অলোক বর্মাকে ছুটিতে পাঠাতে এত তাড়াহুড়ো কেন, সিভিসিকে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের

সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে কেন্দ্রীয় সরকার। শীর্ষ আদালতের প্রশ্ন, অলোক বর্মা তো আর কয়েকমাস পরই অবসর নিতেন। তাহলে তাঁকে ছুটিতে পাঠানোর জন্য এত তাড়াহুড়ো কেন করা হল?

Updated By: Dec 6, 2018, 03:36 PM IST
অলোক বর্মাকে ছুটিতে পাঠাতে এত তাড়াহুড়ো কেন, সিভিসিকে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের

নিজস্ব প্রতিবেদন: সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে কেন্দ্রীয় সরকার। সিবিআই মামলায় কেন্দ্রের দিকে প্রশ্নবাণ ছুঁড়ে দিল শীর্ষ আদালত। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ডিরেক্টর অলোক বর্মাকে সিদ্ধান্ত গ্রহণে কেন তাড়াহুড়ো করা হল, এদিন মূলত সেই প্রশ্নই তুলেছে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর নেতৃত্বাধীন ডিভিসন বেঞ্চ।

সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন, অলোক বর্মা তো আর কয়েকমাস পরই অবসর নিতেন। তাহলে তাঁকে ছুটিতে পাঠানোর জন্য এত তাড়াহুড়ো কেন করা হল? প্রধান বিচারপতি শুনানি চলাকালীন জানান, সিবিআই ডিরেক্টরের পদে স্থায়িত্ব আনতেই তার মেয়াদ দু'বছর করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন: বুলন্দশহরে পুলিস আধিকারিক হত্যা তদন্তে বড় পদক্ষেপ পুলিসের, গ্রেফতার বজরং দল নেতা যোগেশ রাজ

নিজের আবেদনেও সিবিআইয়ের ডিরেক্টর অলোক বর্মাও একই প্রশ্ন তুলেছেন। আদালতের কাছে দেওয়া নিজের বয়ানে অলোক বর্মা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার শীর্ষপদের স্থায়িত্বের বিষয়টি একটি মামলায় ঠিক করে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তাই তাঁকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত আসলে সুপ্রিম কোর্টের অবমাননা বলেই অভিযোগ করেছেন অলোক বর্মা।

এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ প্রশ্ন তোলেন, যে নির্বাচক কমিটি সিবিআইয়ের ডিরেক্টর বেছে নেন, তাদের অনুমতি নিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল। এর পরই ডিভিসন বেঞ্চের আরও এক বিচারপতি সঞ্জয় কিষান কৌল সিভিসিকে প্রশ্ন করেন, যদি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়ে থাকে যে সিবিআইয়ের ডিরেক্টরকে সরাতে হবেই। সেই ক্ষেত্রে ওই নির্বাচক কমিটির সঙ্গে কি কথা বলা হয়েছিল?

আরও পড়ুন: মাথায় পাগড়ি; ভাটিন্ডায় দেখা মিলল কুখ্যাত জঙ্গি জাকির মুসার, পঞ্জাবে জারি হাই অ্যালার্ট

কেন্দ্রের কাছে সুপ্রিম কোর্ট জানতে চায়, জুলাই থেকে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। তাহলে ২৩ অক্টোবর এমন কী হল যে রাতারাতি অলোক বর্মাকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? এর জন্য তো আগেই নির্বাচক কমিটির পরামর্শ নেওয়া যেত!

আদালতে অলোক বর্মার আইনজীবী বলেন, দিল্লি স্পেশ্যাল পুলিশ এস্টাবলিস্টমেন্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী, সিবিআইয়ের ডিরেক্টরের অপসারণ বা বদলি দু'বছরের আগে করা যায় না। এই বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর তৈরি করা প্যানেলকে সেকথা কেন জানায়নি সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশন?

আরও পড়ুন: ফ্ল্যাট কিনতে চান, তাহলে আপনার জন্য রয়েছে সুখবর

তবে এদিনের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের কাছে পালটা একাধিক যুক্তিও পেশ করা হয়েছে সিভিসির তরফে। তাদের হয়ে সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা জানান, সেই সময় পরিস্থিতি এমন একটি জায়গায় পৌঁছেছিল যে অলোক বর্মাকে আর কাজ করতে দেওয়া যাচ্ছিল না। তাই তাঁকে ছুটিতে পাঠানোই ঠিক মনে হয়েছিল।

পাশাপাশি তাঁর যুক্তি, সিবিআইয়ের দুই শীর্ষ আধিকারিক অলোক বর্মা ও রাকেশ আস্থানার নিজেদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও অভিযান শুরু করে দিয়েছিলেন। মামলা, পালটা মামলাও দায়ের হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের পদে রাখা হলে তদন্তে প্রভাব পড়তে পারত। এই পরিস্থিতিতে সিভিসি কোনও পদক্ষেপ না করলে তাদের দিকেই অভিযোগের আঙুল উঠত।

আরও পড়ুন: ঘটনাস্থলে ছিলাম না, নিজেকে বেকসুর দাবি করে ভিডিওবার্তা মূল অভিযুক্ত যোগেশ রাজের

সিভিসির তরফে এদিন সুপ্রিম কোর্টে দাবি করা হয়, সিবিআইয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতেই এই সিদ্ধান্ত তাদের নিতে হয়েছিল। এটা করতে গিয়ে কখনোই সিভিসি নিজের এক্তিয়ারের বাইরে যায়নি। অলোক বর্মাকে স্থায়ীভাবে সরানো হয়নি। অলোক বর্মা ও রাকেশ আস্থানাকে তাদের দফতর থেকে ততদিন দূরে থাকতে বলা হয়েছে, যতদিন না এই মামলার ফয়সালা হচ্ছে। এটা এমনটা একদমই নয়, যে একটা তদন্ত হবে। তার পর সেটাই সঠিক বলে তুলে ধরা হবে।

.