'বই-চিত্রে'র বিয়ে, সমাজকে শিক্ষা দিতে 'পরীক্ষার্থী' আমন্ত্রিতরাও
উপহার ছাড়া প্রবেশ নিষেধ। পাত্র-পাত্রী চেয়েছিলেন বিয়ে বাড়িতে যাতে সবাই উপহার নিয়ে আসে।
!['বই-চিত্রে'র বিয়ে, সমাজকে শিক্ষা দিতে 'পরীক্ষার্থী' আমন্ত্রিতরাও 'বই-চিত্রে'র বিয়ে, সমাজকে শিক্ষা দিতে 'পরীক্ষার্থী' আমন্ত্রিতরাও](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2018/06/13/124334-boicvr.jpg)
নিজস্ব প্রতিবেদন: 'পত্র দ্বারা নিমন্ত্রণের ত্রুটি মার্জনা' করার অনুরোধ করে শেষ হওয়া বিয়ের কার্ডে "উপহারের পরিবর্তে আশীর্বাদ প্রার্থনীয়" লেখা থাকতে দেখা যায়। কিন্তু, অনেক ক্ষেত্রেই আমন্ত্রিতরা সেই অনুরোধ উপেক্ষা করে উপহার সামগ্রী বা নিদেন পক্ষে ফুলের তোড়া হাতে নবদম্পতিকে অভিনন্দন জানাতে হাজির হন। কিন্তু, এমনটা একেবারেই চাননি অমর-রানি। বরং তাঁরা চেয়েছিলেন বিয়ে বাড়িতে যাতে সবাই উপহার নিয়ে তবেই আসে। একরম বলা যায়, সকলকেই উপহার নিয়ে আসতে অনুরোধও করেছিলেন এই নবদম্পতি। আমন্ত্রিতরাও কথা রেখেছেন। বিয়ের অনুষ্ঠানে প্রত্যেকে হাতে করে এনেছেন যুগলের সেই কাঙ্খিত উপহার। বই। বা বলা ভাল প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষার বই।
হঠাত্ এমন উপহার কেন?
মহারাষ্ট্রের যুবক অমর দীর্ঘ আড়াই দশক ধরে সমাজসেবার সঙ্গে জড়িত। বর্তমানে 'যুব চেতনা' নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান চালায় সে। এই প্রতিষ্ঠানটি মূলত পিছিয়ে পড়া ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষায় সফল হয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রশিক্ষণ দেয়। এ হেন অমরের সঙ্গেই ঘর বাঁধার সিদ্ধান্ত নেন পুণা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপিকা রানি কলমকার। এরপরই তাঁরা ঠিক করেন, বিয়েকে স্মরণীয় করে রাখতে হবে। আর সমাজ সেবার আদর্শ তো ছিলই। ফলে বিয়ের উপহার হিসাবে প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষার বই-এর ভাবনা মাথায় আসতেই তাতে সিলমোহর দিয়ে দেন দুজনেই।
এই দম্পতির মতে, মানুষ যে ফুলের তোড়া উপহার দেয় তা রাত পোহালেই জঞ্জাল। অথচ এগুলির দামও বেশ চড়া। ফলে এর বদলে কাজের বই উপহার পেলে, অনেকগুলি ছেলেমেয়ের ভবিষ্যত আলো ও সুগন্ধে ভরে যাবে।
বৈভবের বিয়ে। উপহার পাওয়া বই-এর মাঝে নবদম্পতি।
কিন্তু, কেমন সাড়া পেলেন এই দম্পতি?
অমর-রানি জানাচ্ছেন, তারা কাগজের কার্ড বানিয়েও অর্থ অপচয় করেননি। বরং বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়দের থেকে বই উপহার চেয়ে একটি আন্তরিক আমন্ত্রণ বার্তা পাঠিয়েছেন হোয়াটসঅ্যাপে। আর এর ফলে হয়েছে আরেক মজার কাণ্ড। এমন অভিনব আমন্ত্রণ বার্তা রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল ই-দুনিয়ায়। ফলে, দম্পতির হিসাবের বাইরে (আসলে তাঁদের ইচ্ছাকে কুর্নিশ জানিয়ে) আরও প্রচুর মানুষ উপস্থিত হন এই বিবাহ অনুষ্ঠানে। তবে, হ্যাঁ সকলের হাতেই ছিল বই। অতি শীঘ্র একটি গ্রন্থাগারও চালু করতে চলেছেন তাঁরা। সেখানেই স্থান পাবে এইসব বই।
বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয় স্বজনের এমন অকুণ্ঠ প্রশ্রয়ে ভীষণ খুশি এই নবদম্পতি। দুই জীবনের মিলন যদি আরও অনেক স্বপ্ন দেখা চোখকে এমনভাবে সাফল্যের সঙ্গে মিলিয়ে দিতে পারে, তাহলে কি খুশি না হয়ে থাকা যায়? কি বলেন...