কনে ছাড়াই বিয়ে করলেন বর! হতবাক আমন্ত্রিত আটশো অতিথি

আসলে, এ দিন কনে ছাড়াই বিয়ে হল অজয়ের। গুজরাতি আচার-অনুষ্ঠান মেনেই তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের এক দিন আগে সংগীত ও মেহেন্দি অনুষ্ঠানও হয়

Updated By: May 13, 2019, 06:40 PM IST
কনে ছাড়াই বিয়ে করলেন বর! হতবাক আমন্ত্রিত আটশো অতিথি
প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন: ‘বাবা আমার কি বিয়ে হবে না!’, গ্রামের কারোর বিয়ে দেখলেই এই প্রশ্নটা বাবাকে প্রায়ই করত অজয়। আর প্রতি বারই বাবা তাঁকে সান্ত্বনা দিত খুব শীঘ্রই তাঁর বিয়ে দেওয়া হবে। ধুমধাম করে বিয়ে হবে, ফুটফুটে বৌ আনা হবে এমন সব ‘অলীক স্বপ্ন’ ছেলেকে শোনাতেন। অলীক স্বপ্ন কেন? অজয়ের বাবা বিষ্ণু বারোত জানতেন, ছেলের কোনওদিন বিয়ে হবে না। বিরল রোগে আক্রান্ত সে। ছেলের বিয়ে দিয়ে আরও একটি মানুষের জীবন নষ্ট করতে চান না তিনি। তাঁর বাবা জানান, লার্নিং ডিসএবিলিটির শিকার। আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো তাঁর আচরণ নয়।

গুজরাটের হিম্মতনগরের বাসিন্দা অজয় তাঁর গ্রামের কারোর বিয়ে হলেই পৌঁছে যান। নিমন্ত্রণের ধার ধারেন না। সেখানে গিয়ে কনে বা বর পক্ষের হয়েই উদুম নেচে আসেন। তার পর বাড়ি ফেরেন বিষন্ন মুখে। অজয়ের সেই প্রশ্ন ‘বাবা আমার কি বিয়ে হবে না!’

২৭ বছর বয়সী অজয়ের সেই স্বপ্ন পূরণ হল গতকাল। একেবারে বিয়ের সাজ! সোনালি শেরওয়ানি, মাথায় পাগড়ি, গলায় গোলাপের মালা- পুরোদস্তুর বর সেজে ঘোড়ায় চড়ে চললেন বিয়ে করতে। আয়োজনের কোনও খামতি নেই। বরের সঙ্গে প্রায় দুশো জন সভ্যও গুজরাটি গানের তালে নাচতে নাচতে চললেন। সবই ঠিকঠাক। কিন্তু কনে কোথায়? উত্সুক অতিথিদের একটাই প্রশ্ন।

আসলে, এ দিন কনে ছাড়াই বিয়ে হল অজয়ের। গুজরাটি আচার-অনুষ্ঠান মেনেই তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের এক দিন আগে সংগীত ও মেহেন্দি অনুষ্ঠানও হয়। কমপক্ষে ৮০০ অতিথি আমন্ত্রিত ছিলেন। অজয়ের বাবা বিষ্ণু বারোত বলেন, “বিয়ে করার ইচ্ছে ছিল ছেলের। তার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি এতেই আমরা খুশি। ওর জন্য মেয়ের জোগাড় করতে পারিনি ঠিকই, কিন্তু বিয়ের আচার-অনুষ্ঠানে কোনও ত্রুটি রাখিনি।” অজয়ের কাকা কমলেশ বলেন, “ও ভীষণ নাচতে ভালবাসে। ফেব্রুয়ারি মাসে ওর দাদার বিয়েতে দারুণ নেচেছিল। সবাই মুগ্ধ ওর নাচ দেখে।”

আরও পড়ুন- স্বাধীন ভারতের প্রথম জঙ্গি নাথুরাম গড়সে, দলের সভায় মন্তব্য কমল হাসানের

শুধুমাত্র দাদার মন রাখতেই এমন আয়োজন করা হয় বলে জানান অজয়ের ছোটো বোন। তাঁর কথায়, “ ছোটোবেলায় মা হারিয়েছি। ও আমাদের খুব আদরের। কারোর বিয়ে দেখলে ওর মন খারাপ হত।” তবে, এ দিন সত্যিই অজয়ের মন খারাপ ছিল না। গুজরাটি গানে তাঁর তখন পাগল পাগল নাচ। কনে নেই তো কী হয়েছে, এমন একটি মুহূর্তই তো সে চেয়েছিল! আজ থেকে সে বিবাহিত পুরুষ, বুক ঠুকে বলতেই পারেন অজয়। আপনি কী বলেন?

.