অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হচ্ছেন কেএম জোসেফ, সবুজ সংকেত ‘অসহায়’ কেন্দ্রের
গত ২৬ এপ্রিল কলেজিয়ামের কাছে জোসেফের নাম ফেরত পাঠানোয় কেন্দ্রের যুক্তি ছিল, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পদে জোসেফকে নিযুক্ত করলে কেরল রাজ্য থেকে ২ জন বিচারপতি প্রতিনিধিত্ব করবেন (জোসেফ কেরলের নাগরিক)
নিজস্ব প্রতিবেদন: অনেক জল্পনার পর সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পদে নিযুক্ত হচ্ছেন উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি কেএম জোসেফ। কেন্দ্রের তরফে এ বিষয়ে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। বিচারপতি জোসেফের নিয়োগ প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই বিতর্ক তৈরি হয়। সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম তাঁর নাম প্রস্তাব করে কেন্দ্রের কাছে পাঠালে নজিরবিহীন ভাবে তা ফেরত পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন- অসমের নাগরিকপঞ্জি নিয়ে ড্যামেজ কন্ট্রোলে কংগ্রেস!
গত ২৬ এপ্রিল কলেজিয়ামের কাছে জোসেফের নাম ফেরত পাঠানোয় কেন্দ্রের যুক্তি ছিল, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পদে জোসেফকে নিযুক্ত করলে কেরল রাজ্য থেকে ২ জন বিচারপতি প্রতিনিধিত্ব করবেন (জোসেফ কেরলের নাগরিক)। অথচ, বেশিরভাগ রাজ্য থেকে একজন করে বিচারপতিকে নিয়োগ করা হয়েছে। এই কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার যুক্তি দেখায় কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক। উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের দ্বিতীয় কলেজিয়াম বৈঠকে ফের বিচারপতি জোসেফের নাম গৃহীত হয়। কেন্দ্রের যুক্তিকে খণ্ডন করে ফের জোসেফের নাম পাঠানোর বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামে জোর সওয়াল করেন জে চেলামেশ্বর (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি)। এরপর কলেজিয়ামও উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নামই চূড়ান্ত করে মন্ত্রকে পাঠায়।
আরও পড়ুন- দিল্লিতে 'দিদি'গিরি, লোকসভার আগে ব্যালটযুদ্ধে ১৭ দলকে একমঞ্চে আনলেন মমতা
সুপ্রিম কোর্টের নিয়োগ প্রক্রিয়ার নিয়ম অনুযায়ী, কলেজিয়াম যদি দ্বিতীয়বার কেন্দ্রের কাছে নাম পাঠায়, তা হলে সেই প্রস্তাবকে খারিজ করার ক্ষমতা নেই আইনমন্ত্রকের। ফলে কার্যত বাধ্য হয়েই সেই প্রস্তাবকে গ্রহণ করতে হয়। বিচারপতি জোসেফের নিয়োগ ক্ষেত্রেও একই বিষয় লক্ষ্য করা গেল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এই ঘটনা নজিরবিহীন বলেও মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। উল্লেখ্য, মোদী সরকারের আমলে ২০১৪ সালে প্রবীণ আইনজীবী গোপাল সুব্রহ্মণ্যমের পদ মর্যাদার উন্নতির ক্ষেত্রেও একই সমস্যা দেখা যায়। তবে, আইন মন্ত্রকের তরফে দাবি, কোনও ব্যক্তিকেন্দ্রিক সমস্যা নয়, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি হওয়াতেই বিচারপতি জোসেফের নিয়োগ আটকে ছিল। বিচারপতি কেএম জোসেফের পাশাপাশি, মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি ইন্দিরা ব্যানার্জি এবং ওড়িশা হাইকোর্টের বিচারপতি বিনীত সরণও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পদে নিযুক্ত হচ্ছেন।
আরও পড়ুন- অসম পুলিসের মহিলা কনস্টেবলকে শারীরিক নিগ্রহে কাঠগড়ায় তৃণমূল বিধায়ক
বিচারপতি জোসেফের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি হওয়ার পর কেন্দ্রের সমালোচনায় সরব হয় কংগ্রেস। বিরোধীদের অভিযোগ, রাজনৈতিক কারণে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে বিচারপতি জোসেফের নিয়োগে। ২০১৬ সালে বিচারপতি জোসেফের নির্দেশেই রাষ্ট্রপতি শাসন উঠে যায় উত্তরাখণ্ডে। বিরোধীদের দাবি, রাষ্ট্রপতি শাসন উঠে যেতেই ফের ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস। তবে, বিরোধীদের রাজনৈতিক অভিযোগ খারিজ করে দেন আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ।