের দায়ী করেন। রাহুল বলেন, বিশ্বভারতী তার নিজের জায়গায় পাঁচিল তৈরি করছে। এনিয়ে তৃণমূল যা করল তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আজ মুখ্যমন্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলন থেকে স্পষ্ট, বিশ্বভারতীতে যে তাণ্ডব তৃণমূল কংগ্রেস করেছে তার পেছনে পুরোপুরি তাঁর মদত রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর ইন্ধনেই বিশ্বভারতীর মতো বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজের জমিতে পাঁচিল দিতে পারছে না। কারণ মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, রবীন্দ্রনাথ চেয়েছিলেন খোলা জায়গায় সব হতে হবে। তার মানে পাঁচিলে আপত্তি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। সেই কারণেই তৃণমূলকে দিয়ে ওই পাঁচিল দেওয়ার কাজ ভণ্ডুল করে দিলেন। রাজ্যের সর্বোচ্চ পদে বসে মুখ্যমন্ত্রীই যদি ভাঙচুরের রাজনীতি করেন, হঠকারিতা করেন তাহলে রাজ্যজুড়ে হঠকারিতাই চলবে।
আরও পড়ুন-শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্য নষ্ট করে কনস্ট্রাকশন নয়, রাজ্যপালের কটাক্ষের পাল্টা মন্তব্য মমতার
কী হয়েছিল এদিন?
গত কয়েকদিন ধরেই পৌষ মেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়া নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হচ্ছিল। শনিবার মেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়ার কাজ শুরু করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তাতে বাধা সৃষ্টি করে বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি। তাদের বক্তব্য রবীন্দ্রনাথ চেয়েছিলেন খোলা প্রান্তর। তাই মাঠ ঘেরা যাবে না। পাঁচিল তৈরির কাজে লাগা কর্মীদের মারধর করে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপরই তৈরি হয়ে যায় 'মেলার মাঠ বাঁচাও' কমিটি। কমিটির তরফে একটি জমায়েতেরও ডাক দেওয়া হয়। আজ কয়েক হাজার লোক মেলার মাঠে জড়ো হয়ে নির্মীয়মান পাঁচিল ভেঙে দেয়, মেলার মাঠে প্রবেশের গেটগুলিও ভেঙে দেওয়া হয়।