আর্থিক দাবিতে চলবে আলোচনা, বৈঠকের পর ঘোষণা অমিতের

রাজ্যের আর্থিক দাবিদাওয়া নিয়ে আগামিদিনে আরও আলোচনা হবে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে এমনটাই জানালেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

Updated By: Jun 11, 2012, 04:52 PM IST

রাজ্যের আর্থিক দাবিদাওয়া নিয়ে আগামিদিনে আরও আলোচনা হবে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে এমনটাই জানালেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রাজ্যের আর্থিক দাবিদাওয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে আজ বৈঠক করেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। পরে কেন্দ্রীয় অর্থসচিবের সঙ্গেও বৈঠক করেন তাঁরা। বৈঠকের আগে অমিত মিত্র জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রের থেকে আর্থিক সাহায্য পাওয়ার ব্যাপারে তাঁরা আশাবাদী। কিন্তু এদিন প্রণববাবুর সঙ্গে বৈঠকের পর অমিত মিত্রর বক্তব্যে পরিষ্কার, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কাছ থেকে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনও প্রতিশ্রুতি আদায় করতে পারেননি তিনি।
কেন্দ্রের আর্থিক সঙ্কটের প্রসঙ্গ টেনে রবিবারই প্রণববাবু কার্যত পরিষ্কার করে দিয়েছিলেন যে এই মুহুর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি মেনে রাজ্যকে আর্থিক প্যাকেজ দেওয়া কার্যত অসম্ভব। তবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের কথা ভেবে তৃণমূল নেত্রীর দাবি সরাসরি নাকচ করতে পারেননি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। বরং যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় কীভাবে রাজ্যকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া যায় তাই এখন প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।
প্রথমত, ২০০৯-১০ আর্থিক বছরের শেষে রাজ্যের মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লক্ষ ৯৮ হাজার কোটি টাকা। যা ২০১১-১২ আর্থিক বছরের শেষে এসে দাঁড়িয়েছে ২ লক্ষ ২২ হাজার কোটি টাকায়। এর এক দশমাংশ কেন্দ্রের কাছ থেকে নেওয়া ঋণ। যার পরিমাণ ২০ থেকে ২২ হাজার কোটি টাকা। অর্থাত্‍, কেন্দ্র যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি মেনে তিন বছরের জন্য সুদ মকুব করেও তাহলেও মাত্র দুই থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা সুদ মকুবের ক্ষমতা রাখে কেন্দ্র। যা সুদের মোট পরিমাণের কাছে নগণ্য।

কেন্দ্রের কাছ থেকে নেওয়া ঋণ ছাড়াও এফআইআইএস ও বিভিন্ন আর্থিক সংস্থা থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ এক তৃতীয়াংশ। যা প্রায় ৬৫ থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। এর ওপর সুদ মকুব কেন্দ্রের আওতার বাইরে। এছাড়াও রয়েছে ন্যাশানাল স্মল সেভিংস ও স্টেট প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে নেওয়া ঋণ। ত্রয়োদশ যোজনা কমিশনের সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যেই এই দুটি ক্ষেত্রেই সুদে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে। যার ফলে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা সুদ ছাড় ইতিমধ্যেই পেয়েছে রাজ্য। ২০১৫-র আগে এই বিষয়ে আর কোনও নতুন সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না যোজনা কমিশন।
দ্বিতীয়ত, পশ্চিমবঙ্গের মতোই ঋণগ্রস্ত রাজ্য পঞ্জাব ও কেরল। ফলে, পশ্চিমবঙ্গকে সুদ মকুব করা হলে বাকি দুই রাজ্যও তা দাবি করে। আর তৃতীয়ত, কেন্দ্র যদি সুদ মকুব করে তাহলে পশ্চিমবঙ্গের ব্যর্থতাকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে বলেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে কেন্দ্রকে। রবিবার নির্দিষ্ট সময়ের আগেই দিল্লি ফিরে অর্থমন্ত্রকের আধিকারিকদের সঙ্গে এবিষয়ে বিস্তারিত আলোচনাও করেন প্রণববাবু। যদিও আজ অমিত মিত্রর সঙ্গে তাঁর বৈঠকের পর পরিষ্কার, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সংখ্যাগত বাধ্যবাধকতা থাকলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাপের রাজনীতির কাছে সহজে আত্মসমর্পণ করবে না কংগ্রেস।

.