আঙুলে কিছু একটা কামড়েছে ; ডাকা হল ওঝা, ২ ঘণ্টা ঝাড়ফুঁকের পর মর্মান্তিক পরিণতি গৃহবধূর

মৃতার স্বামী দেবাশীষ ভাওয়াল বলেন, আমি কবিরাজকে ডেকে আনি। তিনি দেখে বলেন, সাপ নয় ইদুর কামড়েছে।

Edited By: সিকান্দর আবু জ়াফর | Updated By: Sep 15, 2020, 09:09 PM IST
আঙুলে কিছু একটা কামড়েছে ; ডাকা হল ওঝা, ২ ঘণ্টা ঝাড়ফুঁকের পর মর্মান্তিক পরিণতি গৃহবধূর
ছবি-নিজস্ব

নিজস্ব প্রতিবেদন: ওঝার ওপরে সবকিছু ছেড়ে দেওয়ার মাশুল দিতে হল গৃহবধূকে। ঝাড়ফুঁক করতে গিয়ে চলে গেল অনেকটা সময়। বাড়ির লোকের একটা ভুল সিদ্ধান্তে প্রাণ হারালেন জলপাইগুড়ির রাহুত বাগান এলাকার গৃহবধূ রুমা ভাওয়াল।

আরও পড়ুন-কোভিড হাসপাতালের মেনুতে বদল, বাড়ল রোগীর মাথাপিছু খাবারের বরাদ্দ

স্থানীয় সুত্রে খবর, মঙ্গলবার বিকেলে ঘরে নিজের বাচ্চাকে খাওয়াচ্ছিলেন বছর তিরিশের গৃহবধূ রুমা। সে সময় তাঁর ডান পায়ের বুড়ো আঙুলে কিছু একটার কামড় অনুভব করেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির লোককে ক্ষতস্থান দেখান। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে বাড়ির লোক ডেকে আনে বীরেন্দ্র ভাওয়াল নামে স্থানীয় এক ওঝাকে। তিনি এসে রুমা দেবীর পায়ে দড়ি বেঁধে সেই দড়ি ক্রমাগত টেনে বিষ বার করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিফলে যায় সেই চেষ্টা।

বছর দুয়েক আগে রাহুত বাগান এলাকায় সাপের কামড় খাওয়ার পর ওঝা ডেকে ঝাড়ফুঁক করার মাশুল দিতে হয়েছিল এক স্কুল ছাত্রীকে। এরপরেও সেই ট্রাডিশন চলছে সমানে। 

মৃতার স্বামী দেবাশীষ ভাওয়াল বলেন, আমি কবিরাজকে ডেকে আনি। তিনি দেখে বলেন, সাপ নয় ইদুর কামড়েছে। আমি ঝেড়ে দিচ্ছি। এরপর তিনি প্রায় দু ঘন্টা ধরে ঝাড়ফুঁক করেন। এরপর রোগী সুস্থ না হলে আমরা তাকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

আরও পড়ুন-অরুণাচল সীমান্তেও এবার জড়ো হচ্ছে লাল ফৌজ! সতর্ক করা হল ভারতীয় সেনাকে 

জলপাইগুড়ি পরিবেশ কর্মী বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরী এনিয়ে বলেন, খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। আমি খবর পেয়েই হাসপাতালে ছুটে এলাম। ক্ষতস্থান দেখে প্রাথমিক অনুমান এটি বিষধর সাপের কামড়। বছর দুয়েক আগে এই এলাকায় একই ভাবে সর্পদংশনে এক স্কুল ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। দু বছর পার হতে না হতেই আবার এই মর্মান্তিক পরিণতি। 

ঘটনায় জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের সুপার ডাক্তার গয়ারাম নষ্কর জানিয়েছেন সাপে কাটা রোগীটিকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল। চিকিৎসার কোনো সুযোগ পাইনি আমরা।

.