রাহুলের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিলেন আরজেডি নেতা, ঘর নিয়ে ক্ষুব্ধ কপিলও
কংগ্রেসের ঘরেই এখন অসন্তোষ। শিবানন্দ সম্ভবত সেই আগুনে ঘি ঢেলেছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন: বিহার-ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করে বোঝা যাচ্ছে, কংগ্রেসের জন্যই বিহারে একটুর জন্য ক্ষমতা দখল করতে পারল না মহাজোট। এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না আরজেডি নেতারা। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দেগে প্রকাশ্যেই তাঁরা এ নিয়ে মন্তব্য করতে শুরু করে দিয়েছেন।
শুধু কংগ্রেস দলটি নয়, স্বয়ং রাহুল গান্ধীর দিকেও ছুটে যাচ্ছে অভিযোগের তীর। তাঁর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন আরজেডি নেতা শিবানন্দ তিওয়ারি। তিনি এমন অভিযোগও করছেন যে, বিহার নির্বাচনের সময় প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর বাড়িতে পিকনিকে ব্যস্ত ছিলেন রাহুল!
বিহারে ৭০টি আসনে লড়েছে কংগ্রেস৷ ২০টি আসনে জিততে পেরেছে। বিহারে একক বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে এসেছে আরজেডি। সব চেয়ে বড় কথা, যে বামেদের নিয়ে কোনও তরফেই কোনও আশা ছিল না, তারাও ভাল ফল করেছে! অথচ, কংগ্রেস কোনও লড়াইই দিল না।
শিবানন্দের অভিযোগ, বিহারে ভোটের প্রচারপর্বে তিনটি জনসভা করেন রাহুল গান্ধী। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী প্রচারে নামেননি। তার বদলে এমন নেতারা বিহারে জনসভা করেন জনমনে যাঁদের গ্রহণযোগ্যতাই তৈরি হয়নি। এর ফলেই বিহারভোটে কংগ্রেসের এই অবস্থা বলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। এর সঙ্গেই তিনি যোগ করেন-- বিহারভোটের প্রচারকালে সিমলায় প্রিয়াঙ্কার বাড়িতে পিকনিক করছিলেন রাহুল। যা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই গরম হয়ে উঠছে রাজনীতির অন্দরমহল।
কংগ্রেস নেতাদের একাংশ অবশ্য ড্যামেজ কন্ট্রোল শুরু করে দিয়েছে। তাঁরা নানারকম তত্ত্ব হাজির করছেন। তবে এ কথাও ঠিক, বিহার-সহ বিভিন্ন রাজ্যের উপনির্বাচনে ব্যর্থতার পরে কংগ্রেসের মধ্যেও ভিন্ন সুর মাথা চাড়া দিচ্ছে।
সেই ভিন্ন সুরের প্রথম উদগাতা কপিল সিবাল। দল যেভাবে চলছে তা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন এই প্রবীণ নেতা। তিনিও বলে দিয়েছেন, মানুষ আর কংগ্রেসকে বিকল্প হিসেবে ভাবছে না।
কয়েক মাস আগেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বদল চেয়ে কপিল এবং আরও জনাকুড়ি পুরনো নেতা চিঠি দিয়েছিলেন দলকে। কিন্তু ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সেই প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, দলের একাংশের রোষের মুখেও পড়েন তাঁরা।
এক সর্বভারতীয় ইংরেজি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কপিল জানিয়েছেন, বিহার নির্বাচনের আগে দেওয়াল লিখন পড়তে ব্যর্থ হয়েছে কংগ্রেস৷ বিহারে কংগ্রেস নয়, নীতীশ সরকারের বিকল্প হিসেবে মানুষ আরজেডি-কেই বেছেছিলেন।
সব মিলিয়ে কংগ্রেসের ঘরেই এখন অনেক দ্বন্দ্ব, অসন্তোষ। শিবানন্দ সম্ভবত সেই আগুনে ঘি ঢেলেছেন। এখন এটাই দেখার, বিহার থেকে কংগ্রেস কোনও শিক্ষা নেয় কিনা! আর রাহুলও তাঁর নড়বড়ে রাজনৈতিক অবস্থানকে জোরদার করার জন্য নতুন করে ঝাঁপান কিনা।
আরও পড়ুন: এই নিয়ে চতুর্থবার! আজ শপথ গ্রহণ নীতীশ কুমারের, অনুষ্ঠান বয়কটের ডাক বিরোধীদের