২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের বাজেট আর পাঁচটা বাজেটের তুলনায় আলাদা, কিন্তু কেন?
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি পেশ হতে চলেছে ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের বাজেট। মনে করা হচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে দুটি বিষয়কে মাথায় রেখেই এবারের বাজেট সাজাবেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
নিজস্ব প্রতিবেদন : এবারের বাজেট আর পাঁচটা বাজেটের তুলনায় অনেকটাই আলাদা। কারণ, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে এবারের বাজেটই মোদী সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। ফলে জনমোহিনী পদক্ষেপ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা রয়েছে সরকারের। নোট বাতিল এবং জিএসটি লাগু হওয়ার পরও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমার তেমন কোনও লক্ষণ নেই। পাশাপাশি, গত পাঁচ বছরে সবচেয়ে দামি হয়েছে পেট্রল, ডিজেলের দাম। গ্যাসের দামও উর্ধ্বমুখী। ফলে এই পরিস্থিতিতে বাজেটে কিছুটা 'ড্যামেজ কন্টোলে'র চেষ্টা করতেই হবে। অন্যদিকে, দেশের অর্থনীতির স্বাস্থ্যোদ্ধারের দায়িত্বও একেবারে ঘাঁড় থেকে ঝেড়ে ফেলা সম্ভব নয়।
জাতীয় পরিসংখ্যান দফতর বা সিএসও-র তথ্য অনুসারে ডিসেম্বরে খুচরো পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার ৫.১ শতাংশ যা ১৭ মাসে সবচেয়ে বেশি। গতবছর এই হার ছিল ৭.৯ শতাংশ। ওই পরিসংখ্যানে আরও বলা হয়েছে সিএসও-র উত্পাদন বৃদ্ধির হার ৪.৬ শতাংশে নেমে আসার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সিএসও-র পূর্বাভাসে জানাচ্ছে, আর্থিক বৃদ্ধি ৬.৫ শতাংশ-এ নেমে আসার আশঙ্কা। যা গতবছর ছিল ৭.১ শতাংশ। অন্যদিকে, জুলাইয়ে জিএসটি চালু হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতি মাসেই কমেছে কর আদায়ের পরিমাণ। বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দামও ক্রমশ উর্ধ্বমুখী হয়েছে। তাই দেখা দিয়েছে আর্থিক ঘাটতি। ফলে, জিডিপি ৩.২ শতাংশ-এ ধরে রাখা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কৃষিক্ষেত্রেও ৩ বছরে কৃষির গড় বৃদ্ধির হার ১.৭ শতাংশ।
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি পেশ হতে চলেছে ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের বাজেট। মনে করা হচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে দুটি বিষয়কে মাথায় রেখেই এবারের বাজেট সাজাবেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
কোন কোন দিকে নজর থাকবে?
বিষয় ১- পরিকাঠামো উন্নয়ন থেকে পরিকল্পনা। নতুন ঘোষণার ক্ষেত্রে মাথায় রাখা হবে ২০১৯ নির্বাচন। সেই সঙ্গে মাথায় থাকবে মূল্যবৃদ্ধির কাঁটাও।
বিষয় ২- জিএসটি লাগু হওয়ার পর থেকে প্রতি মাসে কমেছে কর আদায়ের হার। এই পরিস্থিতিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর সংক্রান্ত ঘোষণার ক্ষেত্রেও মাথায় রাখতে হবে এক কর ব্যবস্থার কথা।
মনে করা হচ্ছে, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের বাজেটে রাজস্ব আদায়ের নয়া পন্থা ঘোষণা করা হতে পারে। ইতমধ্যেই অর্থমন্ত্রকের তরফে ইঙ্গিত মিলেছে এই বাজেটে করদাতাদের জন্য কিছু স্বস্তি মিলবে। তবে, যেভাবে মূল্যবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান বা কৃষিক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছে, তাতে 'ভাল বাজেট' করা কতটা সম্ভব সেটাই এখন জেটলির কাছে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ।