দারিদ্রের জ্বালায় দিনমজুর সোনাজয়ী তিরন্দাজ, অবশেষে টনক নড়ল প্রশাসনের

এর আগে অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত তিরন্দাজ লিম্বা রামের সঙ্গেও একই ব্যাপার হয়েছিল।

Updated By: Jul 25, 2018, 01:39 PM IST
দারিদ্রের জ্বালায় দিনমজুর সোনাজয়ী তিরন্দাজ, অবশেষে টনক নড়ল প্রশাসনের

নিজস্ব প্রতিনিধি : আশোক সোরেনকে চেনেন? না চেনারই কথা। দেওঘরের সামান্য একজন দিনমজুর। কেন্দ্রীয় সরকারের গ্রামীণ রোজগার গ্যারান্টি যোজনায় কাজ করেন। দিন আনেন, দিন খান। তাঁকে তো না চেনারই কথা।

আরও পড়ুন-  বিরাটের একটা ইনস্টা পোস্টের দাম ৮২ লাখ!

কয়েকটা তথ্য দেওয়া প্রয়োজন অশোক সোরেনের সম্পর্কে। তা হলে তাঁকে চিনে ফেলতে সুবিধা হবে। অশোক ২০০৮ সাউথ এশিয়ান গেমসে দুটো সোনার পদক জিতেছিলেন। তার আগে ২০০৭-এ রাজ্য স্তরের সিনিয়র তিরন্দাজি চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতেছিলেন এই অশোক। গরীব বাড়ির ছেলে সাহস করে তিরন্দাজির মতো খেলা বেছে নিয়েছিলেন। তার পর তীর-ধনুক ভালবেসে ফেলা। প্রতিকূল অবস্থার সঙ্গে লড়ে দেশকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সোনা জিতিয়েছেন। অশোক হয়তো বিরাট কোহলি, সুনীল ছেত্রিদের মতো এদেশের তারকা অ্যাথলিট নন। তবে দেশের নাম বহির্বিশ্বে উজ্জ্বল করার ব্যাপারে তাঁর অবদানও বিরাট বা সুনীলদের থেকে কোনও অংশে কম নয়।

কখনও কোন গ্লানি ছিল না অশোকের মনে। প্রশাসনের দরবারে একটা সময় সাহায্যের আশায় ঘুরে ঘুরে জুতো ক্ষয়ে গিয়েছে তাঁর। আর্জি এটুকুই ছিল, সামান্য একটা চাকরি পেলেও নিজের স্বপ্ন নিয়ে বাঁচতে পারবেন এই আর কী! কিন্তু সরকার তখনও শীতঘুমে। কোনও আশ্বাস, কোনও সাহায্য, কোনও অনুদান তিনি কখনও পাননি। বর্তমান ও ভবিষ্যতের রাস্তা ক্রমশ অন্ধকারে ঢেকে যাওয়ায় দিনমজুরির পথ বেছে নেন অশোক। তিরন্দাজি তার পরও কিন্তু বন্ধ হয়নি। পেট, খিদে, সংসার, জীবন সংগ্রামের মতো জাগতিক ব্যাপারগুলো সামলে তাঁর পক্ষে আর আন্তর্জাতিক স্তরে নামা সম্ভব হচ্ছিল না। কিন্তু গ্রামের ছোট ছেলে-মেয়েদের তিরন্দাজির পাঠ দিচ্ছিলেন তিনি। দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই ও স্বপ্ন নিয়ে বাঁচার যুদ্ধ চলছিল সমান্তরালে। তখনও চারপাশ থেকে কোনো আশ্বাস, সাহায্য নেই। 

আরও পড়ুন-  ঝাড়খণ্ডের সর্বোচ্চ আয়করদাতা ধোনিই

এর আগে অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত তিরন্দাজ লিম্বা রামের সঙ্গেও একই ব্যাপার হয়েছিল। তিনি অসস্থ হওয়ার আগে পর্যন্ত তাঁর দিকে সরকার ঘুরেও তাকায়নি। কিন্তু অসুস্থ হওয়ার পর, তাঁর অসুস্থতার খবর জানাজানি হওয়ার পর লিম্বা সরকারের তরফে অনুদান পান। এবার অশোকের খবর চাওর হতে নড়েচড়ে বসল প্রশাসন। কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিং রাঠৌর ২৮ বছর বয়সী অশোককে পাঁচ লক্ষ টাকার আর্থিক অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন। দিনমজুর অশোকের একখানা দশ হাজার মাসিক মাইনের চাকরিও জুটল। দিন ঘুরল দিনমজুর অশোকের। কিন্তু অনেক দেরি করে হয়তো। 

Tags:
.