স্কুলের পাশেই বারুদের স্তুপ, বিস্ফোরণ ঘটতেই স্কুল জুড়ে আতঙ্কে পড়ুয়ারা!
আতসবাজি নিষ্ক্রিয়-র ঘটনায় ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সাক্ষী রইলেন সরকারি সেই মডেল স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষক শিক্ষিকা এবং গ্রামের মানুষজন। বুধবার পশ্চিম বর্ধমানের হিরাপুর থানায় বাজেয়াপ্ত করা বেশ কিছু আতসবাজি নিষ্ক্রিয় করার জন্য লরিতে করে আনা হয় এই কারখানায়। নিষ্ক্রিয় প্রক্রিয়া চলাকালীন ঘটে বিস্ফোরণ।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সরকারি মডেল স্কুলের পাশেই চলছিল আতসবাজি নিষ্ক্রিয় করার কাজ। আচমকা বাজির স্তুপে ঘটল বিস্ফোরণ। আতঙ্ক ছড়াল এলাকায়। খবর সংগ্রহ করতে গেলে বাধা দিল সংশ্লিষ্ট সংস্থা। ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার পাবয়া গ্রামে শালতোড়া মডেল স্কুলের পাশে। পশ্চিম বর্ধমানের হিরাপুর থানার বাজেয়াপ্ত হওয়া অবৈধ আতসবাজিতে বিস্ফোরণ ঘটে। এলাকাবাসীদের অভিযোগ,পুলিস বাজেয়াপ্ত বাজিগুলি লরিতে করে স্কুলের উল্টোদিকে একটি বেসরকারি সংস্থায় নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন, Malbazar: যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে বাঁধ, প্লাবিত হতে পারে বিস্তীর্ণ এলাকা...
পুলিস সূত্রে খবর, বাজেয়াপ্ত হওয়া বাজি এধরনের সংস্থাগুলিই নিষ্ক্রিয় করছে। এক্ষেত্রেও নিষ্ক্রিয় করা সময়ই বিস্ফোরণ ঘটলে পুরো এলাকার আকাশ কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। বিকট শব্দে ভীতসন্ত্রস্ত ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। কেঁপে ওঠে কাঁচা বাড়ির দেওয়াল। মডেল স্কুলের পাশে কীভাবে বাজি নিষ্ক্রিয় করার ছাড়পত্র পেল পুলিস, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমনকি এই খবর সংগ্রহ করতে গেলে বাধা দেওয়া হয় জি ২৪ ঘণ্টাকে।
রাস্তার এ প্রান্তে সরকারি মডেল স্কুল তার ৫০ ফুট দূরত্বে আরেক প্রান্তে ওয়েস্ট বেঙ্গল ওয়েস্টেজ ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড নামে এক বেসরকারি সংস্থার কারখানা। যে কারখানায় রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সরকারি হাসপাতাল এবং বেসরকারি হাসপাতাল থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংস্থার বর্জ্য পদার্থ নষ্ট করা হয় বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়ায়। কিন্তু সেই কারখানায় এবার বারুদ নিষ্ক্রিয় করার ঘটনায় উড়ছে একাধিক প্রশ্ন। প্রসঙ্গত, উচ্চ শব্দকারী বাজী ও আতসবাজি রোধে রাজ্যের বিভিন্ন থানা বাজেয়াপ্ত করেছে একাধিক অবৈধ বাজি ও আতসবাজি। আর সেই সকল আতসবাজি প্রশাসনিক ঘেরাটোপে নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে এই বেসরকারি সংস্থায়।
কিন্তু সেই আতসবাজি নিষ্ক্রিয়-র ঘটনায় ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সাক্ষী রইলেন সরকারি সেই মডেল স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষক শিক্ষিকা এবং গ্রামের মানুষজন। বুধবার পশ্চিম বর্ধমানের হিরাপুর থানায় বাজেয়াপ্ত করা বেশ কিছু আতসবাজি নিষ্ক্রিয় করার জন্য লরিতে করে আনা হয় এই কারখানায়। নিষ্ক্রিয় প্রক্রিয়া চলাকালীন ঘটে বিস্ফোরণ। তীব্র আওয়াজে গোটা স্কুল জুরে শুরু হয় ছাত্রছাত্রীদের হুড়োহুড়ি। ক্লাস থেকে বেরিয়ে আছে ছাত্র-ছাত্রী থেকে শিক্ষক শিক্ষিকারা।
ঘটনার তদন্তে স্কুলের শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীরা ছাদের উপরে গেলে দেখতে পান স্কুল লাগোয়া কারখানা থেকে গোল গোল করে বের হচ্ছে। গোটা আকাশ ঢাকা পড়ে কালো ধোঁয়ায়। বিকট আওয়াজ ও ধোঁয়া দেখে অদূরে থাকা গ্রামবাসীরাও। তাদের দাবি, ভয়ংকর শব্দে গ্রামের কাঁচা বাড়ির দেওয়াল কেঁপে ওঠে। ঘটনার আতঙ্কের ছাপ এখনও গোটা এলাকা জুড়ে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, স্কুলের অদূরে কিভাবে গড়ে উঠতে পারে এমন একটি কারখানা?
২০১৬ সালে নির্মিত হয় শালতোড়া ব্লকের পাবয়া গ্রামে সরকারি এই মডেল স্কুল।২০২২ সালে এই মডেল স্কুলের পাশেই নির্মিত হয় এই বেসরকারি সংস্থা। তাহলে প্রশ্ন উঠছে সরকারি স্কুলের পাশেই কিভাবে ছাড়পত্র পেল এ সংস্থা? সংশ্লিষ্ট দফতর কি আদৌ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দিয়েছিলেন এই ছাড়পত্র? তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী এমনকী গ্রামের মানুষের একটাই দাবি অবিলম্বে বন্ধ করা হোক বাজি ও আতসবাজি নিষ্ক্রিয়ের কাজ।
আরও পড়ুন, Abhishek Banerjee: 'অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লির কুকুর নয়, বাংলার চাকর'