Exclusive Gautam Bhattacharya, Sourav Ganguly: বিজেপি-র একাংশ সৌরভের প্রতি রুষ্ট, তাঁকে সরানো ক্রিকেট প্রশাসনের সিদ্ধান্ত নয়
'ইদানীং কালে বোর্ড নির্বাচনে এত বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রেসিডেন্ট হওয়াটাও যেমন চমকপ্রদ ছিল, তেমনই সরে যাওয়াটাও। অনেক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল, যে সৌরভকে হয়তো বিজেপি বা জয় শাহ চাইছেন না। জয় প্রেসিডেন্ট হলেন না, অন্য ক্রিকেটারকে এনে বসিয়ে দেওয়া হল, এটা কেউ ভাবতে পারেনি। '
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে (Sourav Ganguly) অবশেষে বিসিসিআই-এর (BCCI) মসদন থেকে সরিয়েই দেওয়া হল। এরমধ্যে উঠে এসেছে নতুন তথ্য। তিনি বোর্ডের শীর্ষ পদে থাকার পরে কোনও সাব কমিটির প্রধান, সোজা কথায় লিখলে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান (IPL Governing Council Chairman) হতে রাজি হননি। তাই তিনি সবিনয়ে আইপিএল চেয়ারম্যান হওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। জি ২৪ ঘন্টার এডিটর গৌতম ভট্টাচার্য (Gautam Bhattacharya) বলছেন যে, বিজেপি-র একাংশ সৌরভের প্রতি রুষ্ট, তাঁকে সরানো ক্রিকেট প্রশাসনের সিদ্ধান্ত নয়।
ইংল্যান্ড থেকে ফোনে গৌতম বলেন, 'ইদানীং কালে বোর্ড নির্বাচনে এত বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রেসিডেন্ট হওয়াটাও যেমন চমকপ্রদ ছিল, তেমনই সরে যাওয়াটাও। অনেক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল, যে সৌরভকে হয়তো বিজেপি বা জয় শাহ চাইছেন না। জয় প্রেসিডেন্ট হলেন না, অন্য ক্রিকেটারকে এনে বসিয়ে দেওয়া হল, এটা কেউ ভাবতে পারেনি। রজার বিনির নাম গত চার-পাঁচ দিন ধরে ভাসছিল, তবে এটা যে সত্যি সত্যি ঘটতে পারে, সত্যিই এটা কেউ ভাবতে পারেননি, সৌরভের মতো ভাবমূর্তির একজনকে বসিয়ে রজার বিনি! সত্যিই অভাবনীয়। সবার এখন মনে হচ্ছে এটা একটা মাস্টার স্ট্র্যাটেজি, যিনিই করে থাকুক না কেন! যদি সৌরভকে সরিয়ে জয়কে আনা হত, তাহলে বিশাল সমালোচনার ঝড় বয়ে যেত। সৌরভ নিজেও আশ্বস্ত ছিলেন যে, এটা ঘটবে না। সৌরভকে সরিয়ে জয়কে আনা হলে, বিরাট সমালোচনা হত, জয় কী এমন প্রশাসক, যিনি সৌরভকে সরিয়ে দিলেন। কিন্তু পরে দেখা গেল যে, ক্রিকেটারকে সরিয়ে ক্রিকেটারকে আনা হল। এটা কেউ ভাবতে পারেনি। যে মুহূর্তে এটা ঘটে গেল, সমালোচনার আর সুযোগ থাকল না যে, একজন ক্রিকেটারকে সরিয়ে নন-ক্রিকেটারকে আনা হয়েছে। এখন সমালোচনা হলে হবে, ক্রিকেটারই তো এল। এটা মাস্টার স্ট্র্যাটেজি। ওয়াকিবহাল মহলের এটাই মনে হচ্ছে। এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। শুধু ক্রিকেট প্রশাসনের সিদ্ধান্ত নয়। কারোর কারোর মনে হচ্ছে যে, রেড রোডে ইউনেস্কোর বিশেষ স্বীকৃতি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন সৌরভ। মুখ্যমন্ত্রীর পাশে সৌরভের এই সিদ্ধান্তই কি প্রভাবিত করল! কারোর মনে হচ্ছে সেটা নয়। তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে এলেন না গত বিধানসভা নির্বাচনে, সেটাই মুখ্য কারণ। সেই সময় থেকেই বিজেপি-র একাংশ সৌরভের প্রতি রুষ্ট হয়েছে। কারোর মতে এটাই কারণ। সৌরভের মতো ব্যক্তিত্বকে যদি প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরানোই হত, তাহলে একই দিনে বলা যেত যে, তোমাকে আমরা আইসিসি-র জন্য ভাবছি, তাই আমরা অন্য লোককে আনছি। সেটা কিন্তু বলা হয়নি। মুম্বইতে বোর্ডের দু-একজনকে ফোন করেছিলাম। তাঁরা এখনও আইসিসি নিয়ে কিছু জানতে পারেননি। সৌরভকে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তার মানেই আমরা তোমাকে ওই ভূমিকায় ভাবছি না। সৌরভ খুব সঙ্গত কারণেই এই পদ চাননি । কারণ কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর হওয়ার পর কাউকে যদি বলা হয়, তুমি মার্কেটিং ম্যানেজার হও, তাহলে তিনি রাজি হবেনই বা কেন!'
আরও পড়ুন: Exclusive Gautam Bhattacharya, Sourav Ganguly: সৌরভকে সরিয়েই দেওয়া হল, কেন?
সৌরভের আইসিসি-র ভবিষ্যতও ক্ষীণ বলেই মত গৌতমের। তিনি বলেন, 'সৌরভের আইসিসি-তে যাওয়া নিয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। অনেকেরই মনে হচ্ছে যে, যদি আজকেই সিদ্ধান্ত হয়ে যেত, তাহলে সৌরভকে পাঠানো হত না। আজ অক্টোবরের ১১, ২০ তারিখ মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। আগামী কয়েক দিনে যদি দেখা যায় যে, রাজনৈতিক ভাবে অত্যন্ত সরগরম পরিস্থিতি, রাজ্য বিজেপি থেকে সৌরভকে আইসিসিও না দেওয়া হয়, তাহলে বাংলার মানুষ ফুঁসে উঠবেন। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন, নির্বাচন রয়েছে। এরকম ধারণাও অনেক মহলের। সৌরভকে পাঠানো হবে, শ্রীনিবাসন যাবেন নাকি অনুরাগ ঠাকুর যাবেন আগামী কয়েকদিনেই ঠিক হয়ে যাবে। গ্রেগ বার্কলেই হয়তো ভারত বলবে আরও একটি টার্ম আপনি থাকুন। আইসিসি-র দৌড়ে প্রথম লিস্টে এরা সৌরভকে মনে করছে না। ভারতীয় ক্রিকেটে এখন যা অবস্থা কে কখন লগআউট করবেন, তা কোনও রাজনৈতিক দলই ঠিক করে। হয়তো বলাটা বাড়াবাড়ি হবে। তবে এটা হয়। তবে সৌরভকে সরানোর সিদ্ধান্তের নেপথ্যে যে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ, নেই তা বলা হাস্যকর হবে।' এখন দেখার সৌরভের ভবিষ্যত কোন দিকে এগিয়ে যায়!