পাঁচজন নেতামন্ত্রী রয়েছেন CBI-এর স্ক্যানারে, লক্ষ্যস্থির করে দিয়েছে খোদ প্রধানমন্ত্রীর দফতর
চিটফান্ড কাণ্ডে তৃণমূলের কোন কোন নেতার বিরুদ্ধে তদন্ত করতে হবে? তা স্থির করে দিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর দফতর। দেড় বছরের পুরনো এক চিঠিতে প্রকাশ্যে এল এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। CBI ডিরেক্টরকে চিঠিটি লেখেন PMO-র আন্ডার সেক্রেটারি অম্বুজ শর্মা।
ওয়েব ডেস্ক: চিটফান্ড কাণ্ডে তৃণমূলের কোন কোন নেতার বিরুদ্ধে তদন্ত করতে হবে? তা স্থির করে দিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর দফতর। দেড় বছরের পুরনো এক চিঠিতে প্রকাশ্যে এল এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। CBI ডিরেক্টরকে চিঠিটি লেখেন PMO-র আন্ডার সেক্রেটারি অম্বুজ শর্মা।
একজন নন। দুজন নন। পাঁচ পাঁচজন নেতামন্ত্রী রয়েছেন CBI-এর স্ক্যানারে। লক্ষ্যস্থির করে দিয়েছে খোদ প্রধানমন্ত্রীর দফতর। প্রায় দেড় বছর আগেই তৃণমূলের এই পাঁচ নেতামন্ত্রীকে নিশানা করে প্রধানমন্ত্রীর দফতর।
আরও পড়ুন প্রভুর জীবন বাঁচাল পোষ্য, সত্যিই মানুষের প্রিয়বন্ধু কুকুর
২০১৫ সালের ২১শে অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে চিঠি যায় CBI ডিরেক্টরের কাছে। ‘পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন চিটফান্ড কোম্পানির কার্যকলাপ নিয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এমন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে বিস্তর অভিযোগ জমা পড়েছে। রোজভ্যালি, প্রয়াগ, আইকোর, সন্মার্গ সহ ২১৬ টি চিটফান্ড কোম্পানি পশ্চিমবঙ্গে ব্যবসা করছে। তাদের সঙ্গে বহু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব রয়েছেন যাঁরা এই কোম্পানিগুলিকে বিভিন্ন ঝামেলা-ঝঞ্ঝাট থেকে বাঁচান।
আমি জানতে পেরেছি সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী, সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী মলয় ঘটক, মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু এবং মন্ত্রী মদন মিত্র সেই রাজনৈতিক ব্যক্তিদের অন্যতম যাঁরা চিটফান্ড কোম্পানিগুলিকে বাঁচাচ্ছেন। শুধু তাই নয় নিজেদের রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাঁরা চিটফান্ডগুলির বিরুদ্ধে মামলা বন্ধ করেছেন।
আরও পড়ুন সেনা দিবসের সমাবেশে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত
মূলত সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর সামাজিক মর্যাদা, বংশ পরিচয়, পরিবার ও তাঁর আর্থিক প্রতিপত্তি নিয়ে জানতে চাই। আমাকে সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর বিষয়ে সমস্ত তথ্য জানতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।‘
তমলুকের সাংসদ ওপর প্রধানমন্ত্রীর দফতরের যে বিশেষ নজর রয়েছে তা চিঠিতেই স্পষ্ট। এই নির্দেশ পেয়েই CBI-এর কলকাতা দফতরে চিঠি পাঠায় CBI-এর স্পেশাল ডিরেক্টর রূপক দত্ত। ২০১৫ সালের ২৫শে অগাস্ট পাঠানো চিঠিতে লেখা হয়, ‘আমাদের মূলত পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে গোপনে, গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রোজভ্যালি, প্রয়াগ, আইকোর, সন্মার্গ সহ বিভিন্ন চিটফান্ডে তাঁর যোগসূত্র নিয়ে তদন্ত করতে হবে। সারদা রিয়েলটি লিমিটেডেও তাঁর যোগসূত্র মিলেছে।
সারদা রিয়েলটি লিমিটেডের মামলায় সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর ভূমিকা খতিয়ে দেখার নির্দেশ আমাদের দেওয়া হয়েছে। তাঁর নথিগুলি নিয়েও তদন্ত প্রয়োজন। সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর বংশ পরিচয়, পরিবার ও তাঁর আর্থিক প্রতিপত্তি নিয়েও তদন্ত করতে আমাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নিম্নলিখিত রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে কোনও চিটফান্ডের যোগসূত্র রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখুন। তাঁরা হলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী মলয় ঘটক, মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু এবং মন্ত্রী মদন মিত্র।‘
আরও পড়ুন জয়প্রকাশ মজুমদারের মামলায় একাধিক বিষয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে
এই দুটি চিঠি সামনে আসার পর স্বাভাবিকভাবেই সোচ্চার হয়েছে বিরোধীরা। এই দুই চিঠিতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগই প্রাসঙ্গিকতা পাচ্ছে বলে দাবি উঠছে। রোজভ্যালি কাণ্ডে কয়েকদিন আগেই গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূলের দুই সাংসদ তাপস পাল ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। মজার কথা হচ্ছে, তাঁদের কোনও উল্লেখ PMO-র চিঠিতে নেই।