জগদ্দলের কারখানার একপাশে তৈরি হত লাড্ডু, আর পাশেই তৈরি হত অস্ত্র
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিস যখন সেই লাড্ডু কারখানায় তল্লাশি চালাল, তখন চক্ষু চড়কগাছ তদন্তকারীদের।
নিজস্ব প্রতিবেদন: লাড্ডু কারখানার অন্দরে যে কিছু একটা গোলমালের বিষয় রয়েছে, তা আঁচ করতে পেরেছিলেন স্থানীয়রা। কারখানার কর্মীদের প্রায় সকলেরই মুখ চেনা ছিল প্রতিবেশীদের। কিন্তু নিত্য দিন অপরিচিত যে সব লোকেরা যেতেন, তাঁদের পাইকারি খদ্দের বলে চালিয়ে দিতেন কারখানার মালিক। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিস যখন সেই লাড্ডু কারখানায় তল্লাশি চালাল, তখন চক্ষু চড়কগাছ তদন্তকারীদের। উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দলের ওই কারখানায় লাড্ডু তৈরি হচ্ছে এক পাশে, আর তার পাশেই তৈরি হচ্ছে অস্ত্র।
সম্প্রতি কলকাতার ময়দানের কাছ থেকে অস্ত্র সহ ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিস। তিন দুষ্কৃতীর কাছ থেকে উদ্ধার হয় চল্লিশটি আগ্নেয়াস্ত্র ও এক লক্ষ টাকার জালনোট। ধৃতদের একজন মালদার কালিয়াচকের বাসিন্দা। জালনোটের সঙ্গে অস্ত্র কোথা থেকে এল এই প্রশ্নকে সামনে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিস। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁদের কাছ থেকেই বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। খোঁজ মেলে কাটাডাঙ্গার অস্ত্র কারখানার।
আরও পড়ুন: কোচিং না গিয়ে জেরক্সের দোকানের ‘দাদা’র বাড়ি গিয়েছিল ছাত্রী, বাবা-মা খোঁজ পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখল...
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার রাতে জগদ্দলের ওই কারখানায় অভিযান চালায় এসটিএফ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র, লেদ মেশিন। গ্রেফতার করা হয়েছে ৬ জনকে। পুলিস জানিয়েছে, কাটাডাঙ্গার বাসিন্দা কালীচরণ সাউয়ের বাড়িতে একটি লাড্ডু করাখানা চলত, তার পাশেই দুষ্কৃতীদের লেদের মেশিন বসনোর জন্য আট মাস আগে ভাড়া দেয় কালীচরণ সাউ। সেখানেই চলত অস্ত্র তৈরির রমরমা কারবার।
আরও পড়ুন: যৌনতার ভিডিও শুট করে প্রতারণা করত প্রেমিকা, আত্মহত্যা করল প্রেমিক
ধৃত ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিস। তদন্তকারীদের অনুমান, ধৃতদের সঙ্গে আন্তঃরাজ্য অস্ত্র পাচার চক্রের যোগ রয়েছে। কীভাবে প্রকাশ্যে এতদিন লাড্ডু কারখানার আড়াতে অস্ত্র তৈরি চলছিল, তা নিয়েও ধন্দ রয়েছে। স্থানীয় পুলিস প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। কালীচরণের সঙ্গে জগদ্দলের আর কে কে জড়িত রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিস।