ইচ্ছে করেই নেতাজিকে মৃত বলছে কংগ্রেস, দাবি গবেষকদের
নেতাজির জন্মজয়ন্তি উপলক্ষে বুধবার কংগ্রেস ও রাহুল গান্ধীর তরফে ট্যুইট করা হয়। ওই ট্যুইটে ১৮ অগস্ট ১৯৪৫ নেতাজির মৃত্যুদিন হিসেবে লেখা। রাহুলের ট্যুইটটি আবার কংগ্রেসের ট্যুইটার হ্যান্ডেল থেকে রিট্যুইট করা হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদন: জন্মজয়ন্তিতে নেতাজিকে নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক ক্রমশ বড় আকার ধারণ করতে শুরু করেছে। নেতাজির মৃত্যুর তারিখ দিয়ে কংগ্রেস যে ট্যুইট করেছে, তাকে দলের নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি বলেই মনে করছেন।
আরও পড়ুন: নেতাজির মৃত্যুদিন উল্লেখ করে টুইট! বিতর্ক উসকে দিল কংগ্রেস
কিন্তু তা মানতে নারাজ নেতাজি-গবেষকরা। তাঁদের বক্তব্য, কংগ্রেস এটা ইচ্ছে করেই করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে নেতাজিকে নিয়ে এটাই কংগ্রেসের অবস্থান। নেহরুও সংসদে একই তথ্য তুলে ধরেছিলেন।
প্রসঙ্গত, নেতাজির জন্মজয়ন্তি উপলক্ষে বুধবার কংগ্রেস ও রাহুল গান্ধীর তরফে ট্যুইট করা হয়। ওই ট্যুইটে ১৮ অগস্ট ১৯৪৫ নেতাজির মৃত্যুদিন হিসেবে লেখা। রাহুলের ট্যুইটটি আবার কংগ্রেসের ট্যুইটার হ্যান্ডেল থেকে রিট্যুইট করা হয়।
আরও পড়ুন: IS-এর সঙ্গে যোগসাজসের অভিযোগে মহারাষ্ট্র থেকে গ্রেফতার ৯
এর পরই শুরু হয়েছে বিতর্ক। কারণ, স্বাধীনতার পর থেকে একাধিক তদন্ত কমিশন গঠন নিয়ে সমাধান হয়নি নেতাজি অন্তর্ধান রহস্যের। শেষ পর্যন্ত এই দেশনায়কের কী হল, তা এখনও জানা যায়নি।
ফলে কংগ্রেসের তরফে সরাসরি তাইহুকু বিমান দুর্ঘটনার তারিখটিকেই নেতাজির মৃত্যুদিন হিসেবে উল্লেখ কেন করা হল, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রশ্ন উঠছে, কংগ্রেস দীর্ঘদিন কেন্দ্রের ক্ষমতায় ছিল, তাহলে তারা কেন সরকারিভাবে নেতাজিকে মৃত বলে ঘোষণা করল না?
আরও পড়ুন: শুজা কোনও দিনই কাজ করেনি, জানাল ইভিএম প্রস্তুতকারী সংস্থা
প্রদেশ কংগ্রেস নেতা তথা দলের রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য জানান, এটি অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি। দলের অফিস থেকে যিনি ট্যুইটটি করেছেন, তিনি বিষয়টি সম্বন্ধে অবগত নন।
যদিও কংগ্রেসের এই যুক্তি মানতে নারাজ নেতাজি-গবেষকরা। তাঁদের মধ্যে পূরবী রায় জানান, ইচ্ছাকৃত ভাবে এই ট্যুইট করা হয়েছে। তিনি এ প্রসঙ্গে টেনে এনেছেন জওহরলাল নেহরুর কথা। জানিয়েছেন, রাহুল গান্ধীর প্রপিতামহ ১৯৫৬ সালে সংসদে জানিয়েছিলেন নেতাজি মৃত। তাঁর কাছে তথ্য আছে বলে নেহরু দাবি করেছিলেন। সেই নথি মেলেনি।
আরও পড়ুন: ইভিএম হ্যাকিংয়ে দাবি করতে গিয়ে মিথ্যার জাল বুনেছেন শুজা? কী কী ফাঁস হল?
পূরবীদেবীর বক্তব্য, একাধিক তদন্ত কমিশন ও অনান্য নথি থেকে কোথাও নেতাজির অন্তর্ধান রহস্যের সমাধান হয়নি। কিন্তু কংগ্রেস রাজনীতির কারণেই প্রথম থেকেই বিশ্বাস করে যে নেতাজি মৃত। এই ট্যুইট তারও প্রতিফলন বলে মনে করেন পূরবী রায়।
আরও একজন নেতাজি গবেষক অনুজ ধরও মনে করেন এটাই কংগ্রেসের সরকারি অবস্থান। তাঁর দাবি, নেহরু যেহেতু সংসদে দাঁড়িয়ে নেতাজিকে মৃত বলে ঘোষণা করেছিলেন। তাই সেটাই এদেশের সরকারি নথিতে জায়গা পেয়েছে। সেটাই রয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: মমতা না মায়া? প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কাকে পছন্দ অখিলেশের?
কিন্তু কোনও তদন্ত কমিশন ও অনান্য নথি সেই দাবিকে বারবার খারিজ করে দিয়েছে। ফলে তিনি কংগ্রেসের দাবিকে মানতে নারাজ।