নোয়াপাড়ায় লক্ষ্যভেদের পর অর্জুনের মাছের চোখ বিহার
দলের তরফে হিন্দিভাষী অর্জুনকে বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাবে সংগঠন গড়ে তোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর এই দায়িত্ব হাতে পেয়েই নিজেকে প্রমাণ করতে আদা জল খেয়ে নেমেছেন অর্জুন।
কমলিকা সেনগুপ্ত: মুকুল ঝরিয়ে নোয়াপাড়ায় তিনিই এখন সিং ইজ কিং। তবে, এই সাফল্যে ভেসে না গিয়ে এবার নতুন লক্ষ্য ঠিক করে নিলেন তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিং। বাংলার বাইরে বিহারে দলের জন্য দুটি আসন ছিনিয়ে আনতে ফেব্রুয়ারিতেই কোমড় বেঁধে নামছেন ভাটপাড়ার এই বিধায়ক।
মুকুল রায় তৃণমূলে থাকাকালীনই তাঁর সঙ্গে অহিনকুলে সম্পর্ক ছিল অর্জুনের। দলের পরিধি ছাপিয়ে সে কথা জানা ছিল রাজ্য রাজনীতির প্রায় সব কুশীলবেরই। দল থেকে মুকুল বেরিয়ে যাওয়ায় বর্তমানে সেই রেশারেশি প্রকাশ্য এসেছে। একদা তৃণমূলে মুকুল যে দায়িত্ব সামলাতেন, এবার সেই দায়িত্ব অর্থাত্ রাজ্যের বাইরে দলের সংগঠন গড়ে তোলার দায়িত্ব পেয়েছেন তৃণমূলের 'দাবাং নেতা' অর্জুন সিং। দলের তরফে হিন্দিভাষী অর্জুনকে বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাবে সংগঠন গড়ে তোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর এই দায়িত্ব হাতে পেয়েই নিজেকে প্রমাণ করতে আদা জল খেয়ে নেমেছেন অর্জুন।
চলতি মাসের ২৪ তারিখ সুব্রত বক্সি, জিতেন্দ্র তিওয়ারি এবং অর্জুন সিং সভা করবেন পাটনার কৃষ্ণা মেমোরিয়াল হলে। তৃণমূলের ঘনিষ্ঠমহলের সূত্রে খবর, অর্জুন মনে করছেন, সংগঠন চাঙ্গা করতে পারলে বিহারের পূর্ব চম্পারণ এবং মুজাফফরপুর লোকসভা আসন দু'টি আসতে পারে জোড়াফুলের ঝুলিতে। সেই লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ। বর্তমানে বিহারে তৃণমূলের একজন আহ্বায়ক ছাড়া, আর তেমন কোনও পদাধিকারী নেই। এ দিনের সভা থেকে বিহারের রাজ্য সভাপতি বেছে নেবে তৃণমূল। আর তারপরেই জোর কদমে শুরু হবে সংগঠন তৈরির কাজ।
কিন্তু হঠাত্ কেন বিহার?
তৃণমূল সূত্রে খবর, লালু ও তাঁর পরিবার একাধিক দুর্নীতির মামলায় ফেঁসে এখন ব্যাকফুটে। ফলে সে রাজ্যের বিরোধী রাজনীতির পরিসরে এই মুহূর্তে তৈরি হয়েছে এক শূন্যতা। সেই শূন্যস্থানই এবার ভরাট করতে চাইছে বিহারের লাগোয়া রাজ্যে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস। প্রত্যয়ী অর্জুন বলেন, "লোকসভা ভোটে আমরা বিহারে নজর রাখছি। ভাল সংগঠন তৈরি করে সিট নিয়ে আসব"।
তবে, অর্জুন যদি সত্যিই এই কাজে সফল হন, তাহলে দলে এবং জাতীয় রাজনীতিতে যে তিনি বেনজির গুরুত্ব পাবেন সে বিষয়ে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহলের একাংশ। পাশাপাশি, ভারতীয় রাজনীতিতে এই মুহূর্তে মমতার যে প্রত্যক্ষ মোদী বিরোধী অবস্থান, তাতে এমন দুটি আসন জিতলে নিঃসন্দেহে তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আরও বলিষ্ঠ করবে।