ডিকে রবির মৃত্যু রহস্য: মোদীর হস্তক্ষেপ ও সিবিআই তদন্তের দাবি কর্নাটকের আইএএস অফিসারদের
কর্নাটকের আইএএস অফিসার ডিকে রবির রহস্য মৃত্যু ঘিরে বিতর্ক অব্যাহত। রাজ্যে বিরোধীরা সরাসরি রবির মৃত্যুর জন্য কর্নাটক সরকারকে দায়ি করেছে। রবির পরিবার পুলিসের 'আত্মহত্যার' তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়েছে। উভয়পক্ষ থেকেই সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।
বেঙ্গালুরু: কর্নাটকের আইএএস অফিসার ডিকে রবির রহস্য মৃত্যু ঘিরে বিতর্ক অব্যাহত। রাজ্যে বিরোধীরা সরাসরি রবির মৃত্যুর জন্য কর্নাটক সরকারকে দায়ি করেছে। রবির পরিবার পুলিসের 'আত্মহত্যার' তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়েছে। উভয়পক্ষ থেকেই সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।
কর্নাটকের সমস্ত আইএএস অফিসাররা একযোগে এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। সিবিআই তদন্ত চাইছেন তাঁরাও।
কর্নাটকের অ্যাডিশনাল চিফ সেক্রেটারি এম মদন গোপাল সিবিআই তদন্তের দাবিতে একটি অনলাইন পিটিশন দায়ের করেছেন।
কর্নাটক মন্ত্রিসভা এই নিয়ে বিশেষ বৈঠক ডেকেছে।
সংসদেও ডিকে রবির মৃত্যু নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে। দফায় দফায় স্থগিত হয়ে যায় লোকসভা।
রবির মৃত্যুতে এবিভিপি-র প্রতিবাদ হিংসাত্মক রূপ ধারণ করে। বিক্ষোভকারীদের আয়ত্তে আনতে পুলিস লাঠি চার্জ করে।
সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন কর্নাটকের বিজেপি বিধায়করাও।
বালি মাফিয়াদের লাগাতার হুমকি, রাজনৈতিক চাপ উপেক্ষা করে দিনের পর দিন মাফিয়াদের বিরুদ্ধে লড়াইটা চালিয়ে গিয়েছিলেন কোলার জেলার আইএএস অফিসার ডিকে রবি। সেই ৩৫ বছরের রবির মৃতদেহই তাঁর সরকারি বাসভবন থেকে সোমবার সন্ধেবেলা উদ্ধার হয়। পুলিসের দাবি, রবি নাকি আত্মহত্যা করেছেন। যদিও সেই দাবি অস্বীকার করেছে রবির পরিবার।
বর্তমানে কর্ণাটকের অ্যাডিশনাল কমিশনার অফ কমার্শিয়াল ট্যাক্সেস (এনফোর্সমেন্ট)-এর দায়িত্বে ছিলেন ডিকে রবি।
পুলিস কমিশনার এম এন রেড্ডি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ''প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যাই করেছেন রবি।''
২০০৯ ব্যাচের আইপিএস অফিসার রবির প্রথম পোস্টিংই ছিল কোলারে। সেখানে কমার্শিয়াল ট্যাক্স ডিপার্টমেন্টের অ্যাডিশনাল কমিশনারের পদে ছিলেন তিনি। পরে ডেপুটি কমিশনারের পদে পদোন্নতি হয় তাঁর।
রেড্ডি জানিয়েছেন ''যদিও সোমবার সন্ধেতে রবির পরিবার ওনার মৃত্যুসংবাদ আমাদের জানায়, কিন্তু বেলা ১১টার পর যে কোনও সময় তিনি সম্ভবত আত্মহত্যা করেছেন। ওই সময় থেকেই ওনার সঙ্গে আর ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি।''
রবির মৃত্যু রহস্য সমাধানে বেঙ্গালুরু পুলিস তিন সদস্যের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশান টিম (সিট) গঠন করেছে।
লাঞ্চ পর্যন্ত অফিসে পৌছাননি জানতে পেরে তাঁর স্ত্রী লাগাতার রবিকে ফোন করতে থাকেন। কিন্তু ফোনের উত্তর মেলেনি।সোমবার দুপুর বেলা নাগাদ রবির অফিসের কয়েকজন আধিকারিক ওনার স্ত্রীর সঙ্গে রবির আবাসনে যান।
ভিতর থেকে কোনও সারা না পেয়ে ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে অ্যাপার্টমেন্টের দরজা খোলেন তাঁর স্ত্রী।
ঘরের মধ্যে ফ্যানের সঙ্গে রবির ঝুলন্ত দেহ দেখে বাকরহিত হয়ে পড়েন প্রত্যেকেই।
রবির মৃতদেহের পাশে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি।
অ্যাপার্টমেন্টের সিসিটিভি ফুটেজ ও রবির মোবাইল রেকর্ড খতিয়ে দেখছে রবি।
কোলারের ডেপুটি কমিশনার থাকার সময় বালি মাফিয়াদের সঙ্গে তীব্র বিরোধ বাঁধে এই আইএএস অফিসারের। মাফিয়াদের অত্যাচারে অতিষ্ট সাধারণ মানুষের কাছে রীতিমত 'মাসিয়া' হয়ে ওঠেন তিনি। তাঁর বদলির প্রতিবাদে জেলায় স্বতঃস্ফূর্ত বনধ ঢাকেন এলাকাবাসী।