83, Yaspal Sharma: কেটে গেল ৩৯ বছর, যশকে নিয়ে এখনও আবেগপ্রবণ 'Kapil's Devils'

ক্রিকেট পন্ডিতদের মতে প্রায়ত অজিত ওয়াদেকরের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে ইংল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে জোড়া টেস্ট সিরিজ  জয় 'ভারত উদয়' হয়ে থাকলে, ১৯৮৩ সালের ২৫ জুন নির্ঘাৎ ভারতীয় ক্রিকেটের রেনেসাঁ ঘটেছিল।

Reported By: সব্যসাচী বাগচী | Updated By: Jun 25, 2022, 02:42 PM IST
83, Yaspal Sharma: কেটে গেল ৩৯ বছর, যশকে নিয়ে এখনও আবেগপ্রবণ 'Kapil's Devils'
সুনীল গাভাসকর, কপিল দেবদের সঙ্গে এ ভাবেই সময় কাটাতেন প্রয়াত যশপাল শর্মা। ফাইল চিত্র

সব্যসাচী বাগচী 

দেখতে দেখতে কেটে গেল ৩৯টা বছর। ভারতীয় ক্রিকেটের (Indian Cricket) নবজাগরণের ৩৯ বছর বলে কথা। ১৯৮৩ সালের প্রথম বিশ্বকাপ (1983 World Cup Final) জয় নিয়ে বাড়তি উন্মাদনা তো হবেই। তবে একইসঙ্গে রয়েছে বিষাদ। কারণ 'কপিলস ডেভিলস' (Kapils Devils) থেকে নিঃশব্দে সরে গিয়েছেন যশপাল শর্মা (Yashpal Sharma)। ওঁদের প্রিয় 'যশ' ইহলোক থেকে অতীত হয়ে গিয়েছেন। 

জীবনের সব ঘটনার কি 'হ্যাপি এন্ডিং' থাকে! অনেক ঘটনার শেষটা সুখের হয় না। তবে মানিয়ে নিতে হয়। মেনে নিতে হয়। 'কপিলস ডেভিলস'-এর ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা ঠিক তেমনই।  

Kapils Devils

কয়েক মাস আগে রণবীর সিংয়ের (Ranveer Singh) স্বপ্নের প্রজেক্ট 83 মুক্তি পেয়েছে। '৮৩ বিশ্বকাপ জয়ের আগে ঘাত-প্রতিঘাত তুলে ধরা হয়েছে সেলুলয়েডে। উত্তেজনায় ফুটছিলেন অধিনায়ক কপিল দেব (Kapil Dev) থেকে শুরু করে তাঁর দলের প্রতিটি সদস্য। তবে একইসঙ্গে এমন একটা বিশেষ দিনে ওঁদের মন বড্ড খারাপ। 

গর্ডন গ্রিনিজের অফ স্টাপ উপড়ে দেওয়া বলবিন্দর সিং সান্ধু এই সিনেমার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ছিলেন। বাইশ গজের যুদ্ধের চরিত্রগুলো সিনেমায় জীবন্ত করে তোলার জন্য রণবীর, তাহির রাজ ভাসিন, সাকিব সেলিম, যতীন সার্নাদের ক্রিকেটের পাঠ দিয়েছেন সেই ফাইনালে এই প্রাক্তন ডানহাতি জোরে বোলার। গত ১৩ জুলাই ওঁদের প্রিয় 'যশ' শরীর ছেড়ে দিয়েছেন। তবে ওঁদের স্মৃতিতে এখনও রয়ে গিয়েছেন। এবং থাকবেন। 

প্রয়াত মারকুটে ব্যাটারকে ‘রোমি’ বলে ডাকতেন বলবিন্দর। কিন্তু কপিল দেবের স্ত্রীর নামও যে রোমি! সেটার জন্য নিজেদের মধ্যে সমস্যা হয়নি? জি ২৪ ঘন্টাকে টেলিফোনে বলবিন্দর বললেন, "বিশ্বকাপ অভিযানের সময় যশ ও আমি একই ঘরে থাকতাম। তখনকার দিনে অধিনায়ক ছাড়া আর কারও আলাদা ঘর বরাদ্দ ছিল না। প্রায় দেড় মাসের বেশি সময় আমরা এক ছাদের তলায় কাটিয়েছিলাম। তাই মজা করে ওকে ‘রোমি’ বলে ডাকতাম। সেটা নিয়ে অবশ্য যশ খুব লজ্জা পেত।" 

