না, আর ভয় নেই। বেঁচে গেল ছোট্ট ফলক। শনিবার জানিয়ে দিলেন এইমস ট্রমা সেন্টারের চিকিত্সকরা। পাশবিক অত্যাচারে ক্ষতবিক্ষত ২ বছরের শিশু ফলকের বাঁচানোর জন্য টানা ৪৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে চালিয়েছে ২ বছরের শিশুটি। তাকে বাঁচানোর জন্য লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন চিকিত্করা। প্রার্থনা করেছে আপামর দেশবাসী। অবশেষে সকলের মুখে হাসি ফুটিয়ে `পুণর্জন্ম` হল ফলকের। ৫ দিন আগে ফলককে ভেন্টিলেটর থেকে বের করা হয়।
ফলককে বাঁচিয়ে দৃশ্যতই উচ্ছ্বসিত এইমস ট্রমা সেন্টারের চিকিত্করা জানিয়েছেন, ফলককে আইসিইউ থেকে বের করে হাসপাতালের শিশু বিভাগে স্থানান্তর করা হয়েছে। তার হাতের প্লাস্টার খুলে দেওয়া হয়েছে। সে এখন হাত-পা নাড়াতে পারছে। তবে কেউ সামনে গেলে খুব কাঁদছে। আর কোনও সংক্রমণ ও শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হচ্ছে না ফলকের। তাকে খুব শীঘ্রই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলেও জানান চিকিত্সকরা।
ফলকের চিকিত্সার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান ড. দীপক আগরওয়াল বলেন, ``আগামী ২-৩ দিনের মধ্যেই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার মতো সুস্থ হয়ে যাবে ফলক।``
গত ১৮ জানুয়ারি মুখে ইস্ত্রির ছ্যাঁকা, হাত ভাঙা, মাথা থেঁতলানো অবস্থায় ২ বছরের শিশু ফলককে এইমস ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করা হয়। তার শরীরে মানুষের কামড়েরও ক্ষত পাওয়া যায়। ক্রমশ খারাপ হতে থাকে ফলকে শারীরিক অবস্থা। বুক ও মস্তিষ্ক থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে শরীরের অন্যান্য জায়গায়। ক্ষীণ হয়ে আসতে থাকে তার বাঁচার আশা। পরিস্থিতি ক্রমশ আয়ত্তের বাইরে চলে যেতে থাকে। তবে কোনও অবস্থাতেই হাল ছাড়েননি চিকিত্সকরা। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় একবার ভেন্টিলেটরের বাইরে আনা হলেও ফের অবস্থার অবনতি হওয়ায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই আবার ভেন্টিলেটরে রাখতে হয় ছোট্ট ফলককে। সেই থেকে টানা ২৪ দিন ভেন্টিলেটরে থেকেই মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যায় ফলক। খবর ছড়িয়ে পড়তেই অমানবিক শিশু নিগ্রহের শিকার ফলকের চিকিত্সার সাহায্যে এগিয়ে আসে বেশ কিছু সেচ্ছাসেবী সংস্থা ও এনজিও।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর কার কাছে থাকবে ছোট্ট ফলক। ফলকের মা গত ৪৪ দিনে একবারই দেখতে এসেছে তাকে। কিন্তু সন্তানকে পাশবিক অত্যাচারের অভিযোগে, সে এখন পুলিসি হেফাজতে।
বেঁচে গেল ফলক, জানালেন চিকিত্সকরা