মেনোপজের পর কোনও মহিলার সঙ্গে জোর করে সঙ্গম ধর্ষণ নয়: দিল্লি হাইকোর্ট

মেনোপজ হয়ে গেলেই কোনও মহিলার সঙ্গে জোর করে যৌনাচার ধর্ষণের আওতায় পড়বে না। অন্তত এমনটাই মনে করে দিল্লি হাইকোর্ট!  দিল্লি হাইকোর্টের সাম্প্রতিক এক রায়ে হতবুদ্ধি হয়ে পড়েছেন সবাই।

Updated By: Nov 4, 2014, 12:23 PM IST
মেনোপজের পর কোনও মহিলার সঙ্গে জোর করে সঙ্গম ধর্ষণ নয়: দিল্লি হাইকোর্ট

নয়া দিল্লি: মেনোপজ হয়ে গেলেই কোনও মহিলার সঙ্গে জোর করে যৌনাচার ধর্ষণের আওতায় পড়বে না। অন্তত এমনটাই মনে করে দিল্লি হাইকোর্ট!  দিল্লি হাইকোর্টের সাম্প্রতিক এক রায়ে হতবুদ্ধি হয়ে পড়েছেন সবাই।

 নিম্ন আদালতে এক ধর্ষণের মামলা দোষী সব্যস্ত হয়েছিল আচেয় লাল নামের ব্যক্তি। তাকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় নিম্ন আদালত। হাইকোর্টে সেই আচেয় লালকেই বেকসুর খালাস করেছে। বিচারপতি প্রদীপ নন্দরাজোগ ও মুক্তা গুপ্তা মতে যেহেতু নিগৃহীতা ঘটনার সময় মেনোপজ পেড়িয়ে গিয়েছিলেন তাই এক্ষেতে ''সঙ্গমের ক্ষেত্রে বলপ্রয়োগ করা হলেও এই ঘটনাকে জবরদিস্তি বলা যায় না।''  

নিগৃহীতা মহিলার ঘটনার সময় বয়স ৬৫ থেকে ৭০-এর মধ্যে ছিল।

দিল্লি হাইকোর্টের দুই বিচারপতির মতে যদি মেনোপজ উত্তর কোনও মহিলার সঙ্গে জোর করে সঙ্গম ধর্ষণের আওতায় পড়ে না। এই রায়ে তাঁরা পরিস্কার ভাবে কোন বয়স পর্যন্ত যৌন নির্যাতনের শিকার মহিলাদের ধর্ষিতা বলা হবে তার সীমারেখা টানতে চেয়েছেন।

আইনজীবী তথা সমাজকর্মী বৃন্দা গ্রোভার সরাসরি দিল্লি হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে প্রশ্ন তুলেছেন ''কীসের উপর ভিত্তি করে আদালত সিদ্ধান্ত নিল এটি ধর্ষণের ঘটনা নয়? মেনোপজের সঙ্গের ধর্ষণের সম্পর্কটাই বা কী?''

গ্রোভারের মতে মেনোপজ একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। এর উপর ভিত্তি করে ধর্ষণ হয়েছে না হয়নি তার বিচারের বিন্দুমাত্র কোনও সম্পর্ক থাকতে পারে না। এক্ষেত্রে নিগৃহীতার যৌনাঙ্গে আঘাত আগেই জোর করে সঙ্গমের ঘটনার প্রমাণ দিয়েছিল।

 দিল্লি হাইকোর্টের এই ঘটনাকে ধর্ষণ হিসাবে খারিজ করার আগে আরও একটি অদ্ভুত যুক্তি দিয়েছে। তারা জানিয়েছে যৌনাঙ্গ ছাড়া নিগৃহীতার শরীরে আর কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না।

মথুরায় নৃশংস ধর্ষণের ঘটনার পর ভারতীয় আইনে দু'টি পরিবর্তন আনা হয়। ১) ধর্ষণের ঘটনায় আঘাত সম্পর্কিত কোনও জবাবদিহি করতে বাধ্য নন ধর্ষিতা। ২) সম্মতি ব্যাতীত সঙ্গম সব সময়ই ধর্ষণের আওতায় পড়বে।

গ্রোভারের মতে এই রায় সুপ্রিমকোর্ট বিরোধী।

বিভিন্ন নারী সংগঠন তীব্র ভাষায় এই রায়ের সমালোচনা করেছে। একটি নারী সংগঠন বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে ''৮০ বছরের এক বৃদ্ধাও ধর্ষণের শিকার হতে পারেন।

২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে উত্তর দিল্লিতে নিজের বাড়িতে উদ্ধার হয় নিগৃহীতার মৃতদেহ। সেই বাড়ি থেকেই মাতাল অবস্থায় গ্রেফতার হয় আচেয় লাল।
 

 

 

 

.