গভীর প্রেমে যৌন মিলন কখনও ধর্ষণ নয় : বম্বে হাইকোর্ট

সেই রাতটা যোগেশের সঙ্গে তাঁর বাড়িতেই কাটান অভিযোগকারিণী। সেই রাতে তাঁদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।

Updated By: Apr 2, 2018, 08:22 PM IST
গভীর প্রেমে যৌন মিলন কখনও ধর্ষণ নয় : বম্বে হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদন: গভীর প্রেমের সম্পর্ক যৌন মিলনে গড়ালে, 'ঘটনাক্রম বেঠিকভাবে সাজিয়ে' প্রেমিককে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না। সোমবার এ কথা জানাল বম্বে হাইকোর্টের গোয়া বেঞ্চ। প্রেমিক বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করায় ধর্ষণের অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক মহিলা। নিম্ন আদালত সেই মামলায় অভিযুক্ত প্রেমিককে ৭ বছরের জেল হেফাজত দেয় এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে। এরপরই বিচার চেয়ে হাইকোর্টে আসে ওই প্রেমিক। সেই মামলাতেই এদিন বম্বে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায় খারিজ করে দিল।

ঠিক কী ঘটেছিল?

গোয়ার এক ক্যাসিনোর রাঁধুনি যোগেশ পালেকরের সঙ্গে প্রেম হয় তাঁর এক সহকর্মীর। একদিন তাঁরা যোগেশের বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করবেন বলে ঠিক করেন। কিন্তু, যোগেশের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, তাঁর বাবা-মা সেদিন নিজেদের বাড়িতেই উপস্থিত নেই।

এরপর সেই রাতটা যোগেশের সঙ্গে তাঁর বাড়িতেই কাটান অভিযোগকারিণী। সেই রাতে তাঁদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। পরদিন, যোগেশ অভিযোগকারিণীকে বাড়িও পৌঁছে দেন। এরপরও যোগেশের বাড়িতেই বিভিন্ন সময়ে তাঁরা চার বার শারীরিকভাবে মিলিত হয়েছেন। এই সময় যোগেশকে বেশ কয়েকবার অর্থনৈতিকভাবে সাহায্যও করেন ওই যুবতী। এর কিছুদিন পর অভিযোগকারিণী নিম্ন বর্ণের পরিবার থেকে উঠে এসেছে বলে, তাঁকে বিয়ে করতে অসম্মত হন যোগেশ পালেকর। এই পরিস্থিতিতে যোগেশের প্রেমিকা বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করেন।

আরও পড়ুন- এবার গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থাই দেবে নতুন নম্বর প্লেট

পরে অবশ্য হঠাত্ যোগেশ মানসিক সমস্যায় ভোগেন এবং তাঁকে চিকিত্সা কেন্দ্রে পাঠানো হয়। সেই সময় আবার অভিযোগকারিণী 'ব্যক্তিগত আবেগের কারণে' হলফনামা জারি করে তাঁর সব অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন। এরপর অবশ্য ফের তিনি অভিযোগ দায়ের করেন এবং তার ভিত্তিতেই নিম্ন আদালত যোগেশকে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তি দেয়। কিন্তু বম্বে হাইকোর্ট মহিলার এই দাবি মানতে নারাজ।

আদালতের কী বক্তব্য?

আদালতের বক্তব্য, অভিযোগকারিণী নিজের সম্মতিতেই একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। তাছাড়া, যোগেশের আর্থিক অসঙ্গতির কথা জেনে তিনি বেশ কয়েকবার তাঁকে অর্থ সাহায্যও করেছিলেন। এমনকী, যোগেশ মানসিক সমস্যায় ভোগাকালীন সব অভিযোগও প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন তিনি। ফলে এর থেকেই স্পষ্ট যে, তাঁদের মধ্য 'গভীর প্রেমের সম্পর্ক' ছিল। তাছাড়া, যোগেশ যে কোনওভাবেই যুবতীকে মানসিক বা শারীরিকভাবে শোষণ করেননি, তা তাঁদের পরস্পরের প্রতি কোমল ব্যবহার এবং বারবার যৌন মিলন থেকেই স্পষ্ট। ফলে, বিয়ে করবে না বলার পরই যোগেশ ধর্ষণ করেছে এমন অভিযোগ অন্যায্য।

.