দেহ চুল্লিতে ঢোকানো হচ্ছিল, আচমকাই বেজে উঠল শ্মশান কর্মীর ফোন!

 ‘এই দেহ এখন চুল্লিতে ঢোকানো যাবে না, ফোন এসেছে থানা থেকে। পুলিসবাবুরা বারণ করেছেন।’

Updated By: Aug 20, 2018, 10:58 AM IST
দেহ চুল্লিতে ঢোকানো হচ্ছিল, আচমকাই বেজে উঠল শ্মশান কর্মীর ফোন!

নিজস্ব প্রতিবেদন:  মৃতদেহ খাটিয়া থেকে নামিয়ে স্নান করিয়ে ঘি মাখানো হয়ে গিয়েছে। পুরোত মশাই বেশ কিছু মন্ত্রোচ্চারণও করে ফেলেছেন। প্রাথমিক কাজ সব সম্পন্ন, এবার দেহ চুল্লিতে ঢোকানো হবে। চুল্লিতে ঢোকানোর জন্য লোহার ট্রলিতে দেহ উঠিয়ে ফেলা হয়েছে। ঠিক সেই মুহূর্তে বেজে ওঠে শ্মশান কর্মীর ফোন। ফোনে দু-চারটে কথা বলার পরই শ্মশান কর্মী জানিয়ে দেন, ‘এই দেহ এখন চুল্লিতে ঢোকানো যাবে না, ফোন এসেছে থানা থেকে। পুলিসবাবুরা বারণ করেছেন।’ মৃতের আত্মীয়দের অশ্রুসজল চোখমুখে আচমকাই বিস্ময়ের ছাপ। এই ‘স্বাভাবিক’ মৃত্যুতে আবার থানা-পুলিস কেন- কিছুতেই ঠাওর করতে পারছিলেন না তাঁরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিস যায় শ্মশানে। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। এরপরই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বারুইপুরের কির্তনখোলা শ্মশান ঘাটে যা ঘটল, তা আগে কখনও ঘটেছে বলে মনে করতে পারছেন না স্থানীয়রাই।

আরও পড়ুন:  যাত্রীর পিঠের ব্যাগের চেন খুলতেই কপালে ঘাম এল রেলপুলিসের!

বারুইপুরের রামগোপালপুরের বাসিন্দা স্বপন সর্দার পেশায় আদালতের কেরণী ছিলেন। রবিবার বিকালে তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের সদস্যরা দেহ নিয়ে যান কির্তনখোলা শ্মশানঘাটে। সেখানে শেষকৃত্যের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করা হয়। দেহ বৈদ্যুতিন চুল্লিতে ঢোকানোরও ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছিল। আচমকাই থানা থেকে ফোন আসে। পুলিস যায় শ্মশানে, মৃতদেহ খতিয়ে দেখে। পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিস।  প্রথমে স্বপন সর্দারের পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন, স্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু দেখা যায়, দেহের মাথার পিছনে গভীর ক্ষত রয়েছে। সেখান থেকে তখনও চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়ছে রক্ত। সে প্রশ্ন করতেই পুলিসি জেরায় তাঁরা ফের দাবি করেন, স্বপনবাবুর মৃত্যু হয়েছে পুকুরে জলে ঢুবে।

আরও পড়ুন: চোখে পড়েছে ছানি, হাসপাতালে হেঁটে এলেন বাঘমামা

পরিবারের সদস্যদের দাবি, রবিবার দুপুরে অতিরিক্ত মদ্যপান করেন স্বপন সর্দার। এরপর তিনি পুকুরে স্নান করতে যান। সেখানে স্ট্রোক হয় তাঁর। এরপর ঘাটের পড়ে যান তিনি। সিঁড়িতে মাথার পিছন ফেটে যায়। ওই অবস্থাতেই জলে পড়ে যান তিনি। দীর্ঘক্ষণ বাড়ি না ফেরায় খোঁজ শুরু করে পরিবারের সদস্যরা। পরে তাঁকে পুকুর থেকেই উদ্ধার করা হয়। কিন্তু ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে স্বপন সর্দারের।

প্রশ্ন উঠছে, এই ঘটনার পর কেন পরিবারের সদস্যরা তাঁকে কোনও হাসপাতালে নিয়ে যাননি? কেন স্রেফ স্থানীয় চিকিত্সকের কাছ থেকে ডেথ সার্টিফিকেট নিলেন? আদৌ কি ওই ক্ষত পুকুরে পড়ে গিয়েই হয়েছে? নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে। বারুইপুর থানার পুলিস বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের সদস্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

 

.