Andrew Symonds Death: বাইশগজের লড়াই থেকে একাধিক বিতর্ক, শেষযাত্রায় মিশে গেলেন ওয়ার্ন-সাইমন্ডস
শেন ওয়ার্ন (Shane Warne) মাঠের বাইরে বিতর্কের 'মহাগুরু' হলে, সদ্য প্রয়াত অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসকে (Andrew Symonds) বিতর্কিত জগতের 'গুরু' বলাই যায়। নিয়ম-নীতিকে শিকেয় তুলে দিয়ে কীভাবে বিতর্কিত জীবনকে সঙ্গে নিয়ে নিজের শর্তে এগিয়ে যেতে হয়, সেটা ওয়ার্নি ও তাঁর অনুজ সাইমন্ডস বারবার করে দেখিয়েছেন।
সব্যসাচী বাগচী: অদ্ভুত একটা মিল। বড্ড মন খারাপ করে দেওয়া মিল। গত ৪ মার্চ চলে অকালে চলে যান শেন ওয়ার্ন (Shane Warne)। সবার চোখে ধুলো দিয়ে বিদায় নেওয়ার আগে প্রবাদপ্রতিম লেগ স্পিনার রডনি মার্শের (Rod Marsh) আত্মাকে শান্তি জানিয়ে টুইট করেছিলেন। আর অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস (Andrew Symonds) তাঁর শেষ ইনস্টাগ্রাম পোস্ট করেছিলেন গত ৪ মার্চ। সেটা এক ও অদ্বিতীয় প্রিয় ওয়ার্নিকে শোকবার্তা জানিয়ে। এতটাই মিল ছিল দুই অভিন্ন হৃদয়ের বন্ধুর।
প্রিয় রডকে সম্মান জানিয়ে থাইল্যান্ডের সেই বিলাসবহুল ভিলায় বসে ওয়ার্ন টুইটারে লিখেছিলেন, 'রড মার্শের চলে যাওয়ার খবর শুনে মনটা বড্ড খারাপ হয়ে গেল। রড আমাদের খেলার এক প্রবাদপ্রতিম চরিত্র ছিলেন। ওঁকে দেখেই অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের অনেক ছেলে-মেয়ে হাতে ব্যাট-বল তুলে নিয়েছিল। ওঁর পরিবারের জন্য অনেক সমবেদনা। রিপ মেট।'
Sad to hear the news that Rod Marsh has passed. He was a legend of our great game & an inspiration to so many young boys & girls. Rod cared deeply about cricket & gave so much-especially to Australia & England players. Sending lots & lots of love to Ros & the family. RIP mate
Shane Warne (@ShaneWarne) March 4, 2022
ঠিক একদিন পরে এমনভাবেই ওয়ার্নিকে শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন সাইমন্ডস। অ্যাশেজ হাতে সতীর্থের সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে সাইমন্ডস লিখেছিলেন, 'আমি বিধ্বস্ত। মনে হচ্ছে এটা একটা দুঃস্বপ্ন! মাথা ঘোরালে তোমাকে আর দেখতে পাব না! ভাবতেই পারছি না! আমি আর কথা বলতে পারছি না। ওয়ার্নি তোমার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা রইল।'
ওয়ার্ন মাঠের বাইরে বিতর্কের 'মহাগুরু' হলে, সদ্য প্রয়াত সাইমন্ডসকে বিতর্কিত জগতের 'গুরু' বলাই যায়। নিয়ম-নীতিকে শিকেয় তুলে দিয়ে কীভাবে বিতর্কিত জীবনকে সঙ্গে নিয়ে নিজের শর্তে এগিয়ে যেতে হয়, সেটা ওয়ার্নি ও তাঁর অনুজ সাইমন্ডস বারবার করে দেখিয়েছেন। তফাৎ শুধু ওয়ার্ন ৫২ বছরে থমকে গিয়েছিলেন। সাইমন্ডস প্রয়াত হলেন মাত্র ৪৬ বছরে। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটের দুই বন্ধুর আকস্মিক মৃত্যুতে বিশ্ব যে শোকস্তব্ধ হবে সেটা তো বলাই বাহুল্য।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ওয়ার্নের অনেক পরে আবির্ভাব ঘটিয়েছিলেন সাইমন্ডস। খুব অল্প সময় দুজন ব্যাগি গ্রীন মাথায় চাপিয়ে মাঠে নামলেও, সাজঘরে ছিল ওঁদের অন্য দাপট। 'মহাগুরু' খেলা চলাকালীন সাইটস্ক্রিনের ধারে ধূমপান করে বিতর্কে জড়ালে, সাইমন্ডস আবার মত্ত অবস্থায় মাঠে নামার জন্য নির্বাসিত হয়েছিলেন। এত গেল খেলোয়াড় জীবনের কথা। এরপর মাইক হাতে ধরলেও দুই বন্ধুকে বিতর্ক ছাড়েনি।
নিজেদের বিতর্কিত স্বভাব বজায় রাখতে গিয়ে মার্নাস লাবুশানেকেও (Marnus Labuschagne) ছাড়েননি দুই প্রয়াত। নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন ওয়ার্ন এবং সাইমন্ডস। বিগ ব্যাশ লিগে একটি ম্যাচ চলাকালীন ওয়ার্ন অজি ওপেনার লাবুশানেকে বল করতে নিয়ে আসার কথা বলেছিলেন। সেই সময় সাইমন্ডস বলেছিলেন, "ওর এডিডি আছে।" ‘অ্যাটেনশন ডেফিসিট ডিসঅর্ডার'-কেই ছোট করে 'এডিডি' বলেছিলেন সাইমন্ডস। অর্থাৎ এমন কোনও ব্যক্তি, যিনি সব সময় অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান। এমন রোগেই আক্রান্ত নাকি লাবুশানে! মনে করতেন সাইমন্ডস।
সাইমন্ডস এমন বিতর্কিত মন্তব্য করার সময় জানতেন না যে তাঁদের কথা চ্যানেলে 'এয়ার' হচ্ছে। আর এরপরেই ঘটেছিল বিপত্তি। সেই বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হতেই ক্ষমা চাইতে বাধ্য হয়েছিল সেই চ্যানেল। টুইট করে তারা লেখে, 'আমাদের অনুষ্ঠান আগেই শুরু হয়ে যায়, সেই সময় এমন কিছু বক্তব্য সামনে আসে, সেটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। চ্যানেল এবং ধারাভাষ্যকারদের পক্ষ থেকে আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।'
তবে সবকিছু এখন অতীত। ব্যাগিগ্রীন ক্যাপ, যাবতীয় বিতর্ক এখন অতীত। কারণ দুজনেই এখন ইতিহাস। একজন চলে গিয়েছিলেন ৪ মার্চ ২০২২। আর একজনের নামের পাশে লেখা থাকবে মৃত্যু ১৪ মে ২০২২। তবে ওঁরা বিদায় নিলেও দুই বিতর্কিত নায়কের বন্ধুত্বের গল্পগুলো থেকেই যাবে। আগামি প্রজন্মের জন্য।