এবার কি তাহলে সত্যিই অকংগ্রেসি, অবিজেপি ফেডেরাল ফ্রন্ট হচ্ছে?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথে রাজনীতির মিলনমেলা। একইমঞ্চে আঞ্চলিক হেভিওয়েটরা। ফের একবার মাথা তুলেছে ফেডেরাল ফ্রন্টের জল্পনা। সত্যিই কি? ইতিহাস কিন্তু বলছে, ইয়ে ইশক নেহি আসান।
ওয়েব ডেস্ক: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথে রাজনীতির মিলনমেলা। একইমঞ্চে আঞ্চলিক হেভিওয়েটরা। ফের একবার মাথা তুলেছে ফেডেরাল ফ্রন্টের জল্পনা। সত্যিই কি? ইতিহাস কিন্তু বলছে, ইয়ে ইশক নেহি আসান।
বিজেপি ও কংগ্রেসকে বাইরে রেখে জোট বাঁধার চেষ্টা। বারবার হাত ধরা। বারবার বিচ্ছেদ। ইয়ে ইশক নেহি আসান।
প্রথম চেষ্টা করেন প্রকাশ কারাট। দুহাজার নয়ের লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেস ও বিজেপির বিরুদ্ধে আঞ্চলিক জোটের স্বপ্ন দেখেন সিপিএমের তত্কালীন সাধারণ সম্পাদক। ভোটের ফলে চুরমার হয়ে যায় সেই স্বপ্ন। পরে বাম মনোভাবাপন্ন দলগুলিকে নিয়ে ফ্রন্ট গঠনের চেষ্টা করেন তিনি। পারেননি।
দুহাজার বারোয় সেই একই ভাবনা উঁকি দিল সিপিএমের ঘোর শত্রু মমতার মনে। রাষ্ট্রপতি পদে কংগ্রেস মনোনীত প্রণব বা বিজেপির সাংমা নয়, চাইলেন কালামকে। কিন্তু, সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েও পিছু হটেন মুলায়ম। তবু হাল ছাড়েননি তৃণমূলনেত্রী।
দুহাজার তেরোয় জেডিইউ-বিজেপি বিচ্ছেদের সময় ফেসবুকে ফের সওয়াল করলেন ফেডেরাল ফ্রন্টের পক্ষে। দুহাজার চোদ্দ। লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে ব্রিগেডের সভায় দিল্লিতে বিকল্প জোট সরকারের ঘোষণা করলেন মমতা। অবিজেপি-অকংগ্রেসি আঞ্চলিক নেতাদের পাশে পেতে বার বার দিল্লি ছুটলেন মমতা। কিন্তু, মোদী ঝড়ে ফেডেরাল স্বপ্ন ভাঙতে সময় লাগেনি।
মোদীর দিল্লি জয়ের পর জোট বাঁধল পরাজিতরা। দিল্লিতে ফের এক হল সাবেক জনতা পরিবার।
দুহাজার পনেরোয় যুক্তরাষ্ট্রীয় রাজনীতি নিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর আলোচনাচক্রে যোগ দিলেন মমতা। একই সভায় আমন্ত্রিত ত্রিপুরার মানিক সরকারও। যদিও, সেই সম্মেলন খুব একটা সাড়া পায়নি।
ওই বছরেই রাজ্যের আর্থিক দাবি নিয়ে দিল্লি গিয়ে NCP প্রধান শরদ পওয়ারের বাড়িতে যান মমতা। চায়ে পে চর্চায় উঠে আসে ফেডেরাল আলোচনা। তারপর অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে একান্তে ডিনার।
বারবার চেষ্টা। বারবার ব্যর্থতা।
কেন দানা বাঁধছে না ফেডেরাল উদ্যোগ? আঞ্চলিক নেতাদের রাজনৈতিক স্বার্থ ফেডেরাল স্বপ্নে কাঁটা। মুলায়ম-মায়াবতী, জয়ললিতা-করুণানিধি এবং মমতা-সিপিএম সমঝোতা কার্যত অসম্ভব আঞ্চলিক স্বার্থ একে অপরের পরিপন্থী, দক্ষিণী লবি ও পূর্বাঞ্চলের দাবি আলাদা রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা রয়েছে সব আঞ্চলিক নেতারই। কেউ অন্যের নেতৃত্ব মেনে নেবেন না।
অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি কী হবে? কোনও আলোচনাতেই এই নিয়ে কথা এগোয়নি।
রেড রোডের মঞ্চে ফের মাথা তুলেছে ভুলতে বসা স্বপ্ন। এবার কি আকার পাবে ফেডেরাল ফ্রন্ট? ইতিহাস বলছে, ইয়ে ইশক নেহি আসান। আবার ইতিহাসই বলছে রাজনীতিতে সবই সম্ভব।