'দেশদ্রোহী'র জন্য গান বাঁধল JNU

Updated By: Feb 18, 2016, 04:32 PM IST
'দেশদ্রোহী'র জন্য গান বাঁধল JNU

সৌরভ পাল

বুলেটের বদলে গোলাপ। অসিহুষ্ণতার জবাবে সহিষ্ণুতার সুর। মোদী বিরোধী বক্তব্যে 'দেশদ্রোহী' তকমার কানহাইয়া গ্রেফতার। সংসদে আক্রমণকারী আফজল গুরুর যে সেলে বন্দি ছিলেন 'দেশদ্রোহী' তকমার কানহাইকেও রাখা হবে সেই চার দেওয়লে বন্দি করেই। গেরুয়া শিবিরে কাসভ আর কানহাইয়া এখন একই দাড়িপাল্লায় ওজনে সমান সমান। লকআপে নিয়ে যাওয়ার সময় পাতিয়ালা কোর্ট চত্বরে আইনের রক্ষকের হাতেই চর ঘুষি দিয়ে সম্বোধিত কানহাইয়া। ও চিৎকার করছিল। 'কেউ কথা শোনেনি...'। টেনে হিঁচড়ে প্রথমে পুলিস ভ্যান তারপর কোর্ট তারপর জেল। তবে মুখ ফেরায়নি ক্যাম্পাস। কানহাইয়ার কথাই এবার 'হাওয়ায় হাওয়ায়'। "Freedom is about right to speech/not the ideology that they preach", এ যেন কৃষ্ণের মুখে মহাভারতের নীতিকথা। 'হাল ছেড়ো না বন্ধু, কন্ঠ ছাড়ো জোরে', কানহাইয়ার জন্য কণ্ঠ ছড়িয়ে দিল তাঁরই সতীর্থরা। দেশব্যাপী সহিষ্ণূতা ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু, এমন অবস্থায় প্রাচী সাধ্বী, যোগী আদিত্যনাথরা যখন গোঁড়ামিপনার বীজমন্ত্রে ভারতের আকাশে বিষ ছড়িয়ে দিচ্ছেন, মুক্ত আওয়াজ চিৎকার করছে,"মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলছি আমারা, তোমরা যে স্বাধীনতার কথা বলছো সেটা স্বাধীনতা নয়!

ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে আরও একবার ধ্বনিত হতে শুরু করেছে, 'ইয়ে আজাদি ঝুটা হে'। না, স্বাধীন দেশে মুক্তিচেতা আজাদি মিথ্যা নয়, মিথ্যা নয় স্বাধিকার ছিনিয়ে আনার ইতিহাস। স্বাধীনতার পরও পরাধীনতার গ্লানির বিরুদ্ধে শানিত হচ্ছে কলম, কন্ঠ আরও জোরালো হচ্ছে। 'ভেবে দেখছো কী?' মত প্রকাশের স্বাধীনতা সাংবিধানিক অধিকার। সংবিধানের ১৯-এর একের (এ) ধারায় ভারতীয় নাগরিকের স্বাধীন মত ব্যক্ত করার অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া থাকলেও মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ। ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে বারুদের গন্ধে দম আটকে যাচ্ছে স্বাধিকারের। হিটলারিয় কায়দায় শাসনের বিরুদ্ধে সেদিনও আওয়াজ উঠেছিল, আজও উঠছে। 'বোল রে সাথী হাল্লা বোল, হাল্লা বোল'। লাল কেল্লা থেকে আওয়াজ যাচ্ছে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী। আপনার স্বাধীনতার জন্য, মৌলিক অধিকারের জন্য গান বাধল JNU। কানহাইয়ার গ্রেফতারিতে জেগে উঠেছে যাদবপুরও।

রাষ্ট্রকে ছাত্র-ছাত্রীদের চ্যালেঞ্জ! গান্ধীর বুকে বুলেট পুঁতে যদি RSS-এর গেরুয়া সন্ত্রাসের সেনানি নাথুরাম গডসে দেশবিপ্লবী হয়, তাহলে স্লোগানে বিদ্রোহ কীভাবে দেশদ্রোহিতা হয়? "আমাদের দেশপ্রেম নাথুরাম গডসে নয়, আমাদের দেশপ্রেম অহিংস, আমাদের দেশপ্রেম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আমাদের দেশপ্রেম আম্বেদকার। RSS-এর দেশপ্রেম সার্টিফিকেট চাই না", এক সুরে এমনটাই বলছে JNU। সুরে সুর মিলিয়েছে যাদবপুরও। গেরুয়া সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লালঝান্ডাধারীরা হাত মিলিয়েছে মানববন্ধনে। আরও একবার বুলেটের বদলে গোলাপ।                

.