অমৃতসর ট্রেন দুর্ঘটনা: সেলফির নেশাতেই বেঘোরে এতগুলি মৃত্যু? দেখুন সেই ভিডিও
দুর্ঘটনার সময়ের প্রাপ্ত ভিডিও থেকে স্পষ্ট, রেল লাইনে দাঁড়িয়েই রাবণ দহনের ছবি তুলছিলেন মানুষ।
নিজস্ব প্রতিবেদন: অমৃতসরে চৌরাচৌরি বাজারের কাছে রেললাইনের ধারে ছোট মাঠে জ্বলছে রাবণের কুশপুতুল। আর তখন রেল লাইনের ট্রাকে দাঁড়িয়ে চলছে দেদার নিজস্বী। এমনকি রেল লাইনে দাঁড়িয়ে ফোন হাতে রাবণ দহনের সঙ্গে নিজের মুখের ছবি তুলতে ব্যস্ত মানুষ। দুর্ঘটনার সময়ের প্রাপ্ত ভিডিওগুলি থেকে উঠে আসছে এমনই সব ছবি।
শুক্রবার দশেরা উপলক্ষে রাবণ দহন দেখতে রেল লাইনের উপরে জড়ো হয়েছিলেন প্রচুর মানুষ। সমান তালে চলছিল সেলফি। রেললাইনে দাঁড়িয়েই সেলফি তুলছিলেন উত্সাহী জনতা। ঠিক সেই সময়ই চলে আসে পরপর দুটি ট্রেন। তীব্র গতির ট্রেন যে আসছে, তা কেউ বুঝতেই পারেননি। বেঘোরেই চলে গেল প্রাণ। ট্রেন যখন তীব্র গতিতে পাশ করছে, তখনও সেলফি তুলছেন অনেকে। চারদিকে আর্তনাদ, চারপাশে ছড়িয়ে রক্তাক্ত দেহ- জ্বলছে ক্যামেরার ফ্ল্যাশ।
Train Accident #Amritsar pic.twitter.com/THs3jfp0fZ
— Satinder pal singh (@SATINDER_13) October 19, 2018
জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা টুইটারে লিখেছেন,''কী ধরনের মানসিকতা! গোটা দুর্ঘটনাটি এড়ানো যেত। মানুষের উপর দিয়ে ট্রেন চলে যাওয়ার পরেও ভিডিও তোলা চলছে''।
What a mindless & entirely avoidable tragedy! Watching this video you’d be hard pressed to imagine the scale of the tragedy considering the way people are nonchalantly filming away on their phones even after the train has run over people! https://t.co/3sUr2KOA6O
— Omar Abdullah (@OmarAbdullah) October 19, 2018
এদিন সংবাদিক বৈঠকে অমরিন্দর আরও জানান, এই মুহূর্তে কোনও মন্তব্য করা ঠিক হবে না। ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে তদন্ত করা হবে। রিপোর্ট আসতে ৪ সপ্তাহ সময় লাগবে। এর পরই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে স্পষ্ট করেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী। অমরিন্দর জবাবে তখনও সন্তুষ্ট হননি সাংবাদিকরা। মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতি নিয়ে ফের প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, কী করে সম্ভব? আজই দিল্লি পৌঁছিয়েছি। আর দুর্ঘটনাস্থলে ভিআইপি সিকিয়োরিটি নিয়ে গেলে কী খুব একটা সুবিধা হতো? উল্টে উদ্ধারকাজে ব্যাহত হতে পারতো।
অমৃতসরের ধোবি ঘাট এলাকায় শুক্রবার রাবণ বধ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন কমপক্ষে ৭০০ জন মানুষ। শ’খানেক মানুষ রেল লাইনের উপর বসে দেখছিলেন রাবণ দহনের জমকালো অনুষ্ঠান। সে সময় ওই লাইন দিয়ে ছুটে আসচ্ছিল ডিএমইউ জলান্ধর- অমৃতসর এক্সপ্রেস। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বহু মানুষকে পিষে দিয়ে চলে যায় ট্রেনটি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬০। চালক জানিয়েছে, গ্রিন সিগন্যাল ছিল। লাইনে এত মানুষের বসে থাকা দূর থেকে দেখা যায়নি। রেলের সাফাই, লাইনে বসে থাকা উচিত হয়নি তাঁদের। তবে ১৬ ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরও স্বজনহারারা এখনও ভাবতে পারছেন না, রাবণ পুড়িয়ে কেন ঘরে ফিরলেন না তাঁদের প্রিয়জন?
আরও পড়ুন- রাবণ দহনের ভিড়ে আচমকা তীব্র গতিতে ছুটে এল ট্রেন, দেখুন মর্মান্তিক ভিডিও