Bengal, NationalGames2022: জাতীয় গেমস জয়ের পরও কেন ট্রেনে ফিরল 'সোনার বাংলা'? মুখ খুললেন হেড কোচ বিশ্বজিৎ, আইএফএ সচিব
Bengal, NationalGames2022: কয়েকদিন আগে যখন দুর্গাপূজা চলছিল সারা বাংলায়, তখন তারা ব্যস্ত ছিলেন রাজ্যের হয়ে নিজেদের নিংড়ে দিতে। আমেদাবাদে বাংলার দামাল ছেলেরা জাতীয় গেমসে রাজ্যকে গর্বিত করেছিল। প্রতিশোধ নিয়েছিল কেরালার কাছ থেকে। কিন্তু বিমানের বদলে ট্রেনে ফিরল বাংলা দল।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ৯০ মিনিটের যুদ্ধে ঘাম-রক্ত ঝরিয়ে জাতীয় গেমসে (National Games 2022) সোনা জয়ের 'পুরস্কার'। কেরালাকে (Kerala) হারিয়ে বিমানের বদলে আহমেদাবাদ থেকে দুই রাত জেগে শুক্রবার দুপুরে কলকাতায় ট্রেনে ফিরল বঙ্গব্রিগেড (Bengal)! নরহরি শ্রেষ্টা (Narahari Srestha), রবি হাসদাঁ (Rabi Hansda), অমিত চক্রবর্তীরা (Amit Chakrabarty) বাংলাকে নিজেদের পারফরম্যান্সে 'সোনার বাংলা' করে দেওয়ার পরেও, কেন বিমানের টিকিট পেলেন না? কেন তাঁদের ট্রেনে ফিরতে হচ্ছে? আরও বড় প্রশ্ন হল দলের হেড কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য (Biswajit Bhattcharya) ও আইএফএ (IFA) সচিব অনির্বাণ দত্তের (Anirban Dutta) বিমানে ফেরা কি আদৌ সৌজন্যের পরিচয় দিল? এই ইস্যু নিয়ে আপাতত উত্তপ্ত ময়দান। যদিও এই বিষয় নিয়ে জি ২৪ ঘন্টার কাছে মুখ খুললেন দলের হেড কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য ও আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত।
গত ১১ অক্টোবর কেরালার বিরুদ্ধে সন্তোষ ট্রফির (Santosh Trophy) ফাইনাল খোয়ানোর বদলা নিয়েছিল বাংলা। কেরালাকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে জাতীয় গেমসে সোনার পদক জিতেছে বাংলার ফুটবল দল। তাঁদের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) স্বয়ং। কিন্তু এমন সাফল্যের পরেও দু’রাতের ট্রেনযাত্রা করে বাড়ি ফিরতে হল সোনা জয়ের নায়কদের। ফলে নিন্দার ঝড় উঠছে ফুটবল মহলে।
তবে বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য ফুটবলারদের ট্রেনে ফেরা নিয়ে কোনও ভুল দেখছেন না। বরং তিনি টেলিফোনে বলেন, 'ট্রেনে বাড়ি ফেরার মধ্যে অসম্মানের কি আছে! কয়েক বছর আগে বিজয় হাজারে ট্রফি খেলতে ট্রেনে চেপেই কলকাতায় এসেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। মনে রাখবেন ততদিনে ধোনি কিন্তু ভারতের অধিনায়ক হিসেবে তিনটি আইসিসি ট্রফি জিতে নিয়েছে। তিনি যদি ট্রেনে যাতায়াত করতে পারেন, তাহলে বাংলার ফুটবলারদের ট্রেনে ফিরতে দোষ কোথায়! আর তাছাড়া ওরা তো বাতানুকুল কামরা যুক্ত ট্রেনে ফিরেছে। স্লিপার ক্লাসে বসে ফিরতে হয়নি।'
পড়ুন, বাঙালির প্রাণের উৎসবে আমার 'e' উৎসব। Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল শারদসংখ্যা
