মাত্র ৪০ ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান নিয়েও টেস্ট জিতল ভারত!
যা হওয়ার ছিল, তাই হল। নাগপুর টেস্ট তিন দিনেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। গান্ধী-ম্যান্ডেলা সিরিজ ভারতেরই জেতার কথা ছিল। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের হাতে প্রোটিওদের নাস্তানাবুদ হওয়ারই ছিল। সবই হল।
ওয়েব ডেস্ক: যা হওয়ার ছিল, তাই হল। নাগপুর টেস্ট তিন দিনেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। গান্ধী-ম্যান্ডেলা সিরিজ ভারতেরই জেতার কথা ছিল। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের হাতে প্রোটিওদের নাস্তানাবুদ হওয়ারই ছিল। সবই হল।
আর এ সবের ফল হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম পূর্ণাঙ্গ টেস্ট সিরিজ জিতলেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। তাও হ্যালাফ্যালা করার মতো দল একবারেই নয়। বরং, গত এক দশকে তারা বিদেশে টেস্ট সিরিজ হারেইনি! কোহলি একটু বেশি প্রাপ্তি দিয়েই শুরু করলেন আর কী।
তৃতীয় অর্থাত্ নাগপুর টেস্টে ভারত জিতল ১২৪ রানে। ৩১০-এর লক্ষ্য নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় দিনের শেষে ২ উইকেট পড়েও গিয়েছিল তাদের। আজ ভারতের সামনে ছিল একটাই লক্ষ্য। প্রথম ইনিংসে মাত্র ৭৯ রানে গুটিয়ে যাওয়া প্রোটিওদের যত তাড়াতাড়ি পারো, তত তাড়াতাড়ি শেষ করে দাও।
খুব তাড়াতাড়ি অবশ্য হল না। দ্বিতীয় ইনিংসে ৯০ ওভার ব্যাট করল প্রোটিওরা। আর গুটিয়ে গেল ১৮৫ রানে। প্রথম ইনিংসের থেকে অনেক ভাল পারফরম্যান্সই বটে। যদিও ম্যাচ জিততে বা বাঁচাতে এই পারফরম্যান্স যথেষ্ঠ ছিল না।
প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট পেয়েছিলন অশ্বিন। দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়ে নিলেন মাত্র ৭ টি উইকেট। দিন দিন অনিল কুম্বলের সার্থক উত্তরসূরি হয়ে উঠছেন তিনি।
বাকি তিন উইকেট নিলেন অমিত মিশ্রা। না দ্বিতীয় ইনিংসে সতীর্থ রবীন্দ্র জাদেজার জন্য কিছুই অবশিষ্ঠ রাখেননি তাঁরা দুই স্পিনার।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সবথেকে বেশি রান করলেন হাসিম আমলা এবং ফ্যাফ দুপ্লেসি। দুজনই করেন ৩৯ রান।
ডুমিনি করেন (১৯)। এলগার (১৮) এবং ভিয়াস (১২)। এ ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার আর কোনও ব্যাটসম্যানই দু অঙ্কের রান করতে পারেননি।
ভারতের পক্ষে এই টেস্টের ২ ইনিংস মিলিয়ে সবথেকে বেশি রানের ইনিংস খেলেছেন মুরলী বিজয়। প্রথম ইনিংসে তিনি করেছিলেন মাত্র ৪০ রান। দু বার ব্যাট করে এই রানটাও আর কোনও ভারতীয় ব্যাটসম্যান টপকাতে পারেনি!
না, এত কম ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান নিয়ে ভারত কখনও টেস্ট জেতেনি। এটাও একটা আজব রেকর্ড।
এই বছরটা কেমন চলছে অশ্বিনের? গোটা বিশ্ব ২০১৫ সালে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী তিনিই। মাত্র ৮ টেস্টে চলতি বছরে ৫৫ উইকেট নেওয়া হয়ে গিয়েছে তাঁর। দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্টুয়ার্ট ব্রড ৫১ টি উইকেট পেতে খেলে ফেলেছেন ১৩ টি টেস্ট। বোঝাই যাচ্ছে, অশ্বিন কী গতিতে দৌড়চ্ছেন। এক ক্যালেন্ডার বছরে কোনও ভারতীয় হিসেবে এর থেকে বেশি উইকেট পেয়েছিলেন, তিনি হরভজন সিং। ভাজ্জি নিয়েছিলেন ৬৩ টি উইকেট।
অশ্বিন এই টেস্টেই নিলেন এক ডজন উইকেট। যে হারে উইকেট পাচ্ছেন, তাতে দিল্লি বা সিরিজের শেষ টেস্টেই না ভাজ্জিকে টপকে যান।
আজকের দিনেই অ্যাডিলেডে শুরু হল দিন রাতের টেস্ট ক্রিকেট। এমন এক ঐতিহাসিক দিনে সব মিলিয়ে ইতিহাস রচনা করল ভারতও। এবার পুরোপুরিভাবে শুরু হয়ে গেল বিরাট যুগ। এক টেস্ট এখনও বাকি সিরিজের। হলই বা। ৩ টেস্টের সিরিজে যে ২-০ এগিয়ে ভারত। মনে হয় না, এই দক্ষিণ আফ্রিকা দিল্লিতে সম্মানের লড়াইটাও জিততে পারবে বলে।