কর্ণাটকে কুপোকাত বিজেপি, পুর নির্বাচনে কংগ্রেস-জেডিএস ঝড়
২৭০৯টি আসনের মধ্যে ২৬২৮ আসনে ভোট গণনা ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। এর মধ্যে কংগ্রেস ও জেডিএস ইতিমধ্যে জিতে নিয়েছে যথাক্রমে ৯৮৮ এবং ৩৭৮টি আসন। অন্যদিকে, বিজেপি ৯২৯টি আসন দখল করতে পেরেছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: সংঘবদ্ধ বিরোধীদের সামনে ফের ধাক্কা খেল পদ্ম ব্রিগেড। কর্ণাটক পুর নির্বাচনে কংগ্রেস ও জনতা দল সেকুলার (জেডিএস)-এর যুগ্ম প্রতিরোধের মুখে রীতিমতো বেকায় দায় মোদী-শাহর 'অশ্বমেধের ঘোড়া'। ২৭০৯টি আসনের মধ্যে ২৬২৮ আসনে ভোট গণনা ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। এই নির্বাচনে পৃথকভাবে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কংগ্রেস ও জেডিএস। পরবর্তীকালে পরিস্থিতির প্রয়োজনে বিজেপি-কে রুখতে যে একসঙ্গে হাত মিলিয়ে বোর্ড গঠন করা হবে সে কথাও আগেই স্থির হয়েছিল দুই দলের মাধ্যে। সেই অনুযায়ী, ভোটে লড়ে ২৬২৮ আসনের মধ্যে কংগ্রেস ও জেডিএস ইতিমধ্যে জিতে নিয়েছে যথাক্রমে ৯৮৮ এবং ৩৭৮টি আসন। অর্থাত্, সুস্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কংগ্রেস ও জেডিএস সম্মিলিতভাবে পেয়েছে ১৩৬৬টি আসন। অন্যদিকে, বিজেপি ৯২৯টি আসন দখল করতে পেরেছে।
চলতি বছরের মে মাসে এই কর্ণাটকেই বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী জোটই দেখিয়ে দিয়েছিল- বিজেপি-কেও রুখে দেওয়া যায়। একাধিক রাজ্যে সংখ্যা গরিষ্ঠ আসনবিশিষ্ট দল হওয়ার পরও কংগ্রেসের বাড়া ভাতে ছাই দিয়ে অন্য ছোট দলের সমর্থন নিয়ে সরকার গড়ে এক নতুন 'ভোট পাটীগণিতে'র সন্ধান দিয়েছিল বিজেপি। অনেকটা সেই কায়দাতেই ২২৪ বিধানসভা আসনের কর্ণাটকে বিজেপিকে এককভাবে ১০৪টি আসন পাওয়ার পরও সরকার গড়তে দেয়নি কংগ্রেস ও জেডিএস। ৮০ আসনের কংগ্রেস এবং ৩৭ আসন পাওয়া জেডিএস হাতমিলিয়ে তৈরি করে জোট সরকার। এই মুহূর্তে সেই সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মহীশূরের মসনদে বসে রয়েছেন দেবগৌড়া-পুত্র তথা জেডিএস নেতা এইচ ডি কুমারস্বামী। উল্লেখ্য, বেঙ্গালুরুতে এই সরকারের মুখ্যমন্ত্রীর পদে কুমারস্বামীর শপথ গ্রহণের মঞ্চও আক্ষরিক অর্থে হয়ে উঠেছিল বিজেপি বিরোধী আঞ্চলিক দলের জোট সম্ভবনার সবচেয়ে বড় পোস্টার। উত্তরপ্রদেশের বেশ কয়েকটি লোকসভা আসনের পুনর্নির্বাচনে অখিলেশ ও মায়াবতী হাত মিলিয়ে বিজেপিকে পর্যুদস্ত করার বিরোধী স্বপ্নে যে ভাবে হাওয়া যুগিয়েছিল, কর্ণাটকে সরকার গঠান যেন সেই স্বপ্নেরই আরও বড় সাফল্যের নিদর্শণ হয়ে উঠেছিল।
তবে, কর্ণাটকের এই জোটের ভবিষ্যত্ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোরাল প্রশ্ন তুলে দিয়েছিল বিজেপি। গোড়ার দিকে মন্ত্রক বণ্টন নিয়ে বেশ খানিকটা জল ঘোলাও হয়েছিল কংগ্রেস ও জেডিএস-এর অন্দরে। কিন্তু, চিড় ধরেনি জোটে। এরপরই রাজ্য জুড়ে পুর নির্বাচনে বিজেপি-কে রুখে দিল জোট সরকারের দুই শরিক দল। ফলে প্রত্যাশিতভাবেই এই জয়ে মনোবল বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে কংগ্রেস ও জেডিএস উভয়েরই। পাশাপাশি, দেশ জুড়ে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মুখের হাসিকেও চওড়া করেছে সোমবারের এই ফলাফল। প্রাথমিকভাবে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির প্রথম সারির নেতা বি.এস. ইয়েদুরাপ্পা দুই দলের 'জোট'কেই পদ্ম শিবিরের পরাজয়ের কারণ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। তবে তিনি এও দাবি করেছেন যে, এই জয়ের সঙ্গে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই। এই নির্বাচনের কোনও ছাপ আগামী লোকসভা ভোটে পড়বেও না।