এক চোখে দৃষ্টি নেই, চোখ ধাঁধানো গোল করে পুসকাস ট্রফির দাবিদার প্যারাগুয়ের অখ্যাত ফুটবলার
ম্যাচ শেষে জয়ী দলের সভাপতি মাঠে নেমে অভিনন্দন জানিয়েছেন রিকার্দোকে।
নিজস্ব প্রতিনিধি : ছোটবেলায় দুর্ঘটনায় এক চোখ হারিয়েছিলেন। কিন্তু তা নিয়ে কখনও আফসোস করেন না মারিও রিকার্ডো। আসলে আফসোস জিনিসটা তাঁর মধ্যে ছোট থেকেই নেই। এক চোখের জন্য খেলতে রিকার্দোর কিন্তু কোনও সমস্যা হয় না। তিনি নিজেই বলেছেন সে কথা। ছোট থেকে লক্ষ্য স্থির করেছিলেন। একদিন বড় ফুটবলার হবেন। বড় ফুটবলার হয়েছেন কি না সময় বলবে। তবে ফুটবলার হয়েছেন অবশ্যই। আর এবার এমন একখানা গোল করে বসলেন মারিও যে বিশ্ব ফুটবল তাঁকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য।
আরও পড়ুন- ৭৪ হাজার টাকা জরিমানা, কমনওয়েলথ ভিলেজে তাণ্ডব করে দেশের নাম ডোবালেন ভারতীয় ক্রীড়াবিদরা
এক চোখে দৃষ্টি নেই। তবে এই প্রতিবন্ধকতা তাঁর ফুটবলার হয়ে ওঠার পথে কখনও বাধা হয়ে উঠতে পারেনি। মারিও এখন খেলছেন প্যারাগুয়ের তৃতীয় বিভাগের দল ক্রিস্তোবাল কোলনের হয়ে। প্যারাগুয়ের এই অখ্যাত রিকার্ডোই এখন ফুটবল দুনিয়ায় দৃষ্টি নিজের দিকে টেনে নিয়েছেন। এমন এক গোল করেছেন যে তাঁর হাতেই পুসকাস ট্রফি তুলে দেওয়ার জোর দাবি উঠেছে চারপাশ থেকে। কিন্তু এখানেও দুর্ভাগ্য তাঁর পিছনে লেগে রয়েছে।
আরও পড়ুন- বাইক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন ইস্টবেঙ্গলের আশিয়ান জয়ী মিডফিল্ডার কুলথুঙ্গান
ফিফা পুসকাস (বছরের সেরা গোল) ট্রফির জন্য বিবেচ্য সময়ের মধ্যে রিকার্ডো এই চোখধাঁধানো গোলটা করেননি। ফিফার নিয়ম অনুযায়ী, গত বছরের ৩ জুলাই থেকে এ বছরের ১৫ জুলাই- মূলত এই সময়ের মধ্যে সেরা গোলগুলো পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পাবে। কিন্তু রিকার্ডো এই অবিশ্বাস্য গোলটা করেছেন নির্ধারিত সময়ের পরে। এরপরই প্যারাগুয়েতে দাবি উঠেছে, রিকার্ডোকে যেন এবারের পুসকাস ট্রফি দেওয়া হয়। তবে অন্যান্য দেশের সংবাদমাধ্যম বলছে, এবার না হলেও পরের বছর হয়তো তাঁর এই অবিশ্বাস্য গোলটি বিবেচনা করা হতে পারে।
প্যারাগুয়ের তিন বিভাগের দলগুলো নিয়ে আয়োজিত টুর্নামেন্ট প্যারাগুয়ে কাপে মঙ্গলবার সেরো পোর্তেনোর মুখোমুখি হয়েছিল ক্রিস্তোবাল কোলন। প্রথম বিভাগের দল পোর্তেনো ম্যাচটা ৩-১ গোলে জিতলেও দিনের শেষে আলোচনা চলে শুধু রিকার্ডোর গোলটা নিয়েই। ম্যাচের ২০ মিনিটে সতীর্থের হেড থেকে বল পান মাঝমাঠের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা রিকার্দো। এক পায়ে দারুণ রিসিভে বলটা মাটিতে নামিয়ে এক ডিফেন্ডারকে ডজ দেন তিনি। বলটা সেই ডিফেন্ডারের মাথার ওপর দিয়ে সামনে নিয়ে মাটিতে পড়ার আগেই দূরপাল্লার শট নেন। বাতাসে প্রায় ভাসতে ভাসতে গিয়ে বলটা গোলকিপারকে টপকে পোর্তেনোর জালে জড়িয়ে যায়।
রিকার্দোর এই গোল দেখে প্রথমে যেন বিশ্বাস করতে পারছিল না উপস্থিত দর্শকরা। ম্যাচ শেষে জয়ী দলের সভাপতি মাঠে নেমে অভিনন্দন জানিয়েছেন রিকার্দোকে। প্যারাগুয়ের তৃতীয় বিভাগে ম্যাচপ্রতি সাধারণত ৩০ ডলার করে পান ২৮ বছর বয়সী এই ফুটবলার। কিন্তু অসাধারণ সেই গোলটির জন্য টুর্নামেন্টের ওই ম্যাচ থেকে ৩০০ ডলার ফি পেয়েছেন রিকার্ডো।