বিরোধী হাওয়ায় বেগতিক দেখে আপোস করেই নীতীশের সঙ্গে সমঝোতা অমিতের
বৃহস্পতিবার বিহারে লোকসভা নির্বাচনে নীতীশ কুমারের সঙ্গে আসনরফা চূড়ান্ত করলেন অমিত শাহ।
নিজস্ব প্রতিবেদন: বিহারে লোকসভা নির্বাচনে নীতীশ কুমারের সঙ্গে জোটের কথা পাকা করে ফেললেন অমিত শাহ। বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জানিয়ে দিলেন, বিহারে সমান সমান আসনে লড়াই করবে বিজেপি ও জেডিইউ। এই জোটে রামবিলাস পাসোয়ান ও উপেন্দ্র কুশওয়ার দলও রয়েছে বলে স্পষ্ট করেছেন মোদীর সেনাপতি।
বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এদিন বৈঠকে বসেন অমিত শাহ। সম্মানজনক আসনের দাবিতে গোঁ ধরেছিলেন নীতীশ কুমার। এর আগেও পটনায় গিয়ে নীতীশের সঙ্গে আসন রফা চূড়ান্ত করতে পারেননি অমিত শাহ। প্রথম থেকেই বড় শরিক হিসেবে ২২টি আসন দাবি করে আসছিল বিজেপি। কিন্তু বিজেপির চেয়ে কম আসনে লড়াই করতে চাননি নীতীশ কুমার। অবশেষে বৃহস্পতিবার মিলল রফাসূত্র। বিরোধীরা যখন বিজেপির বিরুদ্ধে জোট করছে, তখন আর ঝুঁকি নিতে চাননি অমিত শাহ। সমঝোতার পথেই হাঁটলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। নীতীশকে পাশে নিয়ে অমিত শাহ বলেন, ২০১৯ সালে বিহারে লোকসভা নির্বাচনে সমান সমান আসনে লড়াই করবে বিজেপি-জেডিইউ। অন্য শরিকরাও সম্মানজনক আসন পাবেন। আসনবণ্টন সংখ্যা পরে জানানো হবে''। ফলে বিষয়টি সেই ঝুলেই থাকল। অমিতের কথায় ইঙ্গিত মিলেছে, বাকি দুই শরিকের সঙ্গে এখনও কথা বাকি। খানিকক্ষণ পরেই তা নিজেরই বলে ফেলেছেন অমিত শাহ।
It has been decided that BJP & JDU will fight on equal number of seats for Lok Sabha Elections 2019 in Bihar. Other allies will also get a respectable seat share. Numbers will be announced in a few days: BJP President Amit Shah after meeting Nitish Kumar pic.twitter.com/BhzM7pmZON
— ANI (@ANI) October 26, 2018
তবে শুধু জেডিইউ-ই নয়, উপেন্দ্র কুশওয়া ও রামবিলাস পাসোয়ানকেও যে বঞ্চিত করা হবে না, তাও জানিয়ে রেখেছেন অমিত শাহ। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি বলেন,''উপেন্দ্র কুশওয়া ও রামবিলাস পাসোয়ান আমাদের সঙ্গে আছেন। নতুন শরিক যোগ দিলে সকলেরই আসন কমে''।
Upendra Kushwaha and Ram Vilas Paswan will remain with us. When a new ally has joined us, there will be a reduction in seat share for everyone: BJP President Amit Shah pic.twitter.com/lOIfSF1VyL
— ANI (@ANI) October 26, 2018
বিহারে ৪০টি লোকসভা আসন। ২০১৪-র লোকসভা ভোটে বিজেপি ২২টি আসন দখল করে। সেই সাফল্যের রেশ ধরে ২০১৮-র লোকসভা ভোটে বিজেপি ২০টি আসন দাবি করছিল। নীতীশের দলকে বিজেপির ১২টি, রামবিলাসের এলজেপি-কে ৬টি ও উপেন্দ্র কুশওয়াহার আরএলএসপি-কে ২টি আসন ছাড়তে চাইছিল বিজেপি। জেডিইউ দাবি করেছিল, তারা যেহেতু বিহারে সরকারে আছে, তাই বৃহত্ দল হিসেবে বেশি আসন তাদের প্রাপ্য। তাদের প্রস্তাব ছিল, ১৬টি করে আসনে লড়াই করুক বিজেপি ও জেডিইউ। ৬টি আসনে লড়ুক এলজেপি ও ১টি করে আসন ছাড়া হোক আরজেডির পাপ্পু যাদব ও আরএলএসপি-কে।.
২০১৪-র মতো বিপুল মোদী হাওয়া এখন নেই বিহার, উত্তরপ্রদেশে উপনির্বাচনে গোঁত্তা খেয়েছে বিজেপি।সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়েও কর্নাটকে সরকার গঠন করতে পারেনি গেরুয়া শিবির। এই সুযোগে 'চাপের রাজনীতি'র কামড় দিয়েছিল উজ্জীবিত জেডিইউ।
২০১৪-র নির্বাচনে বিহারে ৩টি আসন জিতেছিল উপেন্দ্র কুশওয়াহার আরএলএসপি। কিন্তু আসছে বছরের ভোটে কলকে পাচ্ছে না তারা। বিরোধী শিবিরে ভিড়ে যাওয়ার ইঙ্গিত আগেই দিয়ে রেখেছেন ক্ষুব্ধ কুশওয়াহা। বলে রাখি, বিহারে ১১ শতাংশ ভোটের উপরে নিয়ন্ত্রণ উপেন্দ্র কুশওয়ার।
প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, জেডিইউ-কে খুশি করতে গিয়ে বাকি দুই শরিককে গোঁসাঘরে পাঠালেন না তো অমিত শাহ? ফলে বিহারের আসন সমঝোতা নাটকের এখনও কয়েকটি অঙ্ক বাকি থেকে যাচ্ছে, তা বলাইবাহুল্য।
আরও পড়ুন- ৫৬ বছর পর মোদীর জমানায় ক্ষতিপূরণ পেলেন অরুণাচলের জমিদাতারা