একান্ন পীঠের প্রথম পীঠ তমলুকের বর্গভীমা, কিছু চাইলেই মা নাকি ফেরান না!
কিরণ মান্না, তমলুক: ৫১ সতীপীঠের অন্যতম পীঠ পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের বর্গভীমা। এখানে পড়েছিল সতীর বাম গোড়ালি। দেবী এখানে নানা রূপে পূজিতা। করালবদনাং মুক্তকেশী, মুণ্ডমালা বিভূষিতাম।
গর্ভগৃহ থেকে ভেসে আসছে মন্ত্র। শক্তি আর ভক্তির মিশেলে এক অপরূপ মাহাত্ম্য। মা ভীমার আরাধনায় মহিমার জাগরণ। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের বর্গভীমা মন্দিরের অন্ধকার থেকে উঠে আসছে এক অজানা ইতিহাস। মাকে প্রতিনিয়ত ভক্তিভরে স্মরণ করা হয় এখানে। পুরাণে কথিত আছে, বিষ্ণুর সুদর্শনচক্রে খণ্ডিত সতীদেহের বাম গোড়ালি পড়ে এখানে। একান্ন পীঠের প্রথম পীঠ এটি। কথিত আছে, দেবী বর্গভীমার মন্দিরটি নির্মাণ করেন স্বয়ং বিশ্বকর্মা। তবে, তমলুকের মানুষের বিশ্বাস, ময়ূরবংশীয় রাজাই তৈরি করেন এই মন্দির।
সত্য কিংবা জনশ্রুতি যাই হোক, মা বর্গভীমা তাম্রলিপ্ত বন্দর নগরীর অধিষ্ঠাত্রী কালিকাদেবী। প্রাণভরে মায়ের কাছে কিছু চাইলে মা নাকি ফেরান না।
আরও পড়ুন- অঙ্ক ভুলের শাস্তি, গৃহশিক্ষকের মারে হাসপাতালে ছাত্র
বর্গভীমার মন্দির সারা বছর প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে। সেই সময় মায়ের কাছে পুজো দেওয়া হয়। রাতে অন্নভোগ নিবেদনের পর দেবীর নিদ্রার ব্যবস্থা করা হয়। মা এখানে ভিন্ন ভিন্ন রূপে পূজিতা হন। কখনও দুর্গা, কখনও কালী, কখনও জগদ্ধাত্রী। তবে, যেহেতু মন্দিরের মা কালিকারূপী, তাই শ্যামাপুজোয় ভক্তিরস আলাদা মাত্রা পায়।
৩০ ফুট বেদির ওপর ৬০ ফুট উচ্চতার বৌদ্ধ স্থাপত্য ধাঁচে নির্মিত মন্দিরটি। মাকে তুষ্ট না করে এখানকার কোনও মানুষ কোনও কাজ করেন না। তা ছাড়া তমলুকের যে কোনও পুজোর আগে বর্গভীমা মন্দিরে পুজো দেন।
আরও পড়ুন- ছোট মেয়ের বায়না মেটাতেই দিন কাবার সাহাবাড়ির
প্রায় ৪ হাজার মন্দির ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এই জেলায়। কালের করাল গর্ভে সবই আজ ভগ্নস্তূপ। কিন্তু ইতিহাসের নির্মম পরিহাসকে অস্বীকার করে আজও পূর্ণ মহিমায় জাগ্রত মা ভীমা।