Coromandel Express Accident: করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার দায় কার, রিপোর্টে জানাল রেল
Coromandel Express Accident: বালাসোরের ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন বাংলারও অনেকে। মুখ্য়মন্ত্রী মোট দুবার ওড়িশা গিয়েছিলেন। একবার তিনি যান দুর্ঘটনাস্থলে এবং অন্যবার বালাসোরের বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে ঘুরে আহতদের সঙ্গে কথা বলেন। বহু আহতকে বাংলায় এনে চিকিত্সার ব্যবস্থাও করা হয়
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বালাসোরে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ২৯০ জন। আহত ১১০০ যাত্রী। ভয়ংকর সেই দুর্ঘটনার এক মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর দুর্ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট দিল কমিশনার অব রেলওয়েজ সেফটি(CRS)। ওই রিপোর্ট বলা হয়েছে, মানুষের ভুলেই ওই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন-হাইকোর্টে জোর ধাক্কা, নওশাদ সিদ্দিকির করা মামলায় কড়া অবস্থান আদালতের
গত ২ জুন ওড়িশার বালাসোরের বাহাঙ্গাবাজারে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রসে, যশবন্তপুর এক্সপ্রেস ও একটি দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ি। প্রথমিকভাবে জানা নিয়েছে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির লাইনে ঢুকে যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস। প্রবল ধাক্কায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে করমণ্ডল একপ্রেস। তাকে এসে ধাক্কা মারে যশবন্তপুর এক্সপ্রেস। ওই দুর্ঘটনার দায় কার, কার ভুলে এমন মর্মান্তিক কাণ্ড এনিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এনিয়ে তদন্ত করছে সিবিআই। এর মধ্যেই সিআরএস জানিয়ে দিল রেলকর্মীর ভুলেই এই দুর্ঘটনা। তবে এর পেছনে কোনও অন্তর্ঘাত রয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখছে সিবিআই। ওই রিপোর্ট এখনই প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে না। তাতে সিবিআই তদন্তের উপরে প্রভাব পড়তে পারে।
রেল সূত্রে সংবাদমাধ্যমের খবর, কোনও মহলের চাপ রেলের উপরে নেই। সিবিআইও তদন্ত করছে। দুটি রিপোর্ট খতিয়ে দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিআরএসের রিপোর্ট দক্ষিণ পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার ও রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এটা স্পষ্ট যে ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং সিস্টেম যিনি দেখছিলেন তার তরফে কর্তব্যে অবহেলা রয়েছে। মূলত সিগ্যালিংয়ের দায়িত্বে যারা ছিলেন তাদের তরফেই অবহেলা ছিল।
উল্লেখ্য, দুর্ঘটনার পরপরই নিরাপত্তার বিষয়টি আরও জোরদার করেছে রেল। সব রিলে রুমে ডবল লকিং সিস্টেমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রেলের এক আধিকারিকের বক্তব্য অনুযায়ী এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, ট্রেন পাস করানোর আগে সেফটি প্রটোকল পরীক্ষা করে দেখা হয়নি। সিগন্যাল ঠিক করার নির্দেশ থাকলেও তা সম্ভবত করা হয়নি।
উল্লেখ্য, বালাসোরের ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন বাংলারও অনেকে। মুখ্য়মন্ত্রী মোট দুবার ওড়িশা গিয়েছিলেন। একবার তিনি যান দুর্ঘটনাস্থলে এবং অন্যবার বালাসোরের বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে ঘুরে আহতদের সঙ্গে কথা বলেন। বহু আহতকে বাংলায় এনে চিকিত্সার ব্যবস্থাও করা হয়। ত্রাণ ও উদ্ধারকার্যে বাংলা থেকে পাঠানো হল বহু অ্যাম্বুল্যান্স, চিকিত্সক ও স্বাস্থ্যকর্মী।
প্রসঙ্গত, প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছিল চাঞ্চল্যকর তথ্য। রেলের কাছে প্রাথমিকভাবে যে তথ্য় জমা পড়ে তাতে দেখা গিয়েছিল শালিমার থেকে আসা করমণ্ডল এক্সপ্রেসের জন্য যে সিগন্য়াল ছিল তা ছিল একেবারে সোজা। অর্থাত্ করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সোজা যাওয়ার কথা। সেইভাবেই লাইন সেট থাকার কথা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে লাইনের পয়েন্ট সেট করা ছিল পাশের লাইনের দিকে। অর্থাত্ সিগন্যাল ছিল সোজ আর পয়েন্ট সেট ছিল পাশের লাইনের দিকে। গ্রিন সিগন্যাল দেখে করমণ্ডল তার গতিতে সোজাই যাচ্ছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত লাইনের পয়েন্ট পাশের দিকে করা থাকায় সে বাঁদিকের মালগাড়ির লাইনে ঢুকে পড়ে। প্রবল গতিবেগে করমণ্ডল এক্সপ্রেস সোজা গিয়ে ধাক্কা মারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালগাড়িতে। সঙ্গে সঙ্গেই করমণ্ডলের কয়েকটি কামরা মালগাড়ির উপরে উঠে যায়। তাতেই এমন ভয়ংকর ঘটনা।