হতাশা থেকেই রাজ্যপালের বক্তব্যে বাধা দিয়েছেন ইরফান হাবিব, কটাক্ষ বিজেপির

বক্তব্যে বাধা পেয়ে রাজ্যপাল বলেন ---"মৌলানা আজাদ বলেছিলেন, দেশভাগ নোংরা সাফ করে দিয়েছে। কিন্তু পিছনে কিছু গর্ত রেখে গিয়েছে। জল জমতে জমতে সেই গর্তগুলো থেকে এখন দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে।''

Updated By: Dec 29, 2019, 07:44 PM IST
হতাশা থেকেই রাজ্যপালের বক্তব্যে বাধা দিয়েছেন ইরফান হাবিব, কটাক্ষ বিজেপির
ছবি-টুইটার

নিজস্ব প্রতিবেদন: কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপাল বনাম ইরফান হাবিব বিতর্কে দুভাগ দুই শিবির। অশীতিপর ইতিহাসবিদকে হেনস্থার অভিযোগে সরব বিরোধীরা। বিজেপির দাবি, হতাশা থেকেই রাজ্যপালের বক্তব্যে বাধা হাবিবের। অমর্ত্য সেন, অভিজিত্‍ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, রামচন্দ্র গুহ, ইরফান হাবিব। বিশিষ্টদের সঙ্গে সংঘাত চলছেই। বছরের শেষ লগ্নেও সেই তিক্ততা বজায় রইল।

কেরলার কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮০তম জাতীয় ইতিহাস কংগ্রেস। সেখানে বিতর্কের কেন্দ্রে এই ছবি। রাজ্যপালের অভিযোগ, ইরফান হাবিব তাঁর বক্তব্যে বাধা দিয়েছেন। বিরোধী-সহ বিশিষ্টদের পাল্টা অভিযোগ, রাজ্যপালের বক্তব্যের বিরোধিতা করায় ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে হেনস্থা করা হয়েছে অশীতিপর ইতিহাসবিদকে।

ইতিহাস কংগ্রেসে উপস্থিত শিক্ষাবিদ ও বিশিষ্টদের একাংশের অভিযোগ, "অরাজনৈতিক মঞ্চে রাজনৈতিক বক্তৃতা করছিলেন রাজ্যপাল। নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের পক্ষে বলতে গিয়ে অপ্রয়োজনে মহাত্মা গান্ধী, মৌলানা আবুল কালাম আজাদের মতো নেতাদের নাম নিচ্ছিলেন।'' মঞ্চে অতিথি আসন থেকে আপত্তি উঠতেই রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান বলেন, "আপনারা এজেন্ডা নিয়ে এসেছেন। গলা চড়িয়ে আমাকে দাবাতে পারবেন না।'' পাল্টা জবাব ঠিকরে আসে অতিথি আসন থেকে। "মিস্টার খানের নির্দিষ্ট এজেন্ডা রয়েছে। ভারত কিন্তু পাকিস্তান নয়।''

বক্তব্যে বাধা পেয়ে রাজ্যপাল বলেন ---"মৌলানা আজাদ বলেছিলেন, দেশভাগ নোংরা সাফ করে দিয়েছে। কিন্তু পিছনে কিছু গর্ত রেখে গিয়েছে। জল জমতে জমতে সেই গর্তগুলো থেকে এখন দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে।'' একথা শুনে অতিথি আসন থেকে কয়েকজন বলেন "রাজ্যপাল মহাশয় দুর্গন্ধ আপনার থেকে বেরোচ্ছে।'' রাজ্যপালের দাবি, ইতিহাস কংগ্রেসের মঞ্চে তাঁর আগের বক্তারা নাগরিকত্ব নীতি নিয়ে কিছু পয়েন্ট তুলেছিলেন। সংবিধানের মর্যাদা রক্ষার স্বার্থে রাজ্যপাল হিসেবে তার জবাব দিতে যান তিনি।

আরও পড়ুন- নাগরিকপঞ্জী একেবারেই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, সাফ জানালেন বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রধান

ইরফান হাবিব আসন ছেড়ে উঠে এসে তাঁর বক্তব্যে বাধা দেন। রাজ্যপালের অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করে দাবি, "ইরফান হাবিব মঞ্চে চিত্‍কার করে বলেছেন, রাজ্যপালের উচিত আজাদের নাম না নিয়ে গডসেকে উদ্ধৃত করা। তিনি রাজ্যপালের ADC ও নিরাপত্তারক্ষীকে ধাক্কা দিয়েছেন।''

হাবিবের মতো ব্যক্তিত্ব ও অশীতিপর মানুষের পক্ষে কীভাবে দু-দুজনকে ধাক্কা মারা সম্ভব, এই প্রশ্ন তুলে সরব হন অনেকে। একটি সূত্রে দাবি, রাজ্যপালকে বক্তৃতা শেষ করতে বলার জন্য সচিবের সঙ্গে কথা বলতে যান হাবিব। তখন তাঁকে ধাক্কা দিয়ে সরানো হয়। আবার ইতিহাস কংগ্রেসে হাজির সিপিএম সাংসদ কেকে রাগেশের দাবি, "রাজ্যপাল দেশভাগের রাজনীতি নিয়ে বলছিলেন তবে সাংবিধানিক পদাধিকারী হিসেবে নয়। তিনি বক্তব্য শুরু করেছিলেন আমাকে অ্যাড্রেস করে। বলেছিলেন, মিস্টার MP এটা আপনার জন্য...। ইরফান হাবিব হয়তো বেশি সরব ছিলেন কিন্তু তিনি কাউকে ধাক্কা মারেননি।''

.