ইউপিএ থেকে সমর্থন প্রত্যাহার তৃণমূল কংগ্রেসের
ইউপিএ সরকার থকে সমর্থন প্রত্যাহার করল তৃণমূল। দীর্ঘ ৩ ঘণ্টার বৈঠক শেষে কলকাতায় মঙ্গলবার ইউপিএ থকে সরে আসার সিদ্ধান্তই নিল ইউপিএর বৃহত্তম জোট শরিক তৃণমূল কংগ্রেস। ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি, রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি কমানো ও খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদেই চরম পদক্ষেপের পথে হাঁটলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ইউপিএ সরকার থকে সমর্থন প্রত্যাহার করল তৃণমূল। দীর্ঘ ৩ ঘণ্টার বৈঠক শেষে কলকাতায় মঙ্গলবার ইউপিএ থকে সরে আসার সিদ্ধান্তই নিল ইউপিএর দ্বিতীয় বৃহত্তম জোট শরিক তৃণমূল কংগ্রেস। ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি, রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি কমানো ও খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদেই চরম পদক্ষেপের পথে হাঁটলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দ্বিতীয় ইউপিএ সরকার থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে শুক্রবার দিল্লিতে জানিয়ে দেবেন বলে এদিন জানান মমতা। ওই দিনই তৃণমূলের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা পদত্যাগ পত্র জমা দেবেন প্রধানমন্ত্রীকে। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, দুঃখজনক হলেও 'কঠোর' সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। জোট জটিলতা কাটাতে ৭২ ঘণ্টা সময় দেওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্রের তরফে কোনও আশু সমাধানসূত্র বেরিয়ে না আসায় সমর্থন তুলে নিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি। মমতা বলেন, "ইউপিএ চায় না আমরা সরকারে থাকি। তৃণুমূল সরকারের শরিক থাকলে জনবিরোধী সিদ্ধান্তের পক্ষে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল।"
সমর্থন প্রত্যাহার করলেও কেন্দ্রের কাছে বেশ কিছু শর্ত রেখেছে তৃণমূল। তিনি দাবি করেছেন, ভর্তুকি প্রাপ্ত রান্নার গ্যাসের সংখ্যা পরিবার পিছু ১২ টা করা হোক। সেইসঙ্গে, খুচরো ব্যবসা, অসামরিক বিমান পরিবহণ শিল্প ও তথ্য সম্প্রচার ক্ষেত্রে বিদেশি বনিয়োগের সিদ্ধান্তও প্রত্যাহার করুক কেন্দ্র। পাশাপাশি ডিজেলের দাম ৩ টাকা থেকে সাড়ে ৩ টাকা বারিয়ে জনসাধারণের ওপর থেকে চাপ খানিকটা লাঘব করার সুপারিশও করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। শর্তসাপেক্ষে ইউপিএর জন্য নতুন করে সমস্যা সমাধানের রাস্তাও খোলা রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
কিন্তু কোথায় দাঁড়িয়ে সংসদের সমীকরণ? কেন্দ্রে ২৭২ টি আসন রয়েছে ইউপিএর দখলে। ১৯ জন সাংসদ নিয়ে দেশের বৃহত্তম জোটের অন্যতম শরিক তৃণমূল বেরিয়ে এলে অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে ইউপিএ। সেক্ষেত্রে সরকার বাঁচাতে মুলায়ম সিং-এর দারস্থ হতে পারেন মনমোহন সিং। সমাজবাদী পার্টির সাংসদ সংখ্যা ২২। যদিও সপা এফডিআই ইস্যুতে কেন্দ্রকে সমর্থন করার কোনও ইঙ্গিতই দেয়নি। ইতিমধ্যেই মুলায়ম পুত্র অখিলেশ যাদব উত্তর প্রদেশে খুচরো ব্যবসায়ে বিদেশি বিনিয়োগ হতে দেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন । সেক্ষেত্রে দিল্লির রাজনীতির স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে মায়াবতীর ২১ জন সাংসদের সমর্থন করার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট মহল।
তৃণমূলের সরে আসার সিদ্ধান্তে স্বভাবতই অস্বস্তিতে কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পেশ করা দাবিগুলি নিয়ে দলীয় শীর্ষ নেতৃত্ব আলচনা করবে বলে জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা জনার্দন দ্বিবেদী। তৃণমূলের এই সিদ্ধান্তকে ইউপিএর পতনের সুচনা বলে ব্যক্ষা করেছেন বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ। এখন দেখার মমতার শর্তের সামনে মাথা নত করে কি না মনমোহন সরকার। ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসকে ইউপিএর 'গুরুত্বপূর্ণ শরিক' বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী সলমান খুরশিদ। মমতা কি সমর্থন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বজায় রাখার অবস্থানেই থাকবেন? নাকি কংগ্রেস অর্থনৈতিক সংস্কারের পথ থেকে সরে এলে বিভেদ ভুলে জোট ধর্ম বজায় রাখে তৃণমূল। সব প্রশ্নের উত্তর পেতে শুক্রবার পর্যন্ত অপেক্ষায় গোটা দেশ।