Yashpal Sharma at Lords

ক্রিকেট পন্ডিতদের মতে প্রায়ত অজিত ওয়াদেকরের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে ইংল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে জোড়া টেস্ট সিরিজ  জয় 'ভারত উদয়' হয়ে থাকলে, ১৯৮৩ সালের ২৫ জুন নির্ঘাৎ ভারতীয় ক্রিকেটের রেনেসাঁ ঘটেছিল। সেই বিশ্বকাপ অভিযান, বাতিলের খাতায় থাকা একটা দলের বিশ্বজয়ী হয়ে ওঠার রোমহর্ষক গল্প, কপিল-সুনীল গাভাসকরের মানসিক টানাপোড়েন সবকিছুই উঠে এসেছে পরিচালক কবির খানের রিল লাইফের 83-তে। 

বলবিন্দর ফের যোগ করলেন, "গত ১৩ জুলাই খারাপ খবরটা পাওয়ার আগে শেষবার 83 নিয়ে একটা অনুষ্ঠানে দেখা হয়েছিল। সেখানেই ওর সঙ্গে শেষ আড্ডা দিয়েছিলাম। আমার বাড়তি ওজন, ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়ার জন্য কত বকাবকি করল। সেই মানুষটাই আজ আমাদের মধ্যে নেই! অবিশ্বাস্য!” 

Kapils Devils

সেই বিশ্বকাপে সেরা উইকেট কিপারের তকমা পেয়েছিলেন সঈদ কিরমানি। 'কিরি'-ও এখনও একই রকম শোকস্তব্ধ। বেঙ্গালুরু থেকে টেলিফোনে বলছিলেন, "যশ কালের নিয়মে শুধু শরীর ছেড়েছে। তবে আমাদের হৃদয়ে এখনও জীবন্ত। আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে অনেক ডাকাবুকো ক্রিকেটার দেখেছি। তাদের মধ্যে যশ অন্যতম। ওর মধ্যে অনেক সীমাবদ্ধতা থাকলেও সেটা মাঠে প্রকাশ পায়নি। এই কারণে সানি, ক্যাপস, জিমি ওকে সম্মান করত।" 

৬৬ বছরেও ফিটনেস ধরে রাখা যায়, সেটা সতীর্থদের দেখিয়েছিলেন ওঁদের যশ। তাই এহেন মানুষটার থেমে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না কিরমানি। যোগ করলেন, "83-র মাধ্যমে অনেকের কাছে আমাদের সেই অদেখা, অজানা কীর্তিগুলো সামনে এসেছে। সিনেমা দেখার সময় আমরা সবাই অতীতের সোনালী দিনগুলোতে ফিরে গিয়েছিলাম। ফের একবার অগণিত মানুষের ভালবাসা পেয়েছি। তবে শুধু কেঁদেছে যশের পরিবার।" 

লর্ডসের সেই মেগা ফাইনালের 'ম্যান অফ দ্য ম্যাচ' ছিলেন মহিন্দর অমরনাথ। তিনিও একই রকম ভারাক্রান্ত। কারণ, প্রয়াত যশপাল শুধু তাঁর জাতীয় দলের সতীর্থ ছিলেন না। দুজন একসঙ্গে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে উত্তরাঞ্চলেও খেলেছেন।  

ছেলেবেলার বন্ধু যশকে নিয়ে জিমি-র প্রতিক্রিয়া, "83 সিনেমা অনেক আগেই রিলিজ হয়ে যেত। কিন্তু গত বছর করোনার জন্য সবকিছু থমকে যায়। ভাইরাস দাপট না দেখালে যশ আরও একবার ঐতিহাসিক মুহূর্তের শরিক হতে পারত। আমাদের দলে যে লোকটা সবচেয়ে বেশি মজা করতে পারত, তাকে এত আগে চলে যেতে হল!" 

Yashpal Sharma and Jatin Sarna

৩৯টা বছর কেটে গেল। যশও চলে গিয়েছেন। তবুও ওঁদের বন্ধুত্ব এখনও অটুট। ২৫ জুন এলেই ওঁরা একে অন্যকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানাতেন। সবাই দেখা করতেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। তবে হোয়াটসঅ্যাপ যুগ শুরু হওয়ার পর থেকে বদলে যায় ব্যাপারটা। কয়েক বছর আগে গাভাসকার একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছিলেন। নাম দিয়েছিলেন ‘চ্যাম্পিয়নস ফর এভার’। সেখানেই এখন চলে নিয়মিত আড্ডা। রোজ মজার জোকস পোস্ট করার দায়িত্ব কিন্তু সানির। 

তবে কালের নিয়মে গত ১৩ জুলাই থেকে সেই গ্রুপের একজন ‘মিউট’ হয়ে গেলেন! রয়ে গেলেন বাকিরা। 

আরও পড়ুন: 1983 World Cup: ঠিক ৩৯ বছর আগে এই তারিখেই কপিল দেবের ভারত জিতেছিল বিশ্বকাপ

আরও পড়ুন: কোন ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ দাবি করলেন মনোজ তিওয়ারি? জেনে নিন

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 

.