তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলেই তা বেশি নেওয়া হচ্ছে, অন্যদের কেন নয়? পুলিসকর্তাদের প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর
তিনি বলেন, “পুলিসের বিরুদ্ধেই এত হেনস্থার অভিযোগ কেন উঠছে? তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে সঙ্গে সঙ্গে তা নেওয়া হচ্ছে, অন্য দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তা নেওয়াই হচ্ছে না?”
নিজস্ব প্রতিবেদন: কোনও অশান্তির ঘটনায় তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তা সঙ্গে সঙ্গে নেওয়া হচ্ছে, অন্য দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তা নেওয়া হচ্ছে না। এই নিয়ে চরম অসন্তুষ্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেদিনীপুরের ডেবরায় প্রশাসনিক সভায় পুলিসের সামনেই সেই অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ ঘটল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়।
তিনি বলেন, “পুলিসের বিরুদ্ধেই এত হেনস্থার অভিযোগ কেন উঠছে? তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে সঙ্গে সঙ্গে তা নেওয়া হচ্ছে, অন্য দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তা নেওয়াই হচ্ছে না?”পুলিসের উদ্দেশেই তিনি বলেন, “তৃণমূল এখন সোজা হয়ে গিয়েছে। অটো থেকে টোটো-কারা সিম্বল নিয়ে ঘুরে বেড়ায়? জানেন না!”বাংলা যেন বিকিয়ে না যায়, পুলিসকে সতর্ক করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাঁশকুড়া, পিংলা, কেশপুর, ঘটক থানার পুলিস ঠিকভাবে কাজ করছে না বলে বৈঠকে ক্ষোভ উগড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যের পুলিসমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেখানে তাঁরই আমলারা যেন হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে! এদিনের সভায় পুলিসদের উদ্দেশে বলা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রত্যেকটি কথায় যেন তা ভীষণভাবে স্পষ্ট। অন্তত তাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বাড়ানো হল নতুন রেশন কার্ড তৈরি ও ভুল সংশোধনের সময়সীমা, ডেবরায় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
বৈঠক চলাকালীনই ঝাড়গ্রামের আইসিকে তিনি বলেন, “ঝাড়গ্রাম কেন হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে? আপনি তো অকাজ করছেন! আপনাকে তো কাজ করতে পাঠানো হয়েছিল।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কথারও অন্তর্নিহিত অর্থ বিশ্লেষণে রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, ঝাড়গ্রাম তাহলে কাদের হাতে চলে যাচ্ছে? মুখ্যমন্ত্রী কি কেবল আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এই মন্তব্য করেছেন নাকি কোনও এক বিশেষ রাজনৈতিক দলের উত্থান প্রসঙ্গে পুলিসকর্তাকে সাবধানবাণী দিয়েছেন? যদিও এপ্রশ্নের একাধিক ব্যাখ্যা রয়েছে বিশ্লেষকদের কাছে।
পুলিসের উদ্দেশে তিনি ফের বলেন, “রেড করতে যাওয়ার সময়ে যেন কেউ জানতে না পারে।”কারা তথ্য ফাঁস করছে, তা সবই তিনি ভালোভাবে জানেন বলে এদিনের সভায় হুঁশিয়ারি দেন মমতা। তিনি বলেন, অনেক জায়গাতেই পাচারচক্র কাজ করছে। কিন্তু পুলিস রেড করতে যাওয়ার আগেই একজন তা ফাঁস করে দিচ্ছে আর পাচারকারিরা পালিয়ে যাচ্ছে। এটা যেন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে পুলিসকর্তাদের পরামর্শ দেন তিনি।
এছাড়াও পূর্ত দফতরের কাজের গাফিলতি নিয়েও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। আধিকারিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “৭০৬টি অভিযোগ পেয়েছি। রক্ষণাবেক্ষণের কাজে গাফিলতি রয়েছে কেন? অন্য দফতরের কাজ তোমরা করতে চাও না।”
সরকারি আধিকারিকদের উদ্দেশে তাঁর কড়া বার্তা, “দলীয় কর্মীরা দোষ করলে সঙ্গে সঙ্গেই অ্যাকশন নিই। এবার সরকারি কর্মীরা দোষ করলেও তাই করব।”