এদিকে সোনা জয়ী কোচের বিমানে ফেরা নিয়েও শুরু হয়েছে বিতর্ক। সেই বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিন প্রধানে কোচিং করানো প্রাক্তন স্ট্রাইকার বলেন, 'কেউ সত্যি জানেই না। আমার দুই দাদা ক্যানসারে আক্রান্ত। দুজন কলকাতার দুই প্রান্তের হাসপাতালে অনেকদিন ধরে ভর্তি আছেন। এমন মানসিক অবস্থার মধ্যেও আমি বাংলা দলের দায়িত্ব নিয়েছি। কম সময়ের মধ্যেও চ্যাম্পিয়ন হলাম। সেটা কেউ দেখল না।' তিনি আরও যোগ করেন, 'ফুটবলারদের সঙ্গে আমারও ট্রেনে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু পারিবারিক কারণেই প্লেনে কলকাতায় ফিরতে বাধ্য হলাম।'
আরও পড়ুন: IND vs PAK: ২০০৫-০৬ মরসুমের পর ফের পাকিস্তান সফরে টিম ইন্ডিয়া! তোড়জোড় শুরু করছে বিসিসিআই
আরও পড়ুন: Sandeep Lamichhane: কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে, এবার শ্রীঘরে নেপালের অধিনায়ক সন্দীপ লামিছানে
জানা গিয়েছে, ফুটবলাররা বিমানে চেপেই বাড়ি ফিরতে চেয়েছিলেন। মাত্র নয় দিনে পাঁচটি ম্যাচ খেলার পরে টানা দু’দিন ধরে ট্রেন যাত্রা করার ধকল নেওয়া তাঁদের পক্ষে অসম্ভব ছিল। কিন্তু সেই আবেদন নাকি পত্রপাঠ নাকচ করে দেওয়া হয় আইএফএ পক্ষ থেকে। ফুটবলারদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ট্রেনের টিকিট।
বঙ্গ ফুটবল সংস্থার সচিব অনির্বাণ দত্তের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, 'আমদের বাংলা দলে মোট ২৪ জন সদস্য রয়েছে। আমরা কিন্তু বিমানের টিকিটের চেষ্টা করেছি। তবে সবার একসঙ্গে টিকিট পাইনি। জাতীয় গেমস খেলতে যাওয়ার সময় কিন্তু পুরো দল বিমানেই গিয়েছিল। ফেরার দিনক্ষণ তো আমরা কেউই জানতাম না। ফলে আগে থেকে টিকিট কাটা সম্ভব ছিল না। আমরা সবাই ফাইনালে দলকে দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ফাইনালে যে দল যাবেই এমন কোনও গ্যারান্টি তো ছিল না।' তিনি ফের বলেন, '৯ অক্টোবর ফাইনাল জেতার পর আমরা ১০ তারিখ আমরা যখন বিমানের টিকিট কাটতে গেলাম, তখন ১২ তারিখের জন্য একসঙ্গে টিকিট পেলাম না। এতবড় দল একসঙ্গে না এলে সমস্যা অনেক। চার-পাঁচ ভাগে ফুটবলাররা ফিরলে তাদের দায়িত্ব কে নেবে! তবুও অনেক চেষ্টা করার পর আমরা ১৩ অক্টোবরের টিকিট পেয়েছিলাম। সেটা জানার পর আমরা জাতীয় গেমসের আয়োজকদের কাছে আবেদন করেছিলাম যাতে ফুটবলার ও সাপোর্ট স্টাফদের বাড়তি একদিন থাকার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে আয়োজকরা অনুমতি দেয়নি। সেটা নিয়ে ফুটবলারদের সঙ্গে বিস্তারিত কথা হয়। ট্রেনে ফেরা নিয়েও কথা হয়েছিল। তখন কিছু ফুটবলার বিমানে ফেরার কথা বলে। যদিও আমি ওদের বলেছিলাম বিমান ভাড়ার বাকি টাকা সব ফুটবলারদের মধ্যে সমানভাবে বন্টন করা হবে। সেটা শোনার পর ফুটবলাররা বাতানুকুল কামরার ট্রেনে ফেরার সিদ্ধান্ত নেয়।'
ফুটবল ওদের ধ্যান জ্ঞান এবং লড়াইয়ের অস্ত্র। আর তাই সোনাজয়ী বাংলা দলের ট্রেনে ফেরা নিয়ে শুরু হল বিতর্ক। যদিও এই স্পর্শকাতর ইস্যু নিয়ে মুখ খুলেছেন বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য ও আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত। তবুও বিতর্কের জল কতদূর গড়ায় সেটাই দেখার।