সংহতির উদাহরণ! তিন পুরুষ ধরে রামলীলায় অংশ নেয় লখনৌয়ের খান পরিবার
বক্সি কা তলব এলাকায় রামলীলা হয় ১৯৭২ থেকে।
নিজস্ব প্রতিনিধি : বক্সি কা তলব-এর বাসিন্দারা ব্যাপারটার মধ্যে কোনও বিশেষত্ব দেখতে পান না। সারা দেশে ধর্ম নিয়ে হানাহানি, মারামারির কথা কী তাঁদের মহল্লা পর্যন্ত পৌঁছয় না! পৌঁছয় বৈ কি! কিন্তু তাঁরা দরজা বন্ধ করে ভ্রম রুখে দেন। ধর্ম এখানে এক সুতোয় বাঁধা। ধর্মের নামে এখানে ভ্রম নেই। হিন্দু-মুসলমানের হাত ধরাধরি আছে লখনৌ-এর এই মহল্লায়। আর তাঁদের এই সংহতি এই ভীষণ অস্থির পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে গোটা দেশের কাছে এক নতুন বার্তা বয়ে নিয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন- স্কুলের ভিতরেই প্রধান শিক্ষককে গুলি করে খুন করল দুষ্কৃতীরা
বক্সি কা তলব এলাকায় রামলীলা হয় ১৯৭২ থেকে। আর এখানকার মঞ্চে প্রতিবার রামলীলা আয়োজিত হয় মহম্মদ সাবির খানের পরিচালনায়। রামলীলায় রাম, সীতা, হনুমান, রাবণের ভূমিকায় অভিনয়ও করেন গোটা একটা মুসলমান পরিবারের সদস্যরা। সাবির খান বলছিলেন, ''১৩ বছর বয়স থেকে আমি এই রামলীলায় অংশ নিই। আমাদের তিন পুরুষ এই রামলীলায় অভিনয় করেছে। আমাদের রামলীলায় হিন্দু-মুসলমানের কোনও ভেদাভেদ নেই। ঈশ্বর তো আমাদের হিন্দু-মুসলমান হিসাবে আলাদা করে দেয়নি। আমরা নিজেরাই নিজেদের আলাদা করে নিয়েছি। সবাই ভুলে যাচ্ছি, আসলে আমরা সবার আগে মানুষ। আমরা মিলেমিশে থাকলে কারও কোনও ক্ষতি হবে না। হানাহানি করে নিজেদের ক্ষতি করে কী লাভ!''
আরও পড়ুন- টাকার স্তুপে অধিষ্ঠিত ‘দেবী’, পুজো শেষ হলেই অর্থ ফেরত যায় ভক্তদের অ্যাকাউন্টে
সাবির খান, তাঁর দুই ছেলে ও নাতি নাতনিরা প্রতিবারের মতো এবারও এই রামলীলায় অংশ নেবেন। ১০ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে নবরাত্রি। চলবে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত। এই সময় বক্সি কা তলব একসঙ্গে মিলে তেওহার পালন করে। সেখানে হিন্দু-মুসলমানের ভেদাভেদ নেই। জাত-পাতের সংস্কার নেই। দেবী এখানে সর্বজন পূজিত। কে হিন্দু, কে মুসলমান, লখনৌয়ের এই মহল্লার কিছু এসে যায় না!