মোদী বিদায়ের প্রস্তুতি শুরু? সপা-বসপা জোটের আসন ভাগাভাগি নিয়ে জোর জল্পনা!
মায়াবতীকে তুষ্ট রাখতে যদি ৪০টি আসনে প্রার্থী দিতে দেওয়া হয়, তাহলে সপাকে ৩১ থেকে ৩৪ আসন নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে।
নিজস্ব প্রতিবেদন : তিন মাসে তিনটি ধাক্কা। বিরোধী জোটের ধাক্কায় যোগীর রাজ্যে তিনমাসে তিনটি উপ-নির্বাচনে কুপোকাত বিজেপি। আর তাতেই ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে নতুন সমীকরণের জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। জোট জল্পনা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে ইতিমধ্যেই সেখানে আসন ভাগাভাগি নিয়ে অঙ্ক কষাও শুরু হয়ে গিয়েছে সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টির অন্দরে।
চলতি বছর মার্চে উপ-নির্বাচন হয় যোগীর লোকসভা কেন্দ্র গোরক্ষপুর ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রকাশ মৌর্যর কেন্দ্র ফুলপুরে। দুটি কেন্দ্রেই বড় ব্যবধানে হারে বিজেপি। তবু তারপরও মনে করা হয়েছিল, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের মানুষকে বিজেপিমুখী করে তুলতে পারবে যোগী-সহ গেরুয়া ব্রিগেড। ফলে, ২৮মে'র কৈরানা লোকসভা কেন্দ্র ও নুরপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচন তাঁদের কাছে ছিল অ্যাসিড টেস্ট। কিন্তু, তাতেও ডাহা ফেল বিজেপি। দুই আসনেই সপা-বসপা জোটের কাছে উল্লেখযোগ্য ব্যবধানে হেরেছে বিজেপি।
গত বছর মোদী ম্যাজিককে ভর করে উত্তরপ্রদেশে রেকর্ড আসনে জয়ী হয় বিজেপি। কিন্তু উপ-নির্বাচনে কার্যত উধাও হয়ে গিয়েছে সেই ম্যাজিক। এবার সেই সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে পাশা উল্টাতে চাইছে সপা-বসপা জুটি।
তবে, জল্পনা তৈরি হয়েছে আসন রফা নিয়ে। উত্তরপ্রদেশে ৮০টি লোকসভা আসন রয়েছে। সূত্রের খবর, ফুলপুর ও নুরপুরে দলিত ম্যাজিককে তুলে ধরে ৫০ শতাংশ আসনে তাদের প্রার্থী দেওয়ার দাবি জানাতে পারেন বসপা প্রধান মায়াবতী। অন্যদিকে এই জল্পনা সত্যি হলে, সপাকে জোটের স্বার্থে অনেকটাই 'স্বার্থত্যাগ' করতে হতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, কয়েকটি আসনে সপা-বসপা'র পাশাপাশি জোটসঙ্গী হতে পারে কংগ্রেস ও আরএলডিও। সেক্ষেত্রে মায়াবতীকে তুষ্ট রাখতে যদি ৪০টি আসনে প্রার্থী দিতে দেওয়া হয়, তাহলে সপাকে ৩১ থেকে ৩৪ আসন নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে।
আসন রফা সংক্রান্ত এই জল্পনা নিয়ে সপা প্রধানের ববলেন, ''আমরা বরাবরই অন্য দলের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এসেছি। আগামী দিনেও তাই করব। তবে, কারা সম্মান করতে জানে না তাও আপনারা ভালো করেই জানেন।'' ২০১৯-এর নির্বাচনে বিজেপিকে ঠেকাতে জোটের পক্ষে সওয়াল করলেও, মায়াবতীর একরোখা মনোভাবে যে অখিলেশ মোটেই খুশি নন তাও তাঁর এদিনের বক্তব্য থেকে পরিষ্কার হয়ে গেল বলে মনে করছেন একাংশের পর্যবেক্ষকরা।
সূত্রের খবর, ২০১৪-র নির্বাচনে যে কেন্দ্রগুলিতে সপা ও বসপা দ্বিতীয় স্থানে ছিল তার ভিত্তিতেই আসন রফা হবে বলে মৌখিক আলোচনায় স্থির হয়েছে। এক্ষেত্রে বিএসপি ৩৪টি আসনে নিজেদের প্রার্থী দিতে চেয়েছে। অন্যদিকে এই হিসেবে ৩১টি আসনে দাবিদার হতে পারবে সপা।
এদিকে, উপনির্বাচনে বিজেপিকে বেকায়দায় ফেলার পরই পরবর্তী কৌশল স্থির করে ফেলল উজ্জীবিত কংগ্রেস। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিসগঢ়ে বিধানসভা ভোটে কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না তারা। জি নিউজ সূত্রে খবর, তিনটি রাজ্যে বিধানসভা ভোটের মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টির সঙ্গে জোট করতে চলেছে কংগ্রেস। দলিত নেত্রীকে সঙ্গে নিয়ে দলিত শ্রেণির ভোট টানাই এখন লক্ষ্য রাহুল গান্ধীর দলের।
সূত্রের খবর, দলিত ভোট পকেটে পুরতে মায়াবতীর সঙ্গে রফা করছে কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশে বসপাকে ৩০টি আসন ছাড়তে পারে তারা। রাজস্থান ও ছত্তিসগঢ়ে এখনও পর্যন্ত আসন সমঝোতা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তই হয়নি। এদিকে মনে করা হচ্ছে, উত্তরপ্রদেশের বাইরে নিজের সংগঠন মজবুত করতে চাইছে বিএসপি। কর্ণাটকে জেডিএসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে একটি আসন পেয়েছে তারা। অন্যদিকে, মোদী-শাহকে রুখতে মরিয়া কংগ্রেসও। ফলে দু'পক্ষেরই গরজ রয়েছে। কর্ণাটকে কুমারস্বামীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে মায়া-সনিয়ার উষ্ণতাও কারও নজর এড়ায়নি। ফলে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে জোটের সলতে পাকানোর কাজ যে ঢিমেতালে ভালই এগোচ্ছে, তা স্পষ্ট।
আরও পড়ুন- যোগীকে কটাক্ষ করে ফেসবুকে কবিতা পোস্ট বিজেপি বিধায়কের