নারী কর্তৃত্বের বাঙালি সমাজে 'জয় মা দুর্গা'র সামনে ফিকে 'জয় শ্রী রাম': RSS
ভোটে টানা বহিরাগত বলে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বাঙালি জাতিসত্ত্বাও বিজেপির হারের কারণ বলে মত আরএসএস মুখপত্রের সম্পাদকীয়র।
নিজস্ব প্রতিবেদন: 'জয় শ্রী রাম' ধর্মীয় ধ্বনি না রাজনৈতিক স্লোগান? বিজেপির ছোট থেকে বড় নেতার সভা-সমাবেশে মুড়ি-মুড়কির মতো রাম নামে লাভের লাভ কিছুই হয়নি! বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে মেলেনি 'জয় শ্রী রাম'। বাংলায় হারের ময়নাতদন্তে এটাই বলছে আরএসএসের মুখপত্র 'অর্গানাইজার'-র (Organiser) সম্পাদকীয়।
মেরুকরণ সত্ত্বেও কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্পের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) ঢেলে ভোট দিয়েছেন মহিলা ভোটাররা। মহিলা নেত্রী হিসেবেও সুবিধা পেয়েছেন মমতা। বিভিন্ন সভায় 'জয় মা দুর্গা' ধ্বনি দিয়েছেন তিনি। তার পাশে পুরুষ ও বহিরাগত 'শ্রী রাম'-কে গ্রহণ করেননি মহিলারা।
সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, নিজেদের সংস্কৃতি, ভাষা ও ঐতিহ্য নিয়ে গর্বিত বাঙালি জাতি। কিন্তু বিজেপির ভোটের প্রচার ও কৌশল বাঙালিয়ানার সঙ্গে খাপ খায়নি। 'জয় মা দুর্গা'র মতো প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি 'জয় শ্রী রাম'। তার কারণ বাঙালি সমাজ মহিলা প্রভাবিত। উল্লেখ্য, ভোটের প্রচারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার বলেছিলেন,''বিজেপি নারী বিরোধী। সীতার নাম নিতে চায় না ওরা। চ্যালেঞ্জ করছি, ওদের দিয়ে জয় সিয়া রাম বলিয়ে ছাড়ব।''
ভোটে টানা বহিরাগত বলে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বাঙালি জাতিসত্ত্বাও বিজেপির হারের কারণ বলে মত আরএসএস মুখপত্রের সম্পাদকীয়র (Organiser)। লেখা হয়েছে, দিলীপ ঘোষের মতো নেতা গ্রামাঞ্চলে জনপ্রিয়তা থাকলেও শহরে তাঁর কোনও প্রভাব নেই। এর পাশাপাশি নরেন্দ্র ও অমিত শাহের মতো নেতারা জনপ্রিয় হলেও অবাঙালি। তার ফলে ভোট টানতে পারেননি তাঁর। বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের নেতারা যাওয়ায় অনেক ভোটারই মনে করেছিলেন, বিজেপি 'বহিরাগত'দের পার্টি। বাঙালি সত্ত্বা ও সংস্কৃতির ধারক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সফল হয়েছেন মমতা।
প্রসঙ্গত, 'জয় শ্রী রাম' ধর্মীয় ধ্বনি হলেও তাতে লেগেছে রাজনীতির রং। বিজেপি কর্মী-সমর্থক থেকে নেতাদের মুখে অহরহ শোনা যায়, 'জয় শ্রী রাম' ধ্বনি। ২৩ জানুয়ারি ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে নেতাজি জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বক্তব্য রাখতে উঠলে 'জয় শ্রী রাম' ধ্বনি দিতে থাকে বিজেপি কর্মীদের একাংশ। প্রতিবাদে ভাষণ না দিয়ে পোডিয়াম ছাড়েন মুখ্যমন্ত্রী। এর আগেও মমতার কনভয়ের সামনে রাম নাম করতে শোনা গিয়েছিল বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের। মমতার বিরূপ প্রতিক্রিয়াকে হাতিয়ার করে প্রচারে ঝড়ও তুলেছে গেরুয়া শিবির। মোদী থেকে শাহ সকলেই অভিযোগ করে আসছেন, রাম নামে আপত্তি মমতার।