অসমে অস্ত্রসমর্পণ ১৮৫৫ জঙ্গির

প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে একটা ধোঁয়াশা থেকেই গেল! কিন্তু পালানিয়াপ্পন চিদাম্বরমের এদিনের অসম সফর যে উত্তর-পূর্ব ভারতে জঙ্গি সমস্যা নিরসনের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্ব পদক্ষেপ, তা এক বাক্যে স্বীকার করে নিচ্ছেন বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের নেতারাও। অসম সরকারের তরফে এদিন রাজ্যে সক্রিয় গোটা দশেক সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের ১৮৫৫ জন কট্টর জঙ্গির আত্মসমর্পণের কথা জানান হলেও জমা পড়া অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদের তালিকা দেখে বিশেষজ্ঞদের অনুমান, এদের মধ্যে অনেকেই  জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির সহযোগী গণসংগঠনের মামুলি সদস্য।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশাপাশি অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ, রাজ্য পুলিসের ডিজি জয়ন্ত নারায়ণ চৌধুরি, ভারতীয় সেনা বাহিনীর ৩ এবং ৪ নং কোরের জিওসি-সহ শীর্ষস্থানীয় প্রশাসনিক আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন মঙ্গলবারের অস্ত্রসমর্পণ অনুষ্ঠানে। আলফা এবং এনডিএফবি-র একটি গোষ্ঠী অস্ত্র ছেড়ে শান্তি আলোচনায় অংশগ্রহণের পর এদিনের অস্ত্রসমর্পণ অনুষ্ঠান ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় শান্তি ফেরানোর পথে নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

গুয়াহাটিতে আয়োজিত সরকারি আত্মসমর্পণ-মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে চিদাম্বরম অসমের জঙ্গি নেতাদের এই 'ফেয়ারওয়েল টু আর্মস'-কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, হিংসাদীর্ণ উত্তর-পূর্ব ভারতে স্থায়ী শান্তির পথ প্রশস্ত করার ক্ষেত্রে এদিনের পদক্ষেপ একটি মাইলস্টোন হিসেবে চিহ্নিত থাকবে। অস্ত্র সমর্পণকারী সমস্ত জঙ্গিদের অসম এবং কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে দেশের অন্যান্য নাগরিকদের সমান মর্যাদা প্রদান করা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
মঙ্গলবার অস্ত্রসমর্পণ করে মূল স্রোতে সামিল হওয়া জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির মধ্যে রয়েছে ৫টি আদিবাসী সংগঠন-আদিবাসী পিপলস আর্মি, অল আদিবাসী ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি, সাঁওতাল ট্রাইবাল ফোর্স, বীরসা কম্যান্ডো ফোর্স, আদিবাসী কোবরা মিলিটারি অফ অসম-এর সদস্যরা। তা ছাড়া উত্তর-পূর্ব ভারতের জনজাতি গোষ্ঠীগুলির পৃথক জাতিসত্ত্বার দাবিতে সশস্ত্র আন্দোলন চালিয়ে আসা কুকি লিবারেশন আর্মি, কুকি লিবারেশন অর্গানাইজেশন, হমর পিপল'স কনভেনশন, ইউনাইটেড কুকিগাম ডিফেন্স আর্মি, কুকি রেভলিউশনারি আর্মি-র মতো সংগঠনের জঙ্গিরাও রয়েছে এই তালিকায়।