আড়াই বছর ধরে বাইপাসের জন্য অপেক্ষা! হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পরেও ফেরায় ৫টি সরকারি হাসপাতাল, মৃত্যু প্রৌঢ়ার

মৃতার পরিবারের অভিযোগ, শেষে হাতেপায়ে ধরে ভোরবেলায় মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়। কিন্তু ততক্ষণে কার্যত সব শেষ।

Reported By: তন্ময় প্রামাণিক | Updated By: Mar 13, 2020, 01:09 PM IST
আড়াই বছর ধরে বাইপাসের জন্য অপেক্ষা! হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পরেও ফেরায় ৫টি সরকারি হাসপাতাল, মৃত্যু প্রৌঢ়ার

নিজস্ব প্রতিবেদন : আড়াই বছর আগেই বাইপাস সার্জারির পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসক। কিন্তু আড়াই বছর ধরে ওয়েটিং লিস্টেই রয়ে গেল নাম। বেড না মেলায় করা যায়নি অস্ত্রোপচারও। শেষে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল ৬২ বছরের সন্ধ্যা রায়ের। এমনকি হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পরেও ২৪ ঘণ্টায় কোনও চিকিৎসা পরিষেবা মেলেনি। ফিরিয়ে দিয়েছে ৫-৫টি সরকারি হাসপাতাল। একটাই কথা, বেড নেই।

পরিবারের অভিযোগ,আড়াই বছর ধরে বাইপাস সার্জারির জন্য ডেটের পর ডেট দিচ্ছিল এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বেড মেলেনি। তাই ডেট হয়নি অস্ত্রোপচারের। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়িতে আচমকাই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন সন্ধ্যা রায়। সঙ্গে সঙ্গেই পরিবারের লোকজন তাঁকে নিয়ে ছোটেন হাবরা হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন সন্ধ্যা। একইসঙ্গে তাঁরা জানান, হাবরা হাসপাতালে পরিকাঠামো নেই। তাঁরা যেন বারাসত হাসপাতালে যান।

বারাসত হাসপাতালে পৌঁছলে সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, সেখানে চিকিৎসার জন্য কার্ডিওলজির কোনও পরিকাঠামো নেই। কলকাতার যেকোনও মেডিক্যাল কলেজে যাওয়ার জন্য দ্রুত তাঁদেরকে রেফার করে দেওয়া হয়। এরপর রাত ৮টা নাগাদ সন্ধ্যা রায়কে নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে পৌঁছন পরিবারের সদস্যরা। ইমারজেন্সি বিভাগ থেকে তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় কার্ডিওলজি বিভাগে। কিন্তু কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর কোনও কার্ডিওলজির সমস্যা নেই। আর কার্ডিওলজি বিভাগে বেডও নেই।

সন্ধ্যা রায়কে নিয়ে তখন তাঁর পরিবারের লোকেরা ইমারজেন্সিতে ফিরে আসেন। ইমারজেন্সি বিভাগের চিকিৎসকরা আবার জানান, কার্ডিওলজির সমস্যা রয়েছে। দ্রুত কোথাও কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি না করলে মৃত্যু হতে পারে সন্ধ্যা রায়ের। এরপরই রাত সোয়া ১০টা নাগাদ এসএসকেএম ইমারজেন্সি বিভাগ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয় সন্ধ্যা রায়কে এনআরএস বা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যেতে। রাত ১২টায় সন্ধ্যা রায়কে নিয়ে পরিবার এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছয়।

আরও পড়ুন, 'এত সাপ্লাই দেওয়া যাবে না, সাদা কাপড় কেটে মাস্ক বানিয়ে নিন'

কিন্তু সেখানেও বেড নেই বলে ফিরিয়ে দেন এনআরএস-এর চিকিৎসকরা। বুকে যন্ত্রণা, হৃদরোগে আক্রান্ত সন্ধ্যা রায়কে নিয়ে রাতেই পরিবার ছোটেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। কিন্তু সেখানেও কার্ডিওলজি বিভাগে বলা হয় বেড নেই। মৃতার পরিবারের অভিযোগ, শেষে হাতেপায়ে ধরে ভোরবেলায় মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়। কিন্তু ততক্ষণে কার্যত সব শেষ। মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করার কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় সন্ধ্যা রায়ের।

.