ছোট মাঠের বড় তারা ওরাই, নিজের আলোতেই আলোকিত তিথি- প্রেরণা
ছোটবেলা থেকে কষ্টের সঙ্গে হাত ধরাধরি করেই বড় হয়েছে তিথি। তাই ও চায় বড় হয়ে বাবা-মা-কে এই কষ্টার্জিত জীবনের বদলে সুখ এনে দিতে। তিথি চায় বড় হয়ে বাবা, মায়ের পাশে দাঁড়াবে ও।
নিজস্ব প্রতিবেদন: বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি। ভারতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী। ইস্টবেঙ্গলের বিশ্বকাপার জনি অ্যাকোস্টা, বাগানের প্রাণ ভোমরা সনি নর্ডি, এই সবটাই তো আপনার জানা। রোজ বড় বড় ছবিতে, শিরোনামে এই তারকারাই তো স্পোর্টস পাতা দখল করে নেয়। সোশ্যাল মিডিয়াও এনাদের নিয়েই ব্যস্ত। কিন্তু ওদের কথা কত জনই বা জানে? জানার আগ্রহও বা কত জনের আছে।
এই তো ময়দানে এক সপ্তাহ ধরে রাজ্য স্তরের ভলিবল প্রতিযোগিতা চলছে। জেলার কত তারারাই তো খেলছে। সে রকম ভাবে নজরে কি আসছে কেউ। হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া! এই প্রেরণা পাল বা তিথির কথাই ভাবুন। এদের একজনের বয়সও ১৮ হয়নি। এরই মধ্যে জাতীয় স্তরে নাম করে ফেলেছে ওরা।
আরও পড়ুন- ব্যালন ডি'অর মঞ্চে বিতর্ক! ক্ষমা চাইলেন সঞ্চালক
তিথি ধারা। তারকেশ্বর মহাবিদ্যালয়ের ক্লাস টুয়েলভ-এর ছাত্রী। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস সিনিয়র ভলিবল প্রতিযোগিতায় খেলে ফেলেছে। ভিয়েতনামে অনূর্ধ্ব ১৯ ভলিবল প্রতিযোগিতাতেও ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছে তিথি। বাবা মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ। বাড়িতে দাদু, ঠাম্মা-সহ মোট পাঁচ সদস্য। মা গৃহবধূ। একটি বোনও রয়েছে তিথির। বাবার রোজগারেই সংসার চলে। স্বপ্ন আর স্বচ্ছলতার দড়ি টানাটানির মধ্যেই এই মেয়ে স্বপ্ন বুনছে। ভারতের হয়ে আরও আরও সাফল্য আনতে।
(তিথি ধারা)
ছোটবেলা থেকে কষ্টের সঙ্গে হাত ধরাধরি করেই বড় হয়েছে তিথি। তাই ও চায় বড় হয়ে বাবা-মা-কে এই কষ্টার্জিত জীবনের বদলে সুখ এনে দিতে। তিথি চায় বড় হয়ে বাবা, মায়ের পাশে দাঁড়াবে ও। তিথির কথায়, “বাবা-মা অনেক কষ্ট করে মানুষ করেছে। বড় হয়ে আমার-ই তো দায়িত্ব ওদের পাশে দাঁড়ানো”।
আরও পড়ুন- অস্ট্রেলিয়াকেই ফেভারিট বলছেন বিরাটের ডেপুটি!
তিথি ছোটবেলায় খুবই রোগা ছিল। বাবা মেয়ের সুস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করেই ভলিবল কোর্টে পাঠিয়েছিল। এরপর জেঠু শিবপ্রসাদের ইচ্ছেতেই কোচ শঙ্কর পালের কাছে ভর্তি হয় তিথি। এখন সেই শঙ্কর পালের ছাত্রীই ভারতীয় ভলিবলের এক উজ্জ্বল নাম হয়ে উঠেছে।
আর প্রেরণা, সাড়ে চোদ্দো বছরের এই মেয়ের এখনই মিনি ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করা হয়ে গিয়েছে। প্রেরণার বাবা-ই ওর প্রেরণা। দেবরাজ (পাল) বাবু নিজেও একজন ভলিবল প্লেয়ার ছিলেন। সেই পথেই হাঁটছে তাঁর মেয়ে। বাবার সাহায্য তো আছেই, প্রেরণার সঙ্গী এখন তাঁর দাদুও। রাজ্যস্তরের ভলিবল প্রতিযোগিতায় কলকাতা থেকে ভদ্রেশ্বরের যাত্রাপতে দাদুর হাত ধরেই যাতায়ত করছে প্রেরণা।
তারকেশ্বরের মেয়ে তিথি এবার সালকিয়ার হয়ে খেলছেন। ওর দল কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে। এদিকে বৈষ্ণব ঘাটার উদয় সঙ্ঘের হয়ে খেলছে প্রেরণা। ওর দলও কোয়ার্টার ফাইনালের জায়গা পাকা করেছে। দুজনই স্বপ্ন দেখছে রাজ্যস্তরে নিজের দলকে চ্যাম্পিয়ন করার।