মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ দমনে কড়া আইনের প্রতিশ্রুতি শিণ্ডের
মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ক্ষেত্রে অপরাধীরা যাতে সহজে জামিন না পায় তা দেখতে হবে। ধর্ষণের ক্ষেত্রে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও জুভেনাইলস অ্যাক্টের ক্ষেত্রে বয়স ১৮ থেকে ১৬ নামিয়ে আনতে হবে। আজ দিল্লিতে মুখ্যসচিব ও পুলিস প্রধানদের বৈঠকে এ রাজ্যের তরফে এই দাবি করা হয়েছে।
ধর্ষণের ঘটনায় আমৃত্যু কারাবাস, জুভেনাইলস অ্যাক্টের বয়স ষোলোয় নামিয়ে আনার মতো প্রস্তাব দিল এ রাজ্য। আজ দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে আয়োজিত সম্মেলনে এইসব প্রস্তাব দেওয়া হয়। সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ দমনে কড়া আইন চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিণ্ডে। ধর্ষণের তদন্তে গাফিলতি থাকলে সংশ্লিষ্ট পুলিসকর্মীকে সঙ্গে সঙ্গে সাসপেন্ড করার জন্য রাজ্যগুলিকে পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র।
দিল্লি গণধর্ষণকাণ্ডের পর ফৌজদারি আইন সংশোধনের জন্য সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জে এস ভার্মার নেতৃত্বে কমিটি গঠন করে কেন্দ্র। মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ দমনে কড়া আইন চালুর ব্যাপারে রাজ্যগুলির মতামত জানতে শুক্রবার দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে একটি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ছিলেন বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যসচিব ও পুলিস প্রধানরা। মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সব রাজ্যই ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের পক্ষে সওয়াল করেছে। কড়া আইন চালুর পক্ষে মত দিলেও প্রায় কোনও রাজ্যই ধর্ষণের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানায়নি। সম্মেলনে ছিলেন না পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব। রাজ্য পুলিসের ডিজি নপরাজিত মুখোপাধ্যায় বলেন,
ধর্ষণে দোষী ব্যক্তিকে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত কারাদণ্ড দিতে হবে। অপরাধী যাতে সহজে জামিন না পায়, দেখতে হবে তাও। জুভেনাইলস অ্যাক্টের ক্ষেত্রে বয়স আঠারো থেকে কমিয়ে ষোলো করার জন্যও কেন্দ্রের কাছে এ রাজ্যের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
সম্মেলনে মহিলাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিণ্ডে। এ বিষয়ে পুলিসের গাফিলতির কথা স্বীকার করে নেন তিনি। বলেন, মহিলাদের সুরক্ষায় আরও কড়া আইন প্রয়োজন। তবে, যে আইন রয়েছে তারও সঠিক প্রয়োগ হচ্ছে না।
ধর্ষণের তদন্ত ও অভিযোগ গ্রহণে নির্দিষ্ট নিয়ম চালু করতে হবে। এ ক্ষেত্রে গাফিলতি থাকলে সঙ্গে সঙ্গে সাসপেন্ড করতে হবে সংশ্লিষ্ট পুলিসকর্মীকে। কেন্দ্রের তরফে রাজ্যগুলিকে এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী কৃষ্ণা তিরথ বলেন, ধর্ষণের ক্ষেত্রে বিরলতম ঘটনায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যেতে পারে। তবে, ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে অপরাধীর যৌন সংসর্গের ক্ষমতা নষ্ট করে দেওয়ার বিপক্ষে মত প্রকাশ করেন তিনি। ধর্ষণের ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া নিয়ে সম্মেলনে কোনও ঐকমত্য হয়নি। তবে, জুভেনাইলস অ্যাক্টের বয়স কমানোর বিষয়ে সবপক্ষই একমত হয়েছেন বলে জানা গেছে। অপরাধীদের সম্পর্কে তথ্য পেতে বিভিন্ন থানার মধ্যে নেটওয়ার্ক তৈরির লক্ষ্যে ক্রাইম অ্যান্ড ক্রিমিনাল ট্র্যাকিং নেটওয়ার্ক সিস্টেমসের সূচনা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।