বলজিত্ সিংয়ের মৃত্যু মনে করালো তিন দশক আগে বাবার মৃত্যুর স্মৃতি
একদিকে জঙ্গিদের নিশানায় পুলিস অফিসার। অন্যদিকে জঙ্গিদেরই টার্গেট করলেন বাস ড্রাইভার। পঞ্জাবে জঙ্গি হামলার সময় এই দুই চিত্র উঠে এসেছে। ১৯৮৪ সাল। পঞ্জাবে খালিস্তানি জঙ্গিদের তত্পরতা তুঙ্গে। হঠাত্ই পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় পঞ্জাব পুলিসের ইন্সপেক্টর আচার সিংয়ের। পরে জানা যায়, পরিকল্পনামাফিক, দুর্ঘটনার ছক কষে আচার সিংকে সিংকে খুন করেছে খালিস্তানি জঙ্গিরা।
বাবার মৃত্যুর এক বছরের মধ্যেই, ১৯৮৫ সালে, পঞ্জাব পুলিসের ASI পদে যোগ দেন বলজিত্ সিং। এরপর থেকে নানা সময়ে দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। ASI থেকে একেবারে পৌছে গেছেন পুলিস সুপারের পদে। ধাপে ধাপে দক্ষতার স্বীকৃতি। ফাগওয়ারায় কাজ করেছেন SHO হিসেবে। মানসায় সেভেনথ IRB ব্যাটালিয়নের ডেপুটি কমান্ড্যান্টের দায়িত্ব সামলেছেন। পরে প্রোমোশন গুরদাসপুর জেলার গোয়েন্দা বিভাগের পুলিস সুপার পদে। সোমবার সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে গুলি কেড়ে নিয়েছে বলজিতের প্রাণ। বাবা ছিলেন জঙ্গি সন্ত্রাসের বলি। সেই একই সন্ত্রাসের বলি ছেলে বলজিত্। পর পর একই পরিবারের দুই প্রজন্ম অকুতোভয়ে মোকাবিলা করেছেন জঙ্গি সন্ত্রাসের। বলজিতের মৃত্যুর খবর পৌছনোর পর থমথমে তাঁর সন্তপুরার বাড়ি।
বলজিতের মতো ডাকসাইটে পুলিস সুপার নন। তবু নানক চাঁদ কম কিসে? পঞ্জাব রোডওয়েজের বাস চালক নানক চাঁদ সোমবার ভোরে যাচ্ছিলেন যাত্রীবোঝাই বাস নিয়ে । আচমকাই বাস লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে চার জঙ্গি। বাসে তখন পঁচাত্তরজন যাত্রী। মোটেই হতবুদ্ধি হয়ে যাননি নানক চাঁদ। উল্টে বাস নিয়েই সোজা ধেয়ে যান জঙ্গিদের দিকে। ভয়ে পিছু হঠে জঙ্গিরাই। এরপরই দুরন্ত দক্ষতায় বাসের মুখ ঘুরিয়ে সোজা হাজির হন হাসপাতালে। তখনও শেষ হয়নি তাঁর দায়িত্ব। এবার সোজা ফোন পঞ্জাব পুলিসের দফতরে । পৌছে দেন জঙ্গি হামলার খবর।
নানক চাঁদের সাহস ও উপস্থিত বুদ্ধিকে সেলাম জানিয়েছেন পঞ্জাবের মানুষ। উপমুখ্যমন্ত্রী সুখবির সিং বাদল জানিয়েছেন, এতগুলি বাস যাত্রীর জীবন বাঁচানোর জন্য নানক চাঁদকে সম্মানিত করবে রাজ্য সরকার।