“লকডাউনে রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় গ্যাস লিক,” বিস্ফোরক দাবি বিশাখাপত্তনম পুলিসের
প্রশাসনের দাবি, ট্যাঙ্কের রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই ছড়িয়েছে বিষাক্ত স্টাইরিন গ্যাস।
নিজস্ব প্রতিবেদন: অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের রাসায়নিক কারখানা থেকে বিষাক্ত গ্যাস লিকের ঘটনায় এলজি পলিমার ইন্ডিয়া সংস্থার উপরেই গাফিলতির অভিযোগ তুলছে পুলিস। প্রশাসনের দাবি, বন্ধ থাকাকালীন ট্যাঙ্কের রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি। এরপর হঠাত্ কারখানা চালু করতেই তাই ছড়িয়েছে বিষাক্ত স্টাইরিন গ্যাস। আর তার ফলেই মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। অসুস্থ এলাকার ৫০০০ জনেরও বেশি।
কী বলছেন কর্তৃপক্ষ: কারখানাটির মূল সংস্থা দক্ষিণ কোরিয়ার এলজি কেম। পুলিসের এই দাবির প্রেক্ষিতে তারা বিবৃতি দিয়ে জানায়, “লকডাউনের কারণে বন্ধ ছিল কারখানা। তবে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হত।” এমন ঘটনার পেছনে কারণ খুঁজতে তাঁরা তদন্ত শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন সংস্থার কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যাটারি ও রাসায়নিক প্রস্তুতকারক সংস্থা এলজি কেমের এটি পলিমার কারখানা ছিল।
পুলিসের দাবি: কর্তৃপক্ষ রক্ষণাবেক্ষণের দাবি তুললেও পুলিসের অভিযোগ, “গত মার্চে লকডাউন শুরুর পর থেকে বন্ধ ট্যাঙ্কগুলি। কোনওরকম রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছিল না।” বিশাখাপত্তনমের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অব পুলিশ স্বরূপা রানি এদিন কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবের অভিযোগ করেন।
কীভাবে ঘটল: রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই বিষাক্ত স্টাইরিন গ্যাস বুধবার রাত ২.৩০ নাগাদ লিক হতে শুরু করে বলে জানিয়েছে পুলিস। উদ্ধারকারীরা খবর পেয়ে পৌঁছতেই রাস্তাঘাটে স্থানীয়দের জ্ঞানহীন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।
কতটা বিষাক্ত: স্টাইরিনের কেমিক্যাল নাম ইথাইল বেঞ্জাইন। এটি একটি সিন্থেটিক, বর্ণহীন তরল। সাধারণত পলিমার দ্রব্য তৈরিতে এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অল্প পরিমাণ এর গ্যাস নাকে গেলে মাথা ঘোরা, বমিভাব আসতে পারে। বেশি পরিমাণে শরীরে শ্বাসের মাধ্যমে প্রবেশ করলে মৃত্যু হতে পারে।
অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের বক্তব্য: অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারি তরফে জানানো হয় বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর হঠাত্ প্ল্যান্ট চালু করতে গিয়েই দুর্ঘটনা ঘটে। মাঝরাতে না করে এই ধরণের কাজ দিনের বেলায় করা হলে সেক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ঘটলে স্থানীয়দের দ্রুত সরিয়ে আনা ও সজাগ করা যেত। তবে এই ঘটনার থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামিদিনে রাজ্যে সমস্ত কারখানা আবার চালু হওয়ার সময়ে সতর্কতা বিধি মেনে চলার বিষয়ে জোর দিতে হবে বলে জানানো হয় মুখ্যমন্ত্রীর তরফে।
কেন্দ্র : বিশাখাপত্তনমে গ্যাস লিক কাণ্ডের পরেই জরুরি বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি। এছাড়া অন্ধ্রপ্রদেশের সরকারকে এ বিষয়ে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেন তিনি।
আরও পড়ুন: রাসায়নিক কারখানায় বিষাক্ত গ্যাস লিক, অসুস্থ হাজার, মৃত আট