দুধ বিক্রি, জমির দালালি থেকে রাজনীতি, বহু কোটির মালিক ধৃত জগদীশপুরের এই বিজেপি নেতা
এলাকায় কোনো জায়গা জমি বিক্রি করতে গেলে তাকে আগে জানিয়ে বিক্রি করতে হত গোবিন্দকে
নিজস্ব প্রতিবেদন: দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে জগদীশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্য়ায় ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতা গোবিন্দ হাজরাকে। জমির দালাল থেকে পঞ্চায়েত প্রধান। বিপুল সম্পত্তির মালিক তিনি। এছাড়াও বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। কীভাবে এতটাকার সম্পত্তি, হেফাজতে নিয়ে শুরু হয়েছে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন-বিনয় মিশ্র মামলায় ৫ দিন সময় চাইল CBI, পিছিয়ে গেল শুনানি
ছয় নম্বর জাতীয় সড়কের কোনা মোড় থেকে বাদিকের রাস্তায় কিছুটা গেলেই জগদীশপুর। আর জগদীশ পুর মানে একটাই নাম উঠে আসে তিনি হলেন গোবিন্দ হাজরা। একসময়ের দাপুটে তৃণমূল নেতা এবং জগদীশ পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান। আর প্রধান থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে রয়েছে প্রচুর অভিযোগ। আর্থিক তছরূপ থেকে জমিজমা জোর করে দখল করে নেওয়া এমনই অভিযোগ করছেন অনেকেই। আর এভাবে কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়েছেন গোবিন্দ।
কিন্তু কিভাবে হল তার উত্থান? জানা গিয়েছে, প্রথম জীবনে দুধ বিক্রি করতেন তিনি। এরপর শুরু করেন জায়গা জমির দালালি। পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকে হয়ে ওঠেন দলের সক্রিয় কর্মী। সেই সময় সিপিএম শক্ত ঘাঁটি ডোমজুর বিধানসভা কেন্দ্রে জোর লড়াই চালিয়ে যান তিনি। হয়ে ওঠেন জগদীশপুর এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা। রাজনৈতিক সঙ্ঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তিনি। তার বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়।
২০০৩ সালে প্রথমবার তিনি জগদীশপুর(Jagadishpur) গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচিত হন।এরপর আরও তিনবার অর্থাৎ মোট চারবারের প্রধান তিনি। চামরাইলের তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান সুভাষ রায় অভিযোগ করেন, প্রধান থাকাকালীন বহু দুর্নীতি করেছেন গোবিন্দ হাজরা। একবার যে কারনে তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়। পরে অবশ্য আবার ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
এলাকায় কোনো জায়গা জমি বিক্রি করতে গেলে তাকে আগে জানিয়ে বিক্রি করতে হত। সেখান থেকে মোটা টাকা তাকে দিতে হত। এছাড়া জোর করে জমি ও কারখানা দখল করেছেন এই প্রাক্তন প্রধান। এমনটাই অভিযোগ বহু মানুষের। এলাকায় অনেকে রাহু বলে তাকে ডাকতেন গোবিন্দকে। বলা হয় গোবিন্দ হাজরার রাহুর দৃষ্টি জমি ও কারখানায় পড়লে তা তিনি দখল করে ছাড়তেন। এলাকায় অনেক বহুতল নির্মাণ করেছেন তিনি। বর্তমানে সেগুলোর নাম রাহু ভবন বলে উল্লেখ করে ব্যানার লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন-অস্কারে মনোনীত হয়েছিল তাঁর নাম, কানে পুরস্কৃত, এদিকে তিনি 'আইএএস'ও! ব্যাপার কী?
এলাকার এক ব্যবসায়ী কমল চন্দ্র জানান তিনি বহুতল নির্মাণে হার্ডওয়্যার এর সামগ্রী ও রঙ বিক্রি করেছিলেন গোবিন্দ হাজরাকে। কিন্তু তিন বছর ধরে তার পাওনা সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা পাননি। এছাড়া একটি দোকান ঘর কিনতে পাঁচ লাখ টাকা বুকিং এর জন্য দিয়েছিলেন কিন্তু এখন দোকান ঘর পাননি। বাধ্য হয়ে থানায় অভিযোগ করেন। নাম বলতে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক গোবিন্দ হাজরা। সবাই চাইছেন তার বিরুদ্ধে সঠিক তদন্ত করে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক।
ইতিমধ্যেই গত পরশু তাকে পঞ্চায়েতে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করেছে লিলুয়া থানার পুলিস। নিজেদের হেফাজতে নিয়ে শুরু হয়েছে তদন্ত। ডোমজুর এর প্রাক্তন বিধায়ক ও রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এর ঘনিষ্ঠ গোবিন্দ হাজরা। ভোটের আগে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এর সাথে দলবদল করে বিজেপি তে যোগ দেন।
(Zee 24 Ghanta App : দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)