হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সোনাজয়ী অ্যাথলিট, মুখ ফিরিয়ে প্রশাসন
৬ নম্বর শিখ রেজিমেন্টে হাবিলদার পদে দেশসেবা করেছেন হাকাম সিং।
নিজস্ব প্রতিনিধি : হাকাম সিং ভাট্টাল। ৬৪ বছর বয়স। কিডনি ও লিভারে গুরুতর সমস্যা নিয়ে ভর্তি রয়েছেন হাসপাতালে। প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। এমনকী, তাঁর খোঁজ অবধি কেউ রাখেনি। এত পর্যন্ত পড়ার পর আপনাদের মনে হতে পারে, এরকম অনেক মানুষই প্রতিনিয়ত হাসপাতালে শুয়ে জীবন-মৃত্যুর মাঝে লড়ছেন। আমরা কি সবার খোঁজ রাখি! কিন্তু যদি বলা হয়, ৬৪ বছরের এই ভদ্রলোক দেশকে এশিয়ান গেমস থেকে সোনা এনে দিয়েছিলেন! আরও আছে। সেই তিনিই ধ্যানচাঁদ পুরস্কারপ্রাপ্ত একজন অ্যাথলিট। তার উপর একটা সময় তিনি ভারতীয় সেনায় হাবিলদার পদেও দেশসেবা করেছেন।
আরও পড়ুন- ইতিহাসে প্রথম! কয়েনের বদলে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে টস করলেন রেফারি
১৯৭২ এ সেনায় যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ৬ নম্বর শিখ রেজিমেন্টে হাবিলদার পদে দেশসেবা করেছেন হাকাম সিং। ১৯৭৮ ব্যাঙ্কক এশিয়ান গেমসে পুরুষদের ২০ কিমি হাঁটায় সোনার পদক জিতেছিলেন তিনি। পরের বছর এশিয়ান ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড চ্যাম্পিয়নশিপেও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছিলেন হাকাম সিং। তবে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনার জন্য ১৯৮১ তে অবসর ঘোষণা করেন পাঞ্জাবের এই অ্যাথলিট। তার পর থেকে অবশ্য কোচের ভূমিকায় দেখা গিয়েছে তাঁকে। ২০০৮-এ তত্কালীন রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিলের হাত থেকে ধ্যানচাঁদ পুরস্কার পেয়েছিলেন হাকাম সিং। কিন্তু শেষমেশ এদেশের আর পাঁচজন অ্যাথলিটের মতো তিনিও বিস্তৃতির অন্ধকারে হারিয়ে গিয়েছিলেন। জীবেনর শেষ ল্যাপে এসে এখন চর ম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে সোনাজয়ী অ্যাথলিটকে। তাঁর পরিবার ভাল হাসপাতালে রেখে হাকাম সিংয়ের চিকিত্সাও করাতে পারছে না। অর্থের অভাবে মাঝপথেই আটকে রয়েছে তাঁর চিকিত্সা। সাহায্যের আশায় অনেক প্রশাসনিক কর্তার দরজায় কড়া নেড়েছে হাকাম সিংয়ের পরিবারে লোকজন। কিন্তু কেউ সাড়া দেননি।
হাকাম সিংয়ের পুত্র সুখজিত্ সিং বলছিলেন, ''বাবা ১৯৮৭ তে সেনা থেকে অবসর নেন। তার পর টানা ১৬ বছর ভীষণ দুর্দশার মধ্যে কাটিয়েছেন। ২০০৩ এ আবার তিনি পাঞ্জাব পুলিশে চাকরি পান। তাঁকে কনস্টেবল হিসাবে নেওয়া হয়। কিন্তু তিনি মূলত অ্যাথলিটদের কোচিং করাতেন। ২০১৪-তে বাবা পুলিশের চাকরি থেকে অবসর নেন। ওনার লিভার কাজ করছে না। রাজ্য সরকারের তরফে আমাদের কোনও সাহায্য দেওয়া হয়নি। আমরা অনেকের কাছে সাহায্যের জন্য গিয়েছি।''